Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

সমীহ দেখিয়েও সুনীল-মন্ত্রে ইতিহাস চায় ভারত

স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের চাকরি বাঁচানোর ম্যাচ। নেপালে দু’বছর আগে ফাইনালের হারের মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। তাও আবার নিজের মাঠে। জার্মানি, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্রে খেলা আফগান ফুটবলারদের হারিয়ে প্রাক-বিশ্বকাপের ব্যর্থতায় প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ। গোল করতে পারলে ভাইচুংকে টপকে সাফের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার সুযোগ সুনীল ছেত্রীর সামনে।

কোচের ক্লাসে সুনীলরা। শনিবার। ছবি: পিটিআই

কোচের ক্লাসে সুনীলরা। শনিবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৯
Share: Save:

স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের চাকরি বাঁচানোর ম্যাচ।

নেপালে দু’বছর আগে ফাইনালের হারের মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। তাও আবার নিজের মাঠে।

জার্মানি, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্রে খেলা আফগান ফুটবলারদের হারিয়ে প্রাক-বিশ্বকাপের ব্যর্থতায় প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ।

গোল করতে পারলে ভাইচুংকে টপকে সাফের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার সুযোগ সুনীল ছেত্রীর সামনে।

তিরুঅনন্তপুরমে আজ রবিবার সাফ কাপের ফাইনালে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অসংখ্য লড়াই করার লক্ষ্য হাজির ভারতের সামনে। দলীয় এবং ব্যক্তিগত।

কিন্তু লড়াইয়ের চব্বিশ ঘণ্টা আগেই যে সাদা-পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের ব্রিটিশ কোচ। শনিবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে স্টিভন বলে দিয়েছেন, ‘‘ফাইনালে আফগানরাই ফেভারিট। ওদের কুড়িজন ফুটবলারের মধ্যে ১৫জনই তো ইউরোপে খেলে। এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক।’’ হতে পারে এটা বলে বিপক্ষকে আত্মতুষ্ট করার চেষ্টা করেছেন সুনীল-অর্ণবদের কোচ। সেটা যে আফগানদের জার্মান কোচ বুঝতে পারেননি তা নয়। পিটার সেগ্রেট আবার সুযোগ পেয়ে পাল্টা পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। ‘‘ভারতীয় দল যথেষ্ট শক্তিশালী। ওদের কোচও খুব ভাল। ওরা কিন্তু আমাদের বিপদে ফেলবে। তা ছাড়া দর্শকরা ওদের হয়ে গলা ফাটাবেন, উৎসাহ দেবেন। তাই আমরা ওদের হালকা ভাবে নিচ্ছি না।’’

ব্রিটিশ আর জার্মান দুই কোচের পেশাদারি চতুরতার কথা বাদ দিলে চৌম্বকে কিন্তু এই ম্যাচে আফগানিস্তানই ফেভারিট। তাদের বেশির ভাগ ফুটবলার শুধু ইউরোপে খেলেন তাই নয়, ফিটনেসের দিক দিয়েও তাঁরা অনেক শক্তিশালী। লিগ এবং সেমিফাইনাল মিলিয়ে চার ম্যাচে ১৬ গোল করে ফেলেছে আফগানিস্তান। ফাইনালে উঠেছে শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ গোল দিয়ে। যা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন জেজে-হোলিচরণদের কোচ। ‘‘নব্বই হাজার লোকের দেশ গুয়ামের কাছে হারের পর অনেকেই আমাদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। কিন্তু ওদের বেশির ভাগ ফুটবলার যে যুক্তরাষ্ট্রে খেলে সেটা কেউ মনে রাখেনি। আফগানরা সে রকমই টিম। খুব শক্তিশালী।’’ পাশাপাশি অবশ্য তাঁর মন্তব্য, ‘‘ফাইনালে জিততে হলে প্রথম মিনিট থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়তে হবে।’’

তিরুঅনন্তপুরমে শনিবার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সারলেন সুনীল-জেজে-প্রীতমরা। অনুশীলন দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে সেমিফাইনালের টিমই রাখতে চাইছেন ভারতীয় দলের কোচ।

স্টিভনকে যদি সাহস জোগায় তাঁর দলের আক্রমণ, তা হলে চিন্তা অবশ্যই রক্ষণ। সুনীল-জেজেরা গোলের মধ্যে রয়েছেন। এমন কী সেমিফাইনালে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা লালিয়ানজুয়ালাও জোড়া গোল করেছেন। কিন্তু অস্বস্তিও আছে। শেষ ম্যাচে যে ভাবে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে তিন গোল দিয়ে দু’গোল হজম করেছে ভারত তা যথেষ্ট আশঙ্কার। কারণ আফগানদের এক নম্বর স্ট্রাইকার খাইবার আমানি ইতিমধ্যেই চার ম্যাচে চার গোল করে ফেলেছেন। স্ট্রাইক রেট একশো শতাংশ। স্টিভনের রক্ষণ প্রধানত বঙ্গ ব্রিগেডের উপর দাঁড়িয়ে। আফগানদের ঝোড়ো আক্রমণ রোখার জন্য তাদের সামনে যে চার ডিফেন্ডার দাঁড়াবেন তাদের তিনজনই বঙ্গসন্তান। প্রীতম কোটাল, অর্ণব মণ্ডল এবং নারায়ণ দাস। গোলে অভিজ্ঞ সুব্রত পাল নামলে সেটা চার হয়ে যাবে। ভারতীয় কোচকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সুনীলই তো আপনার দলের সেরা অস্ত্র? স্টিভন বলে দিয়েছেন, ‘‘সুনীল তো গুরুত্বপূর্ণই, আমার কাছে প্রীতম-অর্ণবরাও গুরুত্বপূর্ণ। জিততে হলে সবাইকে দরকার। এক মুহূর্তের জন্যও লড়াই ছাড়া চলবে না। মলদ্বীপের সঙ্গে যা হয়েছে সেটা যেন না হয়।’’

আফগানদের উইং প্লে সম্পর্কে সচেতন ভারতীয় কোচ। জুবেইর আমিরি এবং ওমিড পোপালেজেকে আটকানোর জন্য প্রীতম এবং নারায়ণকে বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন স্টিভন। দলকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্রিটিশ কোচের মন্তব্য, ‘‘এত কম সময় অনুশীলন করে ফাইনালে উঠেছি। এবং আমরা একটা টিম হিসাবে খেলছি। শেষ লড়াইটা জেতার জন্য ঝাঁপাতেও আমরা তৈরি। আমাদের সঙ্গে থাকবে ঘরের মাঠের সমর্থনও।’’

গতবার কাঠমান্ডুতে আফগানদের কাছে ফাইনালে যে ভারত হেরেছিল সেই দলের মাত্র চার জন ফুটবলার রয়েছেন এই টিমে। সুনীল ছেত্রী, জেজে, অর্ণব মণ্ডল, রবিন সিংহ এবং সুব্রত পাল। তার মধ্যে রবিন আবার চোটের জন্য বাইরে চলে গিয়েছেন। সুব্রতর খেলা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে ভারতের প্রায় পুরো টিমই নতুন। আফগান কোচ সে জন্যই বলেছেন, ‘‘এ বারের ভারতীয় দল যথেষ্ট চনমনে। দৌড়োয়।’’

চার বছর আগে ঘরের মাঠে আফগানদের হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল ভারত। কাঠমান্ডুতে সেটি উইম কোভারম্যান্সের টিমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল যারা, তাদের সামনেই এ বার আবার ভারত। দেখার, স্টিভন ব্রিগেড সেটা ফিরিয়ে আনতে পারে কি না!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy