স্মৃতি: ২০১০ বিশ্বকাপ। স্পেন অধিনায়ক ক্যাসিয়াসের হাতে ট্রফি। ফাইল চিত্র
পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলেন স্পেনের বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ইকের ক্যাসিয়াস।
৩৯ বছর বয়সি এই গোলকিপার টানা ১৬ বছর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৭২৫ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করে নজির গড়েছিলেন। যে দীর্ঘ সময়ে তিনি রিয়ালের জার্সি গায়ে তিন বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও পাঁচ বার লা লিগা জয়ের শরিকও। এ ছাড়াও, স্পেনের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ সালে ইউরো কাপ জয়েও স্পেনের গোলপোস্টের নীচে ছিল ক্যাসিয়াসের বিশ্বস্ত হাত।
২০১৫ সালে ক্যাসিয়াস পর্তুগালের ক্লাব পোর্তো এফসি-তে সই করেছিলেন। কিন্তু এর পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত কোনও ম্যাচ খেলতে পারেননি। গত বছরের জুলাই মাসে তাঁকে কোচিং দলের সঙ্গে যুক্ত করেছিল পোর্তো।
২০০০-২০১৬ সালের মধ্যে স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে ১৬৭টি ম্যাচে খেলেছেন তিনি। এক সময়ে তিনিই ছিলেন স্পেনের জার্সি গায়ে সব চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলার। পরবর্তীকালে যে রেকর্ড ভাঙেন রিয়াল মাদ্রিদে তাঁর সতীর্থ সের্খিয়ো র্যামোস।
এ দিন ক্যাসিয়াসের অবসরের কথা জানতে পেরেই কিংবদন্তি এই গোলকিপারকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের দু’জনের ছবি টুইট করেন র্যামোস। যে ছবিতে তাঁকে আলিঙ্গন করে চুম্বন করছেন ক্যাসিয়াস। রিয়াল ও স্পেনের ফুটবলে তাঁদের সম্পর্ক ছিল দুই ভাইয়ের মতো।
তার আগে টুইটারে পেশাদার ফুটবল থেকে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা জানিয়ে ক্যাসিয়াস লেখেন, ‘‘সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল যে দীর্ঘ পথে এত দিন যাদের সঙ্গে হেঁটে এলাম। গন্তব্যস্থল সেখানে গুরুত্বহীন। নিঃসন্দেহে এই পথ ধরে হেঁটে প্রত্যাশিত গন্তব্যস্থানে পৌঁছানো ছিল স্বপ্নের মতো ব্যাপার।’’
যে ক্লাবের হয়ে ক্যাসিয়াস তাঁর পেশাদার ফুটবলার জীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছেন, সেই রিয়াল মাদ্রিদের তরফেও প্রশংসা করা হয়েছে, ক্যাসিয়াসের শৃঙ্খলায় মোড়া খেলোয়াড় জীবনকে। তাদের মতে, ক্লাবের ১১৮ বছরের ইতিহাসে ক্যাসিয়াসই রিয়ালের শ্রেষ্ঠ গোলকিপার। মাত্র ন’বছর বয়েস একজন শিক্ষার্থী ফুটবলার হিসেবে রিয়ালে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
রিয়ালের ওয়েবসাইটে ক্যাসিয়াসের বর্ণময় ফুটবল জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে লেখা হয়েছে, ‘‘বিশ্ব ও ক্লাব ফুটবলে আমাদের কিংবদন্তি গোলকিপারের দুরন্ত অবদানের প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। ও ছিল রিয়ালের একজন বিশ্বস্ত সৈনিক। দলের হৃদপিন্ড বলা যায় ক্যাসিয়াসকে। সারা জীবন রিয়াল সমর্থকদের হৃদয়েই থাকবে ওর অবদান।’’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়েছিলেন ক্যাসিয়াস। কিন্তু পরে সরে আসেন। যুক্তি ছিল, করোনা সংক্রমণে স্পেনের সামাজিক, আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। স্বাস্থ্য-সঙ্কটে গোটা বিশ্বের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ফুটবল প্রশাসনে আসার ইচ্ছা ত্যাগ করে দেশের মানুষের সেবা করাই শ্রেয় বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বিশ্বজয়ী এই গোলকিপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy