সফল: ১৭ বলে ৩৯ অপরাজিত হার্দিক। শনিবার। রয়টার্স
সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে ৩৬ রানে হেরে ইংল্যান্ড অধিনায়ক অইন মর্গ্যান জানিয়ে দিলেন, ভারত তাঁদের দাঁড়াতে দেয়নি। যোগ্য দল হিসেবেই সিরিজ জিতেছেন বিরাট কোহালিরা।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে মর্গ্যান বলেন, “ভারতের পরিবেশে তাদের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে সিরিজ হারলেও প্রচুর ইতিবাচক দিক রয়েছে। আমরা সিরিজ জুড়ে খারাপ ক্রিকেট খেলিনি। আজ যদিও আমরা ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারিনি। যোগ্য দল হিসেবেই সিরিজ জিতেছে ভারত।”
মর্গ্যান যদিও খুশি দলের লড়াইয়ে। বলেন, “ব্যাট হাতে আমরাও জবাব দিতে শুরু করি। তবে মাঝের ওভারগুলোর সুবিধা তুলতে ব্যর্থ হয়েছি।” আদিল রশিদের নতুন ভূমিকায় যদিও খুশি অধিনায়ক। মর্গ্যান বলেছেন, “রশিদকে নতুন বল দেওয়া হত না। তবে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ছয় ওভারে কার্যকরী ভূমিকা পালন করল রশিদ। কুড়ির বিশ্বকাপের আগে নতুন অস্ত্র যোগ হল আমাদের হাতে।”
এ দিকে, ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ পল কলিংউডের অভিমত, এই বিশ্বকাপে অনেক দলই তাদেরকে ভয় পাবে। ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে কলিংউড বলেছেন, ‘‘গত চার বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা যে ভাবে খেলেছি, তাতে বিশ্বকাপে অনেক দলই আমাদের ভয় পাবে।’’ ভারতের মাটিতে অক্টোবর-নভেম্বরে বিশ্বকাপের জন্য তাঁদের প্রস্তুতি যে ভালই হয়েছে, তা বলছিলেন কলিংউড। ইংল্যান্ডের এই প্রাক্তন অলরাউন্ডারের কথায়, ‘‘আমাদের দলে এক থেকে এগারো নম্বর পর্যন্ত ম্যাচ উইনার আছে। যারা একার দক্ষতায় ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে।’’ ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন দল আর অইন মর্গ্যানের এই দলটার মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে কলিংউড বলেছেন, ‘‘দুটো দল সম্পূর্ণ দু’রকমের। ২০১০ সালের দলটা শেষ মুহূর্তে গড়া হয়েছিল। দল নির্বাচন নিয়ে আমরা বেশ ঝুঁকি নিয়েছিলাম, ফাটকা খেলেছিলাম।’’ যোগ করেন, ‘‘আমরা জানতাম, বিশ্বকাপে কী ধরনের ক্রিকেট আমাদের খেলতে হবে। কিন্তু সেটা আমাদের মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে যায়নি। এই দলটার ক্ষেত্রে যেমন হয়েছে। এই দলটার প্রস্তুতি অনেক ভাল হয়েছে। এর চেয়ে ভাল জায়গায় থাকা আর সম্ভব ছিল না।’’নিজের আমলে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন কলিংউড। কোচ হওয়ার পরেও সেই চিন্তাধারা থেকে সরে আসছেন না তিনি। কলিংউড মনে করেন, সাদা বলের ক্রিকেটে সাফল্য পেতে গেলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতেই হবে। ইংল্যান্ডের সহকারী কোচের কথায়, ‘‘আমার মনে হয় না, বিশ্বকাপ বা অন্য কোনও বড় প্রতিযোগিতা সাবধানি ক্রিকেট খেলে জেতা সম্ভব। সব সময় প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এক পা এগিয়ে থাকতে হবে। এই দলটা গত চার বছর ধরে সেই কাজটাই করছে। যেটা এখন আগ্রাসনে বদলে গিয়েছে।’’ তাঁর দলের মন্ত্র কী, সেটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন কলিংউড— ‘‘বিপক্ষকে শুরু থেকেই চাপে ফেলতে হবে। সাহসের সঙ্গে খেলতে হবে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আগ্রাসী ক্রিকেট চাই। সেটা প্রথম ম্যাচেই হোক কী ফাইনালে।’’
সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে সূর্যকুমার যাদব এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের ক্যাচের ক্ষেত্রে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। মাঠের আম্পায়ার ‘সফ্ট সিগনাল’ আউট দেওয়ার পরে সন্দেহের অবকাশ থাকলেও টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখে সেই সিদ্ধান্ত বদলাননি। যদিও রিপ্লেতে বোঝা যাচ্ছিল, দাভিদ মালানের ক্ষেত্রে বল মাটি ছুঁয়েছিল এবং সুন্দরের ক্যাচ নেওয়ার সময় আদিল রশিদের পা বাউন্ডারি লাইন ছুঁয়ে যায়। যার পরে মাঠের আম্পায়ারদের ‘সফ্ট সিগনাল’ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। বলেছিলেন, ‘‘কেন ‘আমি বুঝতে পারছি না’ জাতীয় সিগনাল দেওয়া যাবে না।’’
কলিংউডও এই ব্যাপারে ভারত অধিনায়কের সঙ্গে একমত। তিনি বলেছেন, ‘‘বাউন্ডারি ক্যাচের ক্ষেত্রে বিরাটের বক্তব্যের যুক্তি আছে। এমনিতেই পিচের উল্টো দিকে ২০ গজ দূরে কী হচ্ছে, তা বুঝতে সমস্যা হয়ে যায় আম্পায়ারদের। তার উপরে আরও ৫০-৬০ গজ দূরে ফিল্ডার কী ভাবে ক্যাচ নিল, তা বোঝা বেশ কঠিন।’’ কলিংউড অবশ্য এর পরে মালানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘‘মাঝে মাঝে বলের নীচে আঙুল থাকলেও রিপ্লেতে বোঝা যায় না। কারণ, মাঠের ঘাস দু’-তিন ইঞ্চি লম্বা হয়। তখন দেখে মনে হয়, বল মাটি ছুঁয়ে গিয়েছে।’’
বছরের শেষ দিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কি নতুন ওপেনিং জুটি দেখতে পাবে ভারত? যার ইঙ্গিত পাওয়া গেল ভারত বনাম ইংল্যান্ডের পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে? যে ম্যাচে ওপেন করে ঝড় তুললেন বিরাট কোহালি এবং রোহিত শর্মা।
ভিভিএস লক্ষ্মণ অন্তত সে রকমই চান। ভারতের দুরন্ত ব্যাটিং দেখার পরে লক্ষ্মণ টুইট করেন, ‘‘এই পারফরম্যান্সটাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিং লাইনের চেহারা হোক।’’ বিরাট-রোহিতের ওপেনিং জুটি দেখে মুগ্ধ মাইকেল ভনও। কোহালির সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এর চেয়ে ভাল ওপেনিং জুটি আর কী হতে পারে! বিরাট কোহালি আর রোহিত শর্মা। এই জুটিটা যদি ভারত ধরে রাখতে পারে তা হলে সহজেই বীরেন্দ্র সহবাগ-সচিন তেন্ডুলকর জুটির উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে।’’
এ দিন দলে একটা পরিবর্তন করে নেমেছিল ভারত। কে এল রাহুল বাদ পড়েন, দলে আসেন বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন। সূর্যকুমার যাদবকে তিন নম্বরে জায়গা দিতে কোহালি চলে আসেন ওপেনে। এবং ভারতের অধিনায়ক-সহ অধিনায়কের জুটিতে ওঠে নয় ওভারে ৯৪। রোহিত শুরু থেকে ঝড় তুলে করেন ৩৪ বলে ৬৪।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy