অস্ত্র: শামির ইয়র্কারে আস্থা রাখছে ভারতীয় দল। ফাইল চিত্র
সাউদাম্পটনের যে মাঠে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াই হবে, সেখানে সাধারণত বড় রান ওঠে। পিচ একটু শুকনো থাকে। কিন্তু ইংল্যান্ডে ফোন করে জানলাম, আজ, বুধবার, আবহাওয়া মেঘলা থাকবে। এমনকি হাল্কা বৃষ্টিও কখনও কখনও হতে পারে। সে রকম যদি হয়, তা হলে কিন্তু প্রথম একাদশ বাছার ব্যাপারে অবশ্যই আবহাওয়া একটা প্রভাব ফেলবে।
অন্যতম ফেভারিট হিসেবে ভারত বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে, যারা প্রথম দুটো ম্যাচ হেরেছে। তবে ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশের কাছে হারার ফলেই শুধু নয়, দক্ষিণ আফ্রিকা বড় ধাক্কা খেয়ে গেল ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে। যখন চোটের জন্য ছিটকে গেল ডেল স্টেন। এমনিতে লুনগি এনগিডি আগেই ছিটকে গিয়েছিল চোটের জন্য। এ বার স্টেন না থাকায় নতুন বলে বল করার লোক খুঁজতে হবে ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাডাকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল, বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পেসার। কিন্তু প্রতিযোগিতার প্রথম কয়েকটি দিন দেখার পরে আমার মনে হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেরা ফাস্ট বোলারের নাম জোফ্রা আর্চার। ভয়ঙ্কর গতিতে বল করছে ইংল্যান্ডের পেসার। আইপিএলে ওকে দেখেছিলাম। তখন কিন্তু জোফ্রাকে এতটা ভয়ঙ্কর দেখায়নি। বরং রাবাডাকে অনেক ভাল লেগেছিল। যে রকম গতি ছিল, সে রকম সুইং। ইয়র্কারটা দুর্দান্ত করছিল। কিন্তু বিশ্বকাপে এখনও সেই রাবাডাকে পাইনি। কী রকম যেন ক্লান্ত দেখাচ্ছে। রাবাডা ছন্দে না ফিরলে দক্ষিণ আফ্রিকারও ফিরে আসা কঠিন।
আরও পড়ুন: কেদার না শঙ্কর? দেখে নিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
এখন যে প্রশ্নটা সব চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে, তা হল, এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম একাদশ কী হবে? ব্যাটিং লাইন নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। প্রথম ছ’জন হবে, রোহিত, ধওয়ন, কোহালি, রাহুল, ধোনি এবং কেদার। তবে আকাশ খুব মেঘলা থাকলে কেদারের বদলে বিজয় শঙ্করকে দেখা যেতে পারে।
এ বার আসছি বোলিংয়ে। সাউদাম্পটনে রানে ভরা পিচ হলেও আবহাওয়া কিন্তু পেসারদের সাহায্য করতে পারে। ইংল্যান্ডে এটাই মজা। পিচে হয়তো ঘাসের চিহ্ন নেই, কিন্তু আবহাওয়া এমন হয়ে গেল যে পেসাররা দারুণ সুইং পেয়ে গেল। আমাদের হাতে বিশ্বের সেরা পেস আক্রমণ আছে। যশপ্রীত বুমরা-মহম্মদ শামি গতি আর সুইংয়ে যে কোনও ব্যাটিংকে ঝামেলায় ফেলে দেবে। এর সঙ্গে যোগ করুন ভুবনেশ্বর কুমার আর হার্দিক পাণ্ড্যকে।
ভুবিকে নিয়ে বলব, ও খেললে যেন নতুন বলে বেশি সংখ্যক ওভার করে নেয়। সাদা বলে প্রথম দিকে সুইং পাওয়া যায়। পাশাপাশি মেঘলা আবহাওয়ায় হাওয়া চললে তো কথাই নেই। তখন ভুবনেশ্বর ভয়ঙ্কর। কিন্তু পরের দিকে ওকে মেরে দিতে পারে ব্যাটসম্যানরা। শামিকে ওয়ান চেঞ্জ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বিরাট। শামির বলে গতি আছে, হাতে দারুণ ইয়র্কারও আছে। ফলে ডেথ ওভারে ব্যাটসম্যানদের ঝামেলায় ফেলে দিতে পারবে শামি।
আমার সাফ কথা হল, আকাশ যদি মেঘলা থাকে তা হলে চার পেসারেই যাওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে একমাত্র স্পিনার হিসেবে আমার পছন্দ রবীন্দ্র জাডেজা। ও হল একটা প্যাকেজ। দশটা ওভার করে দিতে পারবে, লোয়ার অর্ডারে আগ্রাসী ব্যাটিং পাওয়া যাবে প্লাস অসাধারণ ফিল্ডার। পয়েন্ট অঞ্চলেই হোক বা পরের দিকে লং অফ, লং অনে— সব জায়গাতেই জাডেজা অনবদ্য। এখন তো শেষের দিকে লং অফ, লং অনে সেরা ফিল্ডাররা দাঁড়ায়। যে কারণে কোহালিকেও ওই অঞ্চলে ফিল্ড করতে দেখা যায়। আর যদি দুই স্পিনার খেলাতে হয়, তা হলে আমার পছন্দ কুলদীপ যাদব। মনে হয় না, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা কুলদীপকে বুঝতে পারবে।
শেষে একটা কথা বলেই দিচ্ছি। এই ম্যাচে ভারত ৮০ শতাংশ এগিয়ে থেকেই শুরু করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy