ডার্বির আগুন বুকে নিয়ে ডুরান্ড সেমিফাইনালে নামবেন হেনরি।
বদলে গিয়েছে তাঁর জার্সির রং। বদলে গিয়েছে শহর। ডুরান্ডের সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নামার আগে হেনরি কিসেক্কার মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হয়নি।
ডার্বির আগে মোহনবাগান-জার্সিতে ঠিক যেমন ভাবে ফুটতেন, বুধবারের গোকুলম-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে তাঁর বুকে আগের মতোই বারুদ জ্বলছে। আগের মতোই আবেগ অনুভব করছেন হেনরি। যদিও বলছেন, ‘‘সবটাই তো বসের উপরে নির্ভর করছে।’’ হেনরির বস হলেন গোকুলম কোচ ফের্নান্দো স্যান্টিয়াগো। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে হেনরি শুরু করছেন বুধবার।
সবুজ-মেরুন জার্সিতে ডার্বির অভিজ্ঞতা ভাল নয় উগান্ডান স্ট্রাইকারের। আই লিগের দু’ টি ডার্বিতেই ইস্টবেঙ্গলের কাছে হারতে হয়েছিল মোহনবাগানকে। প্রথম ডার্বিতে দশ জনে নেমে গিয়ে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করেছিল মোহনবাগান। কিন্তু, ম্যাচ জেতা আর হয়নি বাগানের পক্ষে।
আরও পড়ুন: পুরনো ক্লাবেই ফিরলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন তারকা
আই লিগের দ্বিতীয় ডার্বির আগে কোচ বদল হয়েছিল সবুজ-মেরুনে। শঙ্করলাল চক্রবর্তীর পরিবর্তে দায়িত্ব নেওয়া খালিদ জামিলও চিত্রনাট্য বদলাতে পারেননি। ম্যাচ শুরুর আগের দিনও খালিদের পরিকল্পনায় ছিলেন না হেনরি। খেলা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হেনরি জানতে পারেন, তাঁকে নামতে হবে ডার্বিতে। আকাশ থেকে পড়ার মতো ব্যাপার! ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপের সময়ে চোট পান ইউটা কিনোয়াকি। তাঁর জায়গায় হঠাৎই নামিয়ে দেওয়া হয় হেনরিকে।
অনভ্যস্ত মাঝমাঠ পোজিশনে হেনরি নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। করাটা সম্ভবও ছিল না। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালের আগে মঙ্গলবার হেনরি বলছিলেন, ‘‘আমি তো মাঝমাঠের ফুটবলারই নই। আমি ভাল খেলব কী করে?’’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন উগান্ডার গোলমেশিন। তাঁর প্রশ্নের জবাব এখন আর দেবেন কে?
গোকুলমে প্রথম বার খেলতে এসে ভারতীয় ফুটবলে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন হেনরি কিসেক্কা। মোহনবাগান কর্তারা তাঁকে নিয়ে আসেন গঙ্গাপারের ক্লাবে। আট বছর পরে কলকাতা লিগ জিতে দারুণ ভাবে শুরু করেছিল মোহনবাগান। শঙ্করলাল বড় দাদার মতো আগলে রাখতেন হেনরিকে। আইলিগ শুরু হতেই ছন্দ নষ্ট হয়ে যায়। কলকাতা লিগে ছুটছিল যে দলটা, সেই দলটাকেই আইলিগে বেরঙিন দেখাচ্ছিল।
আইলিগ শুরুর আগেই ঘনিষ্ঠমহলে নাকি হেনরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, আই লিগে এ বার ভাল ফল করা সম্ভব হবে না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, দলের ছন্দটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একই সুরে বাঁধা নেই দলটা। দলের ব্যর্থতার দায় নিয়ে শঙ্করলাল সরে যাওয়ার পরে নিজের পোজিশনও ছাড়তে হয় হেনরিকে। পছন্দের জায়গার বদলে উগান্ডার স্ট্রাইকারকে খেলানো হত অন্য জায়গায়। নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত সুপার কাপের আগে ক্লাব কর্তারা তাঁকে ছেঁটে ফেলেন। সে সব দিনগুলো তাঁকে যন্ত্রণা দিয়েছে। রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। এখনও সে সব দিন কাঁদায় হেনরিকে।
পুরনো ক্লাবে ফিরে এসে খুশি হেনরি। ঘরোয়া পরিবেশের ছোঁয়া পেয়েছেন তিনি। গোকুলমের অন্দরমহল যে তাঁর খুব পরিচিত। দলের মালিক তাঁর উপরে আস্থা রেখেছেন। যে সংস্থার হাত ধরে ধরে এই দেশে এসেছিলেন, সেই অ্যাটলেটিক্স গ্লোবাল স্পোর্টসের কর্তারাও হেনরিকে নিয়ে আশাবাদী। বুধবার হেনরির সামনে ফের ইস্টবেঙ্গল। বাগানের জার্সিতে ডার্বি ম্যাচে আগুন জ্বালাতে পারেননি হেনরি। গতবারের প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ আরও একবার তাঁর সামনে। উগান্ডার স্ট্রাইকার ফুটছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy