স্মৃতিমেদুর: ভারতীয় ক্রিকেটের জয়যাত্রার কথা শাস্ত্রীর মুখে। ফাইল চিত্র
দেখতে দেখতে ৩৬ বসন্ত পেরিয়ে এল ভারতের প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়। মঙ্গলবার সেই উপলক্ষ্যেই স্মৃতিচারণে মাতল গোটা ভারত। সকাল থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে শুরু হয় ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতি রোমন্থন। যা থেকে বাদ যাননি প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রীও। যিনি তিরাশির বিশ্বকাপে কপিল দেবের ওই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।
বর্তমানে ভারতীয় দলের হেড কোচ শাস্ত্রী মঙ্গলবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বিশেষ দিনটি সম্পর্কে বলেই দিলেন, ‘‘এই দিনটা হল সেই দিন যে দিন ক্রিকেট মাঠে ভারতীয়রা প্রমাণ করতে পেরেছিল আমরাও পারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ফাইনালে ওই জয় গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দেয়, ক্রিকেট মাঠে ভারতীয়রা এখন যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারাতে পারে। তিরাশির ২৫ জুন, ভারতীয় ক্রিকেটের গতিমুখ পরিবর্তন করে দিয়েছিল।’’
তিরাশি সালের ২৫ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেই ঐতিহাসিক ফাইনাল ম্যাচে শাস্ত্রী প্রথম একাদশে ছিলেন না। কিন্তু লর্ডসের প্যাভিলিয়নে বসে ভারতীয় দলের সঙ্গেই দেখেছিলেন পুরো ম্যাচ। এ দিন ভারতীয় দলের সঙ্গে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অনুশীলনে হাজির ছিলেন কোচ শাস্ত্রী।
কিংবদন্তি: লর্ডসে গাওস্করের সঙ্গে ছবি টুইট করলেন সচিন। মঙ্গলবার।
বিশ্বকাপে এই মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার খেলবে ভারত। ছত্রিশ বছর আগে লন্ডনের সেই বিকেলের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘সে দিন থেকেই এগিয়ে যাওয়ার বিশ্বাসটা চলে এসেছিল ভারতীয় ক্রিকেটে।’’ তার পরেই পুরনো দিনের কথা সামনে এনে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘সে বার ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মে বিশ্বজয়ের সলতে পাকানোর কাজটা প্রথম শুরু হয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টারের এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ক্রিকেট মাঠ থেকেই। প্রথম ম্যাচেই এই মাঠে আমরা হারিয়েছিলাম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তার আগে বিশ্বকাপে কেউ ভাবতে পারত না লয়েডের ওই বিশ্বত্রাস দলকে হারানোর কথা।’’ সঙ্গে বলে দেন, ‘‘সেই মাঠের সঙ্গে এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ক্রিকেট মাঠের ফারাক অনেক। চারপাশটা গত ছত্রিশ বছরে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। মাঠের পিছন দিয়ে ছিল রেললাইন। মনে আছে, যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারের মুখে, তখন জোয়েল গার্নার একটা ছক্কা মেরেছিল। বল গিয়ে পড়ে ওই রেল লাইনে। ম্যাচটা মনে থাকবে এই কারণেই যে, শেষ উইকেটটা আমি নিয়েছিলাম।’’
ঐতিহাসিক: কপিলদের প্রুডেনসিয়াল কাপ জয়ের সুবাদে ভারতীয় ক্রিকেট দর্শন রাতারাতি পাল্টে যায়। ফাইল চিত্র
ফাইনালের আগে ৯ জুন, ১৯৮৩ সালের সেই ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ গ্রুপের ম্যাচে ৬০ ওভারে ভারত তুলেছিল ২৬২-৮। ম্যাচে যশপাল শর্মা ১২০ বলে করেছিলেন ৮৯ রান। জবাবে ভারতীয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করে দেয় ২২৮ রানে। রজার বিনি ও রবি শাস্ত্রী সে দিন তিন উইকেট করে নিয়ে চূর্ণ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই ম্যাচের দু’সপ্তাহ পরেই ২৫ জুন, ফাইনালে ফের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফাইনালে হারায় ভারত।
১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দল। ফাইল চিত্র
শাস্ত্রীর মতোই সেই ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে ইংল্যান্ডে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকরও। ধারাভাষ্য দিতে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডেই রয়েছেন মাস্টার ব্লাস্টার। এ দিন লর্ডসে ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের বিরতিতে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘বান্দ্রার বাড়িতে বসে সে দিন খেলা দেখছিলাম। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পরে লর্ডসেই এই বিখ্যাত বারান্দায় সানি ভাই (সুনীল গাওস্কর), কপিল পাজি (কপিল দেব) ও মহিন্দর ভাই (মহিন্দর অমরনাথ)-রা উৎসব করছিলেন বিশ্বকাপ হাতে। যা দেখে আমারও মনে হয়েছিল, আমাকেও ক্রিকেট খেলতে হবে। দেশের হয়ে একদিন বিশ্বকাপ আমিও জিতব।’’ বিশ্বকাপ হাতে কপিল ও মহিন্দরের ছবি টুইট করে বীরেন্দ্র সহবাগ লেখেন, ‘‘ভারতীয় ক্রীড়া জগতের অন্যতম স্মরণীয় দিন।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy