যুগলবন্দি: তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ১৪২ রান করে জয়ের ভিত গড়ে দেন শাকিব ও মুশফিকুর। গেটি ইমেজেস
বিশ্বকাপ অন্যতম বড় শক্তি বলা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু রবিবার ওভালে সেই দক্ষিণ আফ্রিকাকেই ২১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল বাংলাদেশ।
চার বছর আগে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এ বার বিশ্বকাপের শুরুতেই শাকিব আল হাসানদের চমক দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো। ম্যাচ সেরা হওয়ার সঙ্গে এ দিন আরও এক নজির গড়লেন শাকিব। ওয়ান ডে ক্রিকেটে দ্রুততম (১৯৯ ম্যাচ) পাঁচ হাজার রান ও আড়াইশো উইকেট দখল করলেন তিনি।
বিশ্বকাপের আগে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বলেছিলেন, একমাত্র শ্রীলঙ্কাকেই নাকি হারাবে বাংলাদেশ। এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকা জয় করে সেই ম্যাকালামকে লজ্জায় ফেলে দিল ‘টাইগার’রা।
আরও পড়ুন: ওভালে ব্যাঘ্রগর্জনে ধরাশায়ী দক্ষিণ আফ্রিকা, কী ভাবে কক-প্লেসিদের হেলায় হারাল বাংলাদেশ
ওভালে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে মাশরফি মর্তুজ়ার বাংলাদেশ ছয় উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৩০। যা ওয়ান ডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল ৩২৯। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে রান তুলেছিল তারা।
জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৩০৯-৮। ৮৪ বলে ৭৫ রান ও দক্ষিণ আফ্রিকার এডেন মারক্রামের উইকেট তুলে ম্যাচের নায়ক শাকিব। ম্যাচের পরে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে শাকিব বলে গেলেন, ‘‘এটা আমার চতুর্থ বিশ্বকাপ। এ বার অনেক কিছু প্রমাণ করার প্রতিযোগিতা আমার কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই জয়টা দরকার ছিল। এ রকম শুরু হওয়ায় দলটা ছন্দে থাকবে। অতীতে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগছে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘পরের ম্যাচ নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আইসিসি-র প্রতিযোগিতায় নিউজ়িল্যান্ড সব সময় কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে আমরাও ভাল খেলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’’ দাপটের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরফি মর্তুজ়া বলে গেলেন, ‘‘সৌম্য, মুশফিকুর ও শাকিব দারুণ ব্যাট করে আমাদের জিতিয়ে দিল।’’
টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপরে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালাতে শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (২৯ বলে ১৬ রান) ও সৌম্য সরকার (৩০ বলে ৪২ রান)।
দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিংয়ের বিরুদ্ধে পঞ্চম ওভারে লুঙ্গি এনগিডির বলে দু’বার পুল করে চার মেরে শুরুটা করেন সৌম্য। এতেই বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে হয়তো পৌঁছে গিয়েছিল অদৃশ্য বার্তা, বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা হলেও ভয়ের কিছু নেই। ১২ ওভারের মাথায় ক্রিস মরিসের বলে পুল করতে গিয়ে সৌম্য আউট হলে টাইগারদের রান বাড়ানোর দায়িত্ব তুলে নেন শাকিব ও মুশফিকুর। কাগিসো রাবাডাদের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে শাসন করেন এই দু’জনে। শাকিব ৮৪ বলে করেন ৭৫ রান। আর মুশফিকুর ৮০ বলে করেন ৭৮ রান। দু’জনের জুটিতে ওঠে ১৪২ রান। বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের সেরা জুটি। শেষের দিকে মহম্মদ মিঠুন (২১ বলে ২১) ও মাহমুদুল্লাহ (৩৩ বলে অপরাজিত ৪৬) ও মোসাদ্দেক হোসেন (২৬) শেষ পাঁচ ওভারে রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন।
জবাবে কুইন্টন ডি’কক (২৩) ও এডেন মারক্রাম (৪৫) শুরুটা ভাল করেছিলেন। তার পরে ফ্যাফ ডুপ্লেসি (৬২) ও জে পি ডুমিনিরাও (৪৫) চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শাকিব ও মুস্তাফিজ়ুরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে জয়ের দিশা খুঁজে পাননি তাঁরা। পরপর দুই ম্যাচ হেরে বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকা নামছে বিরাট কোহালির ভারতের বিরুদ্ধে। তার আগে ভারতেও উঠেছে বাংলা-স্রোত। সোহা আলি খানের টুইট, ‘‘দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশ। শিকড়ের টান অনুভব করলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy