আগ্রাসন: কোহালির এই মেজাজেরই প্রশংসায় গ্রেগ চ্যাপেল। ফাইল চিত্র
অস্ট্রেলিয়ার বাইরে বিরাট কোহালিই তাঁর দেখা সব চেয়ে অস্ট্রেলীয় ঘরানার ক্রিকেটার বলে মনে করেন গ্রেগ চ্যাপেল। অতীতে ভারতে কোচিং অধ্যায় কাটিয়ে যাওয়া গুরু গ্রেগকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে অধিনায়ক সৌরভে গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে উত্তপ্ত সম্পর্ক তৈরি হওয়ায়।
অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রে তাঁর কলামে গ্রেগ লিখেছেন, ‘‘অতীতে ভারতের কয়েকটি দলকে দেখে মনে হত যেন গাঁধী নীতি মেনে চলে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম ভারত অধিনায়ক, যে সেই মনোভাব পাল্টাতে চেয়েছিল। ভারতে ওর চেষ্টা সুফল পেয়েছিল কিন্তু বিদেশে ধাক্কা খায়।’’ পরিসংখ্যান যদিও বলছে, সৌরভের আমলে বিদেশে নিয়মিত ভাবে ভাল ফল করা শুরু করে ভারতীয় দল। অস্ট্রেলিয়াতে গিয়েও স্টিভ ওয়ের দলের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ ড্র করে ফিরেছিল সৌরভের দল।
বর্তমান ভারত অধিনায়ককে নিয়ে গ্রেগের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিরাট পরোক্ষ প্রতিরোধে বিশ্বাস করে না। পুরোদস্তুর আগ্রাসনের মুখ ও। বিরাট প্রতিপক্ষকে শাসন করা ছাড়া কিছু ভাবেই না।’’ যোগ করছেন, ‘‘সারা জীবনে আমার দেখা অস্ট্রেলিয়ার বাইরের ক্রিকেটারদের মধ্যে কোহালিকেই সব চেয়ে বেশি অস্ট্রেলীয় মনে হয়েছে। নতুন ভারতের মুখ ও।’’ বিরাটের টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আবেগকে সম্মান জানিয়ে গ্রেগ লিখেছেন, ‘‘ব্যস্ত সূচিতে কোণঠাসা হয়ে পড়া টেস্ট ক্রিকেটের জন্য কোহালির টেস্ট নিয়ে আবেগ দারুণ প্রাপ্তি। টেস্ট ক্রিকেট ওর কাছে সব সময় বেশি প্রাধান্য পেয়েছে এবং তার জন্য নিজেকে অতিরিক্ত ফিট ও শক্তিশালী করে তুলেছে। কোহালি স্পষ্ট করে দেয় যে, ও চায় টেস্ট ক্রিকেটে ভারতকে সকলে সম্মান করুক।’’ প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান এবং অধিনায়ক তাঁর স্বভাবসিদ্ধ সোজাসাপ্টা ভঙ্গিতে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘‘ভারতের অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে উদাসীন হলে প্রশাসকদের খুবই আনন্দ হওয়ার কথা। কারণ, প্রশাসকেরা নতুন ফর্ম্যাট (ইঙ্গিত টি-টোয়েন্টি, আইপিএলের দিকে) নিয়ে আচ্ছন্ন। কিন্তু কোহালির মনোভাব থেকে পরিষ্কার, দেশের হয়ে ম্যাচ জেতাই ওর কাছে সব চেয়ে বেশি গর্বের।’’ কোহালি, স্টিভ স্মিথ, কেন উইলিয়ামসনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দৌড় নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘স্মিথ পরিসংখ্যানের দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে হয়তো। কিন্তু কোন পণ্ডিতের সাহস হবে কাউকে এগিয়ে রাখার!’’ কিন্তু গ্রেগের ঘোষণা, ‘‘বিশ্ব ক্রিকেটের দিক থেকে বিরাট সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ও ভীষণ প্রভাবশালী। আর সব চেয়ে বেশি চাপেও থাকে বিরাটই। প্রত্যেক বার ব্যাট হাতে যখন নামে, ওকে যে ভাবে অসংখ্য কোটি মানুষের প্রত্যাশা, চাহিদা সামলাতে হয়, তা অগ্রাহ্য করার উপায় নেই।’’
আরও পড়ুন: জেতা ম্যাচ ছুড়ে দিয়ে এলাম আমরা: হাবাস
আরও পড়ুন: নিকোলসের শতরানে বিপদের হাত থেকে বাঁচল নিউজিল্যান্ড
অ্যাডিলেডে প্রথম দিনরাতের টেস্ট খেলেই দেশে ফিরে আসবেন কোহালি। সন্তান জন্মানোর সময়টাতে স্ত্রী অনুষ্কার পাশে থাকবেন বলে। গ্রেগ লিখেছেন, ‘‘আমি বিরাটের অবস্থাটা বুঝি অবশ্যই। কিন্তু এ রকম একটা সিরিজে তিনটি টেস্টের জন্য ওর না থাকাটা লজ্জাজনক হতে যাচ্ছে।’’ এর মহাত্মা গাঁধীর উক্তি টেনে যোগ করেন, ‘‘কোহালির সাফল্যের তাড়না দেখার মতো। গাঁধীজি যেমন বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়নরা তৈরি হয় তাদের অন্তরের তাড়না, স্বপ্ন, দূরদর্শিতা দিয়ে।’’ গ্রেগের এমনও মনে হচ্ছে যে, ‘‘এই ক’বছরে কোহালির ব্যাট থেকে এমন কিছু ইনিংস বেরিয়েছে, যা স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস খেলতে পারলেও গর্বিত হতেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy