ম্যাচের ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পরে দুই দলের খেলোয়াড়েরা।—ছবি সংগৃহীত।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের পরে মাঠে প্রায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন দু’দেশের ক্রিকেটারেরা। যা থামাতে এগিয়ে আসতে হয় দু’দলের সাপোর্ট স্টাফকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলি ম্যাচ শেষেই বলে দেন, ‘‘একেবারে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’’ আবার ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গের মন্তব্য, ‘‘খুবই নোংরামি করেছে ওরা।’’
ম্যাচ শেষে এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে প্রিয়ম বলেন, ‘‘হারটা আমরা মেনে নিয়েছি। ক্রিকেটে একটি দল জিতবে, অন্যটি হারবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিপক্ষ দলের আচরণ প্রচণ্ড হতাশজনক এবং নোংরা। এই ঘটনা ঘটা উচিত হয়নি।’’
ভারতীয় দলের ম্যানেজার অনিল পটেল জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের আচরণ খতিয়ে দেখবে আইসিসি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। তখন বুঝতে পারিনি মাঠের মধ্যে কী চলছে। আইসিসি-র প্রতিনিধিরা মাঠে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ভিডিয়োর ফুটেজ খতিয়ে দেখে আমাদের জানাবেন, ঘটনাটি কী।’’ অনিল জানিয়েছেন, ম্যাচ রেফারি গ্রেম লেব্রয় ম্যাচ শেষে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে গিয়েছেন। অনিলের কথায়, ‘‘রেফারি আমার কাছে এসে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, আইসিসি এই বিষয়টি খুবই গভীর ভাবে খতিয়ে দেখবে। কাল সকালের মধ্যেই সব জানতে পারব।’’
ম্যাচ চলাকালীনও দু’দলের ক্রিকেটারেরা স্লেজ করে গিয়েছেন ক্রমাগত। বাংলাদেশ পেসার শরিফুল ইসলামের উত্তেজিত অঙ্গভঙ্গি ক্যামেরাবন্দিও হয়েছে বেশ কয়েক বার। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর নিজেদের আচরণ নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আকবর বলেছেন, ‘‘যা হয়েছে তা একেবারেই হওয়া উচিত ছিল না। আমি নিজেও জানি না ঠিক কী হয়েছিল। এমনকি জিজ্ঞাসা করার মতো পরিস্থিতিতেও ছিলাম না তখন। কিন্তু ক্রিকেটবিশ্বের কাছে একটি বিষয় অজানা নয়, কোনও বড় প্রতিযোগিতা জিতলে আবেগে ভেসে যায় অনেকে। আর ফাইনালে বেশ কয়েক বার দু’দলের ক্রিকেটারেরাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছিল। তারই প্রতিফলন এ ধরনের উৎসব।’’
যুব বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে এ ধরনের আচরণের সমালোচনা করেছেন ক্রিকেটমহলের অনেকেই। কারও কারও মতে, সিনিয়রদের মধ্যেও এ ধরনের আগ্রাসন দেখা যায় না। আকবরকে তা জানাতেই অধিনায়ক বলে ওঠেন, ‘‘যুব ক্রিকেটে এ ধরনের দৃশ্য সত্যি আশা করা যায় না। যে কোনও দেশের বিরুদ্ধে যে কোনও ম্যাচে সম্মান ও স্পিরিটের সঙ্গে খেলা উচিত। তা করতে না পারলে, খেলাটাই অসম্মানিত হবে। জেন্টলম্যান’স গেম হিসেবে পরিচিত যে খেলা, সেখানে মাঠে দাঁড়িয়ে এ ধরনের আচরণ একেবারেই কাম্য নয়। দলের পক্ষ থেকে আমি সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’
গত কয়েক বছর ধরেই সিনিয়র ও জুনিয়র ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জিতে ফিরেছে ভারত। সিনিয়রেরা বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিয়েছে। এশিয়া কাপ ফাইনালে হারিয়েছে। এমনকি নিদাহাস ট্রফির শেষ ম্যাচেও হার মানতে হয়েছে বাংলাদেশকে। জুনিয়র বিভাগেও এশিয়া কাপ ফাইনাল ও ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে হেরেছে বাংলাদেশ। আকবর পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তৈরি ছিল ছেলেরা।’’
দলে যশস্বীরা: অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা দল বাছল আইসিসি। দলে রয়েছেন ভারতের তিন ক্রিকেটার যশস্বী জয়সওয়াল, রবি বিষ্ণোই এবং কার্তিক ত্যাগী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy