সেঞ্চুরি করলেও দিনটা রোহিতের ছিল না। ছবি: এএফপি।
চলতি বিশ্বকাপে ভারত আর অপরাজিত নয়। আজ, রবিবার ইংল্যান্ডের কাছেই থেমে গেল ভারতের জয়রথ। এজবাস্টনে ইংল্যান্ড ৩১ রানে হারিয়ে দিল বিরাট-বাহিনীকে। ‘টিম ইন্ডিয়া’ এ দিন হেরে যাওয়ায় বিশ্বকাপে পাকিস্তান, বাংলাদেশ বেশ সমস্যায় পড়ে গেল। ভারত জিতলে সুবিধা হত দুই পড়শি দেশেরই। সেটা আর হল না।
৫০ ওভারের শেষে ইংল্যান্ড করেছিল সাত উইকেটে ৩৩৭ রান। রবিবার শুরু থেকেই যে গতিতে ছুটছিল ইংল্যান্ড, তাতে ৫০ ওভারের শেষে ৩৭০-এর কাছাকাছি রান করলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। ইংল্যান্ডের রান তাড়া করতে নেমে ভারতের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। লোকেশ রাহুল খাতা না খুলেই ফিরে যান। বিরাট কোহালি ও রোহিত শর্মা ইনিংস গড়ার কাজ শুরু করেন। ভারতের রান তোলার গতি ইংল্যান্ডের মতো ছিল না।
রোহিত-কোহালির মতো বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও ভারত ১০ ওভারে করে এক উইকেটে ২৮। ওখানেই অনেকটা পিছিয়ে যায় ভারত। কোহালি ও রোহিত জুটিতে ১৩৮ রান জুড়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছিলেন। কোহালি ফেরেন ব্যক্তিগত ৬৬ রানে। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত সেঞ্চুরি পাননি ভারত অধিনায়ক। হাফ সেঞ্চুরি করছেন ঠিকই কিন্তু পঞ্চাশকে একশোয় পরিণত করতে পারছেন না। এ দিনও তাই হল। কোহালিকেও নিশ্চয় বিষয়টা ভাবাচ্ছে।
রোহিত চলতি বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি করে ফেললেন। ‘হিটম্যান’-এর কাছ থেকে যখন আরও রান চাইছে টিম, তখনই ক্রিস ওকসের বলে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় রোহিতকে (১০২)। মুম্বইকর তখন ক্রিজে জমে গিয়েছেন। বড় শট খেলতে যে তিনি দক্ষ, তা সবাই জানেন। তিনি আরও কিছুক্ষণ টিকলে ম্যাচের রং যে বদলাত না, তা কে বলতে পারেন! রোহিত ফেরার পরে আস্কিং রেট ক্রমশ বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে ম্যাচ। বিজয় শঙ্করের পরিবর্তে এ দিন ঋষভ পন্থকে দলে নেওয়া হয়। এদিনই তাঁর বিশ্বকাপ-অভিষেক হল। ব্যাটিং দেখে বোঝাই যাচ্ছিল ঠিক মতো ছন্দে ছিলেন না পন্থ। ২৯ বলে ৩২ রান করলেন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। আরও কয়েকটি ম্যাচ না খেললে ছন্দ ফিরে পাবেন না। অবিশ্বাস্য ক্যাচে তাঁকে ফেরান ওকস। হার্দিক পাণ্ড্য ৩৩ বলে ৪৫ রান করেন। শেষের দিকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ৩১ বলে ৪২ রান করলেও ম্যাচ জেতাতে পারেননি। প্রথম দশ ওভার এবং শেষ ১০ ওভারের ধীর ব্যাটিং ভারতকে ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে।
আরও পড়ুন: নিশ্চিত শুধু অস্ট্রেলিয়া, সেমিফাইনালের তিনটি জায়গার যুদ্ধে ছয় দল
রবিবার টস জিতে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ব্যাট করলে কি সমস্যা হবে ভারতের? প্রশ্নটা ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির দিকে। কোহালির সপ্রতিভ জবাব, ‘‘আমরাও প্রথমে ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচের পরে আমরা আর রান তাড়া করিনি।’’ এই পিচে টস জিতলে সবাই প্রথমেই ব্যাট করতে চাইবেন। পিচে জুজু নেই। পিচের চরিত্র অনেকটা উপমহাদেশের মতোই। ব্যাটসম্যান সহায়ক পিচে রান করা একদমই কঠিন ব্যাপার নয়। ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্য ছিল প্রথমে ব্যাট করে বড় রানের বোঝা ভারতের উপরে চাপানো। সেটাই করেছেন বেয়ারস্টোরা।
ম্যাচটার গুরুত্ব ভাল করেই জানত ইংল্যান্ড। এই ম্যাচের উপরে নির্ভর করেছিল ইংল্যান্ডের শেষ চারে যাওয়া, না-যাওয়া। এরকম পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয় শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করান ইংল্যান্ডকে। যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ শামি শুরুতে ঝড় তুলতে পারেননি। ধাক্কা দিতে পারেননি ইংল্যান্ডের ইনিংসে। খুব সহজেই ভারতের দুই বিপজ্জনক বোলারকে সামলান জেসন রয় ও বেয়ারস্টো। প্রথম উইকেটে ১৬০ রান জোড়েন রয় ও বেয়ারস্টো।
কুলদীপের বলে জেসন রয় ব্যক্তিগত ৬৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। লং অনে তাঁর ক্যাচ ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা। জেসন রয় নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি জাদেজা শরীর ছুড়ে ক্যাচ নেবেন। রয় চলে গেলেও বেয়ারস্টো মেজাজে ব্যাট করেন। তিনি ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন। বেয়ারস্টোকে ১১১ রানে আউট করেন শামি। তার পরেও অবশ্য ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের দাপট কমেনি। রয় ও বেয়ারস্টো যেখানে ছেড়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকেই ধরলেন জো রুট ও বেন স্টোকস। রুট ৪৪ রানে ফেরার পরে স্টোকস ইংল্যান্ডের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান। ৫৪ বলে ৭৯ রানের দুরন্ত ইনিংস খেললেন স্টোকস। শামি আগের দিনগুলোর মতোই এদিনও সফল। তিনি পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নেন। দিনটা অবশ্য ভারতের ছিল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড (৫০ ওভার) ৩৩৭/৭
ভারত (৫০ ওভার) ৩০৬/৫
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy