How archer Deepika Kumari, the daughter of a rickshaw driver acquires success in life dgtl
Deepika Kumari
Deepika Kumari: মাসে পরিবারের আয় দেড় হাজার! মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্বসেরা হন দীপিকা
শাণিত তিরের মতোই উজ্জ্বল তিরন্দাজ দীপিকা কুমারী।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২১ ১৫:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
তাঁর জ্বালায় গাছের একটি আমও আস্ত থাকত না। গাছে আম ঝুলতে দেখলেই নাকি ঢিল ছুড়ে নামিয়ে আনতেন তিনি।
০২২০
ছোট থেকেই লক্ষ্য ছিল এতটাই স্থির। লক্ষ্য পূরণে তাই সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে দু’বার ভাবেননি। প্রয়োজনে চোখে চোখ রেখে লড়ে গিয়েছেন। না, আম পাড়ার জন্য লড়েননি। আম ছিল তাঁর অনুশীলনের অঙ্গ মাত্র।
০৩২০
সেই লড়াই তাঁকে নিয়ে এনে ফেলেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। সারা বিশ্বের সামনে লক্ষ্যভেদ করে নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। শাণিত তিরের মতোই উজ্জ্বল তিরন্দাজ দীপিকা কুমারী।
০৪২০
আজ তিনি বিশ্বের এক নম্বর তিরন্দাজ। তাঁকে এক ডাকে চেনে সারা বিশ্ব। অথচ এক সময় নিজের ছোট গ্রামেও পাড়া-প্রতিবেশী ছাড়া তাঁর নাম জানতেন না কেউ।
০৫২০
দীপিকার জন্ম ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর এক দরিদ্র পরিবারে। রাঁচী থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তাঁর গ্রাম রাতু ছাত্তি।
০৬২০
বাবা শিবনারায়ণ মাহাতো ছিলেন এক জন অটোচালক। মা গীতা মাহাতো রাঁচী মেডিকেল কলেজে আয়ার কাজ করতেন।
০৭২০
কষ্টের সংসারই তাঁর লক্ষ্য পূরণে প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মাস গেলে দেড় হাজার টাকা ছিল সংসারের মোট উপার্জন। এই নামমাত্র টাকায় কী আর মেয়েকে তিরন্দাজ করার কথা ভাবতে পারেন কেউ!
০৮২০
কিন্তু দীপিকা হার মানার পাত্রী ছিলেন না। অনুশীলনের প্রথম ধাপ তাই শুরু হয় গ্রামের আমবাগান থেকে। নিখুঁত নিশানায় ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে আম পাড়া ছিল তার কাছে অতি সামান্য ব্যাপার। এ ভাবে লক্ষ্যভেদের অনুশীলন শুরু করেন দীপিকা।
০৯২০
মেয়ের দক্ষতা নজরে আসে তাঁর মা-বাবারও। তাঁকে বাঁশের তির-ধনুক বানিয়ে দেন তাঁরা। সেই তির-ধনুক দিয়েই অনুশীলন শুরু করেন তিনি।
১০২০
২০০৫ সালে ঝাড়খণ্ডের খারসওয়ানে একটি তিরন্দাজ অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন তিনি। ভর্তি হওয়াটা অত সহজ ছিল না।
১১২০
এই অ্যাকাডেমি ছিল ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার স্ত্রী মীরা মুণ্ডার। প্রথমে এই অ্যাকাডেমিতে ভর্তি নেওয়াই হচ্ছিল না। দীপিকার বয়স তখন মাত্র ১১।
১২২০
ওই বয়সেই সরাসরি মীরার চোখে চোখ রেখে দীপিকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন।
১৩২০
“আমাকে ৩ মাস সময় দিন। আমি যদি ভাল পারফর্ম করতে না পারি তা হলে তাড়িয়ে দেবেন,” ঠিক এ কথাটাই বলেছিলেন দীপিকা। ওই ৩ মাসের মধ্যে নিজেকে প্রমাণও করেছিলেন।
১৪২০
তবে তাঁর পেশাগত তিরন্দাজ জীবন শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে। ওই বছর জামশেদপুরের টাটা আর্চারি অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পান তিনি। সেই প্রথম সঠিক সরঞ্জাম নিয়ে তিরন্দাজির অনুশীলন শুরু করেন।
১৫২০
সেখানে মাসে ৫০০ টাকা ভাতাও পেতেন। তিরন্দাজিই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। সব কিছু ভুলে একাগ্র চিত্তে অনুশীলন করে গিয়েছেন শুধু।
১৬২০
পরিশ্রমের ফল কখনও বৃথা যায়নি। ৩ বছর পর ২০০৯ সালে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর হাতে ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি।
১৭২০
গ্রামের আমবাগানগুলো আজ সুরক্ষিত। ঝাড়খণ্ডের ওই গ্রামে এখন থাকার সময়ই নেই তাঁর। কখনও তুরস্ক কখনও মেক্সিকো তো কখনও চিন, আমেরিকা। বিশ্বের নানা প্রান্তে লক্ষ্যভেদ করতে ছুটে চলেছেন দীপিকা।
১৮২০
বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় একাধিক সোনা জিতেছেন তিনি। ২০১২ সালে অর্জুন পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন তিনি।
১৯২০
২০১৭ সালে তাঁকে নিয়ে ‘লেডিস ফার্স্ট’ নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পায়। তাঁর বায়োপিক বানানোরও কথাবার্তা চলছে।
২০২০
২০২০ সালে তিরন্দাজ অতনু দাসকে বিয়ে করেন দীপিকা। ২ বছরের প্রেমের পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।