স্মরণীয়: এক মাস আগের সেই ছবি। ইডেনে গোলাপি বলে দিনরাতের টেস্ট জিতে ট্রফি হাতে ইডেন প্রদক্ষিণ বিরাট কোহালির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের। আইসিসি এ বার টেস্টে আরও পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে। ফাইল চিত্র
টেস্ট ক্রিকেটে বড় পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে আইসিসি। ২০২৩ সাল থেকে চার দিনের টেস্ট বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্গত যে সব টেস্ট থাকবে, তাতেই এই বদলগুলো আনতে চাইছে আইসিসি। লক্ষ্য একটাই। ঠাসা ক্রীড়াসূচিতে কিছুটা জায়গা বার করা। জানা গিয়েছে, ২০২৩-২০৩১ সময়ের মধ্যে এই চার দিনের টেস্ট হবে।
হঠাৎ কেন এই চার দিনের টেস্ট করতে আগ্রহী আইসিসি? এর পিছনে কয়েকটি কারণ উঠে আসছে। যেমন, এক, আইসিসি আরও বেশি করে বিশ্ব জুড়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চায়। দুই, বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগের রমরমা বাড়ছে, যাদের জন্য সময় বার করতে হবে। তিন, পাঁচ দিনের ম্যাচ আয়োজনের খরচ অনেক বেশি, চার দিনের হলে খরচ কমবে। চার, ভারতীয় বোর্ডের আরও বেশি করে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার দাবি তা হলে মানা যাবে। মনে করা হচ্ছে, চার দিনের টেস্ট হলে এই সব ব্যাপারে নজর দেওয়া যাবে। একটা হিসেব বলছে, ২০১৫-২০২৩ সময়ের মধ্যে যদি চার দিনের টেস্ট খেলা হত, তা হলে মোট ৩৩৫ দিন ফাঁকা পাওয়া যেত।
চার দিনের টেস্ট অবশ্য নতুন কিছু নয়। এই বছরেই ইংল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ডের মধ্যে চার দিনের টেস্ট হয়েছিল। তার আগে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা আর জিম্বাবোয়ের মধ্যেও চার দিনের টেস্ট খেলা হয়েছিল। কিন্তু সব ক’টি টেস্ট খেলিয়ে দেশ পরস্পরের মধ্যে চার দিনের টেস্ট খেলছে, এ রকম ঘটনা ঘটলে সেটা অভূতপূর্বই হবে।
তবে আইসিসির এই পরিকল্পনাকে সবাই যে মেনে নেবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। অস্ট্রেলিয়াতেই যেমন দুটো মতবাদ পাওয়া যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কেভিন রবার্টস মনে করেন, চার দিনের টেস্ট ম্যাচের ব্যাপারটা ভেবে দেখাই যেতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের এই ব্যাপারটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। এই সপ্তাহে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। তবে শুধুমাত্র আবেগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। পরিসংখ্যান এবং তথ্য ঘেঁটে দেখতে হবে। যেমন আমাদের দেখতে হবে, গত পাঁচ-দশ বছরে টেস্ট ম্যাচ গড়ে কত দিন আর কত ওভার চলেছে। তবে একটা জিনিস পরিষ্কার করে বলতে চাই। আমরা আইসিসি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে তৈরি।’’
মেলবোর্নে নিউজ়িল্যান্ডকে হারিয়ে উঠে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেন আবার বলেছেন, ‘‘অ্যাশেজে যদি চার দিনের টেস্ট হত, তা হলে আমরা কোনও ফল পেতাম না। এ বারের অ্যাশেজের সব ক’টি টেস্টই তো পাঁচ দিনে গড়িয়েছে।’’ পেন আরও বলেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে বাকি ফর্ম্যাটের তো এখানেই পার্থক্য। পাঁচ দিন ধরে এক জন ক্রিকেটারকে লড়াই করে যেতে হয়। মানসিক, শারীরিক ভাবে ব্যাপারটা খুব সোজা নয়। তাই চার দিনের প্রথম শ্রেণির ম্যাচগুলোর চেয়ে পাঁচ দিনের টেস্ট এক জন ক্রিকেটারের অনেক বেশি পরীক্ষা নেয়। আশা করব, টেস্ট ম্যাচের দিন কমানো হবে না।’’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও পরিষ্কার করে দেন, আগামী এক-দেড় বছরের মধ্যে ভবিষ্যতের ক্রীড়াসূচি হয়তো ঠিক করে নেওয়া হবে। রবার্টস বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল, ২০২৩ থেকে ২০৩১— এই সময়ের ক্রীড়াসূচি তৈরি করে ফেলা। ব্যাপারটা সোজা নয়। তবে কাজটা আমাদের করতে হবে।’’
চার দিনের টেস্ট ম্যাচ হলে প্রতি দিন ৯০ ওভারের পরিবর্তে ৯৮ ওভার করে হবে বলে আপাতত ঠিক আছে। সে ক্ষেত্রে একটা গোটা দিন কম হলেও ওভার নষ্ট হবে মোটে ৫৮। কিন্তু পাশাপাশি একটা প্রশ্নও উঠছে। বলা হচ্ছে, এখন ৯০ ওভার শেষ করতেই বাড়তি আধ ঘণ্টা সময় দিতে হয় অনেক টেস্টেই। সে ক্ষেত্রে ৯৮ ওভার কি করে এক দিনে করা সম্ভব হবে? বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট দলে যদি পেসারদের সংখ্যা বেশি থাকে। চার দিনের টেস্ট হলে পিচ প্রস্তুতকারকদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের এমন পিচ তৈরি করতে হবে যা চার দিনের মধ্যে ব্যাটসম্যান, পেসার এবং স্পিনারদের সাহায্য করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy