আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ফ্রান গনজালেজ। — ফাইল চিত্র।
গতবার সনি নর্দের পিঠে উঠেছিল ৫০ নম্বর জার্সি। এ বার সেই জার্সিটা পরছেন স্পেনের ফুটবলার ফ্রান হ্যাভিয়ে গনজালেজ। গোটা দলের অভিভাবকও যেন তিনিই। রবিবারের মহারণের আগে খোলামেলা ফ্রানকে পেল আনন্দবাজার। প্রতিটি কথায় ঠিকরে বেরোচ্ছিল আত্মবিশ্বাস।
কলকাতা কেমন লাগছে? নতুন শহরে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না তো?
ফ্রান: না, না। সমস্যা হবে কেন? এনজয় করছি। ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছি কলকাতার জলহাওয়ার সঙ্গে। শহরটাকেও বোঝার চেষ্টা করছি। এখানকার মানুষজনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। ভালই লাগছে।
নতুন শহরে পা রাখার পর থেকেই তো অগ্নিপরীক্ষায় বসতে হচ্ছে আপনাদের? কলকাতা লিগে শুরুটা ভাল হল না। ডুরান্ড কাপের ফাইনাল হেরে গেলেন। রবিবার ডার্বি। খুবই কঠিন একটা ম্যাচ। প্রস্তুতি কেমন?
ফ্রান: ডার্বির প্রস্তুতি ঠিকই আছে। আমরা ঠিকঠাক পথেই এগোচ্ছি। আপনাকে বলতে পারি, আমরা আত্মবিশ্বাসী। আপনি বলছিলেন, ডুরান্ড কাপ আমরা হেরে গিয়েছি। গোকুলমের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচের দু’দিন আগে আমি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এ কথা অনেকেই জানেন না। আমার পক্ষে পুরো ম্যাচ খেলা সম্ভব ছিল না। পরিবর্ত হিসেবে আমাকে নামান কোচ। আমি চেষ্টা করেছি। খেলায় হার-জিত রয়েছে। একদিন আপনি জিতবেন। একদিন হারবেন। সে দিন আমাদের ভাগ্য খারাপ ছিল। তাই ম্যাচটা জিততে পারিনি।
ডুরান্ড কাপ ফাইনাল এখন অতীত। রবিবার আরও একটা বড় ম্যাচ। এই ম্যাচটার কথা গোটা বিশ্ব জানে। আপনিও নিশ্চয় শুনেছেন?
ফ্রান: এই ধরনের বড় ম্যাচই তো একজন ফুটবলারকে পরিচিতি দেয়। এই মরশুমে আমাদের দলটা বেশ ভাল। আমার বিশ্বাস, রবিবারের ম্যাচে আমরা ভালই খেলব। আমি দলের সবাইকে বলছি, ম্যাচটা উপভোগ করো। অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ, তরুণ ফুটবলারদের বারবার বলছি, চাপ নেবে না। মুহূর্তটা উপভোগ কর। সমর্থকদের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়। ওদের আবেগটা অনুভব করতে পারি। এই ডার্বিটা নিয়ে দারুণ উত্তেজিত সমর্থকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই আমাকে মেসেজ করছে। আমি ভক্তদের বলেছি, নিজেকে উজাড় করে দেব। বুধবারের ম্যাচে হাঁটুতে আমার হাল্কা চোট লেগেছিল। কিন্তু, আমি প্রস্তুত। রবিবারের ম্যাচটা ডার্বি। আমি এই ধরনের ম্যাচই খেলতে চাই। ৯০ মিনিটের শেষে আমার পা যদি সে দিন কেটেও ফেলতে হয়, তা হলেও আমি মাঠে নামব।
আরও পড়ুন: আমি নেই তো কী হয়েছে, ডার্বি জিতবে ইস্টবেঙ্গলই, বলছেন জবি
শিশু পুত্রের সঙ্গে ফ্রান গনজালেজ। ফ্রান বলেন, ‘‘আমার লিটল মেরিনার।’’ ছবি: ফ্রানের ফেসবুক পেজ থেকে
গতবার ৫০ নম্বর জার্সি পরে খেলতেন সনি নর্দে। এ বার আপনি পরেছেন একই জার্সি। সনি দলটাকে আগলে রাখত। এ বার সনির জায়গাটা আপনি নিচ্ছেন।
ফ্রান: আমি অন্যান্য ক্লাবে পাঁচ নম্বর জার্সি পরে খেলতাম। এখানে দেরি করে আসায় আমাকে ৫০ নম্বর জার্সি দেওয়া হয়েছে। বলতে পারেন, আমি এখন আগের থেকেও দশ গুণ শক্তিশালী। আমি জানি, গতবার সনি ৫০ নম্বর জার্সি পরে খেলত। গোটা দলটার অভিভাবক ছিল সনিই। বলতে পারেন আমিও সেই ভূমিকাই পালন করছি। আমি চাই, সবাই আমাকে চিনুন। শুধু ফুটবলার হিসেবে নয়, এক জন মানুষ হিসেবেও আমাকে জানাটা দরকার।
মাঝমাঠের জেনারেল গলজালেজ। — ফাইল চিত্র।
গত দু’বারের ডার্বিতে কিন্তু মোহনবাগানকে হার মানতে হয়েছিল। এ বার জিতলে তো ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেন্দেজ ডার্বি জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলবেন।
ফ্রান: আপনি একটা কথা ভুলে যাচ্ছেন। গত দু’বারের ডার্বিতে আমি কিন্তু ছিলাম না। দেখা যাক।, রবিবার কী হয়। মাঠের ভিতরে আমরা মরিয়া লড়াই করব। আমরা দেশের সেরা ক্লাবের হয়ে খেলতে এসেছি। মোহনবাগান সমর্থকরা আমাদের থেকেও বড়। ক্লাবের সম্মান, ভক্তদের আবেগ আমাদের কাছে মহামূল্যবান। খেলার সময় এই কথাটাই সতীর্থদের মনে করতে বলব। গ্যালারিতে উপস্থিত মোহনবাগান সমর্থকরা যাতে খেলার শেষে আমাদের নিয়ে গর্ব করতে পারেন, আনন্দ করতে পারেন, সে রকম খেলাই উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব।
রবিবার তো মাঠে আপনার বন্ধুদের বিরুদ্ধেই নামছেন। বোরহা গোমেজ, হাইমে স্যান্টোস কোলাডো, মার্কোস এসপারা— সবাই তো স্পেনের। চেনেন নিশ্চয়।
ফ্রান: বোরহাকে আমি রিয়াল মাদ্রিদের অ্যাকাডেমির সময় থেকেই চিনি। ও আমার থেকে এক বছরের বড়। মাঠের বাইরে ওরা আমার বন্ধু। কিন্তু, রবিবার ওরা কেউ বন্ধু নয়।
দলের হৃৎপিণ্ড ফ্রান। — ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল দলটাকে কেমন লাগছে?
ফ্রান: ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে আমি কোনও কথা বলতে চাই না। প্রতিপক্ষ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলকে আমি শ্রদ্ধা করি। তবে এই মুহূর্তে আমি নিজের দল নিয়েই ভাবছি।
হাইমে স্যান্টোস কোলাডো কিন্তু দারুণ ছন্দে রয়েছেন।
ফ্রান: জানি। ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে নিজেকে মেলে ধরাই একজনের ফুটবলারের কাছে আসল পরীক্ষা। দেখা যাক, এ রকম মুহূর্তে কে ভাল পারফর্ম করে।
বুধবার তো আপনি পেনাল্টি নষ্ট করলেন। ডার্বিতে যদি পেনাল্টি পায় মোহনবাগান, তা হলে শটটা মারতে এগিয়ে যাবেন?
ফ্রান: আপনি নিশ্চয় আমার পেনাল্টি শটটা দেখেছেন। আমার শট মারায় কোনও সমস্যা ছিল না। ঠিক ঠাক জায়গাতেই বলটা মেরেছিলাম। কিন্তু, বলটা জালে জড়ায়নি। আমার তাতে কোনও দোষ ছিল না। রবিবার যদি ফের পেনাল্টি পাই, তা হলে আমিই শটটা মারার জন্য এগিয়ে যাব। আর বলটা জালেই জড়াব। আমি এতটাই আত্মবিশ্বাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy