নায়ক: সেঞ্চুরিতে যাত্রা শুরু রোহিতের। রয়টার্স
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অসাধারণ জয় ছাড়াও বড় একটা প্রাপ্তি হল ভারতের। রোহিত শর্মার ফর্মে ফেরা।
আইপিএল, এমনকি বিশ্বকাপের আগে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচেও রোহিত সে রকম ছন্দে ছিল না। যার ফলে ওকে নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার পেস ব্যাটারিকে সামলে দুরন্ত সেঞ্চুরি করে গেল রোহিত। শুরুতেই এ রকম একটা সেঞ্চুরি কিন্তু রোহিতের আত্মবিশ্বাসকে আকাশ ছোঁয়া করে দেবে। আর বাকি দলগুলোকে আতঙ্কিত করে তুলবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৭ রান করার পরে অনেকেই হয়তো ধরে নিয়েছিলেন, ম্যাচটা সহজেই জিতে যাবে ভারত। এতটা যে লড়াই হবে, তা হয়তো কেউই ভাবেননি। এই রান তুলতে ৪৭.৩ ওভার লেগে গেল ভারতের। রোহিত অপরাজিত থাকল ১২২ রানে। আসলে বিশ্বকাপের আগে থেকেই বলাবলি হচ্ছিল, ইংল্যান্ডের পিচে ব্যাটসম্যানরাই শাসন করবেন। কিন্তু সাউদাম্পটনে বুধবারের এই ম্যাচে দেখা গেল, প্রতিটা রান পেতে লড়াই করতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। আসলে ইংল্যান্ডে পিচের চেয়েও ম্যাচের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে আবহাওয়া। এ দিন যেমন শুরু থেকেই আকাশ মেঘলা ছিল। যার ফলে বল মুভ করেছে। তা ছাড়া পিচেও দেখলাম, ডাবল বাউন্স আছে। যে জন্য ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের সময় হার্দিক পাণ্ড্যর হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে ফ্যাফ ডুপ্লেসির হাত থেকে ব্যাটটা ছিটকে গিয়েছিল। আবার রোহিতও সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল এ রকম বাউন্সে। কাগিসো রাবাডার প্রথম ওভারেই একটা বল ছিটকে উঠে রোহিতের গ্লাভসে লেগে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো ডুপ্লেসির হাতে প্রায় চলে গিয়েছিল। পরে আরও এক বার ক্রিস মরিসের বলে একই রকম ঘটনা ঘটতে দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসারই কিন্তু ভারতীয় ওপেনারদের শুরুর দিকে চাপে রেখে গিয়েছিল।
রোহিত শর্মা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন?
কিন্তু রোহিত এ দিন যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল, ভাল একটা ইনিংস খেলবে বলে। ম্যাচটা শেষ করে আসবে বলে। পেসাররা যেখানে রীতিমতো সাহায্য পাচ্ছে, সেখানে ওর কয়েকটা শট এখনও চোখে লেগে আছে। বিশেষ করে রাবাডাকে পুল করে মারা একটি ছয়।
শুরুর দিকে ধওয়ন এবং কোহালি ফিরে গেলেও রোহিতের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি করে গেল কে এল রাহুল। ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে কে নামবে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে এটা একটা জাতীয় তর্কে পরিণত হয়েছিল। প্রথম ম্যাচে রাহুল (২৬) দারুণ কিছু না করলেও মোটামুটি পাশ নম্বর পেয়ে গেল। ফলে পরের কয়েকটা ম্যাচে চার নম্বরে ওকেই নামতে দেখা যাবে বলে মনে হয়।
এই ম্যাচে আরও একটা লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। বুমরা বনাম রাবাডা। খেলার শুরুতে বুমরা যে স্পেলটা করল, সে রকম স্পেল আমি কমই দেখেছি। পাঁচ ওভারে ১৩ রান দিয়ে দু’উইকেট নেওয়াই শুধু নয়, ওর গতি এবং নিখুঁত লাইন-লেংথের সামনে অসহায় দেখাচ্ছিল ব্যাটসম্যানদের। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেটে নিশ্চয়ই বুমরাকে অনেক বার দেখেছে কুইন্টন ডি’কক। ওরা তো আইপিএলে সতীর্থ। কিন্তু তা সত্ত্বেও বুমরার বলের কোনও হদিশ পায়নি ডি’কক। অফস্টাম্পের বাইরে বার বার হার মানতে হল দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনারকে। শেষ পর্যন্ত স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট। একই ভাবে আমলাকেও তুলে নেয় বুম বুম বুমরা।
প্রথম ম্যাচে আরও একটা ব্যাপার দেখার ছিল। কুল-চা জুটি, মানে যুজবেন্দ্র চহাল এবং কুলদীপ যাদব কেমন খেলে। দুই রিস্ট স্পিনার মিলে তুলে নিল পাঁচ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের দেখে এমনিতেই মনে হচ্ছিল স্পিনের সামনে অসহায়। তার উপরে চহাল বা কুলদীপকে খেলছিল বলটা পিচে পড়ার পরে। যার ফলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ওরা শট খেলার সময়ই পাচ্ছিল না স্পিনারদের বিরুদ্ধে। আইপিএলে কুলদীপের খারাপ ফর্ম নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল। প্রথম ম্যাচে কুলদীপ একটা উইকেট পেলেও আত্মবিশ্বাসটা ফিরে পেল। যার জন্য অবশ্য চহালের কৃতিত্বও প্রাপ্য। ও এক দিকে চার উইকেট নিয়ে গেল বলে চাপটা কমে যায় কুলদীপের ওপর। এক ওভারে ডুপ্লেসি-সহ দুই উইকেট তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় ধাক্কা দিয়ে যায় চহাল।
অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলল কোহালি। এবং দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব করল। প্রথম থেকেই উইকেটের জন্য ঝাঁপিয়েছিল। বুমরা যখন ও রকম আগুনে গতিতে বল করছিল, দেখলাম নিজেকে তৃতীয় স্লিপে নিয়ে এল কোহালি। পরের বলেই ওখানে ক্যাচ দিয়ে আউট ডি’কক। ওই সময় মনে হচ্ছিল, ওয়ান ডে ম্যাচ হচ্ছে, না টেস্ট!
হিটম্যান (রোহিত) ফর্মে। ছন্দে ফিরেছে কুল-চা জুটিও। রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে কিন্তু চিন্তা বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy