Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
পাল্টা সেঞ্চুরি মুশফিকুরের

ভয়ঙ্কর ওয়ার্নার, দুরন্ত লড়েও হার শাকিবদের

বিশাল রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ কিন্তু দুর্দান্ত লড়াই করল মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের বিরুদ্ধে। অপরাজিত সেঞ্চুরি করে গেলেন মুশফিকুর রহিম।

দুই-গ্রহ: অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ওয়ার্নার (বাঁদিকে)। পাল্টা লড়াই মুশফিকুরের। সেঞ্চুরির পরে দুই তারকা। পিটিআই, রয়টার্স

দুই-গ্রহ: অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ওয়ার্নার (বাঁদিকে)। পাল্টা লড়াই মুশফিকুরের। সেঞ্চুরির পরে দুই তারকা। পিটিআই, রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৯ ০৪:১৩
Share: Save:

চলতি বিশ্বকাপে একেবারে অন্য ডেভিড ওয়ার্নারকে দেখা যাচ্ছে। ইনিংসের শুরুতে ঝুঁকি নিচ্ছেন না। বেশি বল খেলছেন। কমে গিয়েছে স্ট্রাইক রেট। কিন্তু বৃহস্পতিবার নটিংহ্যামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর স্বাভাবিক ব্যাটিংই উপহার দিলেন বাঁ-হাতি ওপেনার। ১৪৭ বলে ১৬৬ রান করে গেলেন ১৪টি চার ও পাঁচটি ছয়ের সৌজন্যে। চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এল তাঁর ব্যাটে।

এ দিন ইতিহাসও গড়েন ওয়ার্নার। বিশ্বকাপে দু’টি ১৫০ রানের ইনিংস হল তাঁর। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ১৭৮ রান করেছিলেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও ১৫০ রানের বেশি করে গেলেন। যে রেকর্ড এখনও পর্যন্ত কারও নেই। পাশাপাশি ১৬তম সেঞ্চুরি করে তিনি ছুঁলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে।

বিশাল রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ কিন্তু দুর্দান্ত লড়াই করল মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের বিরুদ্ধে। অপরাজিত সেঞ্চুরি করে গেলেন মুশফিকুর রহিম। ৩৮১ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ তুলল আট উইকেটে ৩৩৩।

ওপেনার তামিম ইকবাল শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন। ভুল বোঝাবুঝির জন্য সৌম্য সরকার ১০ করে রান আউট হয়ে যাওয়ার পরে শাকিব আল হাসানের সঙ্গে ইনিংসের হাল ধরেন তামিম। ৭৪ বলে ৬২ রান করে স্টার্কের বল কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৪১ বলে ৪১ রান করে শাকিব ফিরে যান মার্কাস স্টোয়নিসের স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে। তবুও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ। ৯৭ বলে ১০২ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন মুশফিকুর। মাহমুদুল্লাহের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১২৭ রান যোগ করেন বাংলাদেশের উইকেটকিপার। ৫০ বলে ৬৯ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। সব চেয়ে বেশি নজর কাড়ে কামিন্সকে মারা মাহমুদুল্লাহের ছয়। পেসারকে মিডউইকেট অঞ্চলের উপর দিয়ে গ্যালারিরতে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশের ‘ফিনিশার’। যদিও তাতে লাভ হয়নি। বিপক্ষের পাহাড় সমান রানের ভার সামলাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। তারা হারে ৪৮ রানে।

অস্ট্রেলিয়াও যে শুরু থেকে আক্রমণ করেছে, তা কিন্তু নয়। অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে মন্থর গতিতেই ইনিংস শুরু করেন ওয়ার্নার। ৫৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ফিঞ্চ কিন্তু আক্রমণ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ৫১ বলে ৫৩ রান করে ফিরে যান অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। উপহার দিয়ে যান প্রথম উইকেটে ১২১ রানের পার্টনারশিপ।

তিন নম্বরে স্টিভ স্মিথের পরিবর্তে নামানো হয় উসমান খোয়াজাকে। তৃতীয় উইকেটে ১৯৩ রানের জুটি গড়ে ওয়ার্নার-খোয়াজা জুটি। বেশ কয়েকটি ম্যাচে রান পাচ্ছিলেন না খোয়াজা। কিন্তু এ দিন ৭২ বলে ৮৯ রান করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। এ ছাড়াও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ১০ বলে ৩২ রানের ইনিংস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় রান রেট বাড়ানোর জন্য। তিনি রান আউট না হলে ৪০০ রানের গণ্ডিও পেরিয়ে যেতে পারত অস্ট্রেলিয়া।

নটিংহ্যামের পিচ ব্যাটসম্যান সহায়ক। সেখানে ওয়ার্নার-ফিঞ্চদের দাপট প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু নতুন বলে মাশরফি মর্তুজা, রুবেল এবং মুস্তাফিজুর রহমান পরের পর শর্ট বল করে দুই ওপেনারকে থিতু হতে সাহায্য করেন। দিনের শেষে ম্যাচের নায়ক ওয়ার্নার বলে গেলেন, ‘‘অ্যাডাম গিলক্রিস্টের রেকর্ড ছুঁতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। তবে আরও বেশি স্বস্তিবোধ করছি দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পেয়ে। এ দিন শুরু থেকে আক্রমণ করিনি। নতুন বলের বিরুদ্ধে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেছি। তাই পরে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে অসুবিধা হয়নি।’’

পিচ নিয়ে যদিও সন্তুষ্ট নন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। বলে গেলেন, ‘‘বোলারদের জন্য পিচে সাহায্য নেই। একেবারে শুষ্ক ব্যাটিং উইকেট।’’ এ দিন জেতায় শেষ চারের রাস্তায় এক ধাপ এগোলেন ফিঞ্চরা।

স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ৩৮১-৫ (৫০)
বাংলাদেশ ৩৩৩-৮ (৫০)

অস্ট্রেলিয়া
ফিঞ্চ ক রুবেল বো সৌম্য ৫৩•৫১
ওয়ার্নার ক রুবেল বো সৌম্য ১৬৬•১৪৭
খোয়াজা ক মুশফিকুর বো সৌম্য ৮৯•৭২
ম্যাক্সওয়েল রান আউট ৩২•১০
স্টোয়নিস ন. আ. ১৭•১১
স্মিথ এলবিডব্লিউ বো মুস্তাফিজ়ুর ১•২
ক্যারি ন. আ. ১১•৮
অতিরিক্ত ১২
মোট ৩৮১-৫ (৫০)
পতন: ১-১২১ (ফিঞ্চ, ২০.২), ২-৩১৩ (ওয়ার্নার, ৪৪.২), ৩-৩৫২ (ম্যাক্সওয়েল, ৪৬.২), ৪-৩৫৩ (খোয়াজা, ৪৬.৫), ৫-৩৫৪ (স্মিথ, ৪৭.১)।
বোলিং: মাশরাফি মর্তুজা ৮-০-৫৬-০, মুস্তাফিজ়ুর রহমান ৯-০-৬৯-১, শাকিব আল হাসান ৬-০-৫০-০, রুবেল হোসেন ৯-০-৮৩-০, মেহেদি হাসান মিরাজ় ১০-০-৫৯-০, সৌম্য সরকার ৮-০-৫৮-৩।
বাংলাদেশ
তামিম বো স্টার্ক ৬২•৭৪
সৌম্য রান আউট ১০•৮
শাকিব ক ওয়ার্নার বো স্টোয়নিস ৪১•৪১
মুশফিকুর ন. আ. ১০২•৯৭
লিটন এলবিডব্লিউ বো জ়াম্পা ২০•১৭
মাহমুদুল্লা ক কামিন্স বো নাইল ৬৯•৫০
সাব্বির বো কুল্টার-নাইল ০•১
মেহেদি ক ওয়ার্নার বো স্টার্ক ৬•৭
মাশরফি ক ম্যাক্সওয়েল বো স্টোয়নিস ৬•৫
অতিরিক্ত ১৭ মোট ৩৩৩-৮ (৫০)
পতন: ১-২৩ (সৌম্য, ৩.৫), ২-১০২ (শাকিব, ১৮.২), ৩-১৪৪ (তামিম, ২৪.১), ৪-১৭৫ (লিটন, ২৯.২), ৫-৩০২ (মাহমুদুল্লা, ৪৫.৩), ৬-৩০২ (সাব্বির, ৪৫.৪), ৭-৩২৩ (মেহেদি, ৪৮.২), ৮-৩৩৩ (মাশরফি, ৪৯.৬)।
বোলিং: মিচেল স্টার্ক ১০-০-৫৫-২, প্যাট কামিন্স ১০-১-৬৫-০, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩-০-২৫-০, নেথান কুল্টার-নাইল ১০-০-৫৮-২, মার্কাস স্টোয়নিস ৮-০-৫৪-২, অ্যাডাম জ়াম্পা ৯-০-৬৮-১।

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Australia Bangladesh ICC World Cup 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy