Advertisement
E-Paper

তিন দিনের ব্যবধানে দুই ফুটবল ক্লাবের খেতাব এক ক্রিকেটারকে, সৌরভকে নিয়ে কেন দড়ি টানাটানি?

ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে জানিয়েছে, তারা সৌরভকে তাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেবে। এর পরেই দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে।

Sourav Ganguly

সৌরভকে সম্মান জানানো নিয়ে লড়াই লেগে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ১৫:০৩
Share
Save

আচমকা দড়ি টানাটানি ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে। তা-ও আবার কলকাতার দুই বড় ফুটবল ক্লাবের মধ্যে। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান বৃহস্পতিবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে জানিয়েছে, তারা এ বার সৌরভকেই ক্লাবের তরফে সর্বোচ্চ সম্মানটি দেবে। এর পরেই সমাজমাধ্যমে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই লেগে গিয়েছে। যার নির্যাস— কারা আগে সৌরভকে সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কারা কাকে ‘নকল’ করছে এবং সর্বোপরি সৌরভ আসলে কাদের? বাঙালের? না ঘটির? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন— সৌরভকে নিয়েই এই দড়ি টানাটানি কেন?

আসলে এই মুহূর্তে বাঙালির সামনে ‘বিগ্রহ’ বলতে চার জন। দুই নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন ও অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরভ। প্রথম দু’জন বিদেশে থাকেন। বঙ্গবাসীর কাছে তাঁরা দূরগ্রহেরই মানুষ। আর মমতা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সৌরভই একমাত্র, যিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। দ্বিতীয়ত, খেলাধুলোর মতো সর্বজনস্বীকৃত একটি মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত। তৃতীয়ত, যাঁর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিতি রয়েছে। দেশে-বিদেশে তিনি বাংলার ‘মুখ’। খেলা ছেড়ে দেওয়ার ১৬ বছর পরেও তাঁর জনপ্রিয়তায় ঘাটতি পড়েনি। তার একটা বড় কারণ অবশ্য তাঁর টেলিভিশনে কুইজ় শো ‘দাদাগিরি’। বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছেও তাঁর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বিজ্ঞাপনদাতাদের এটা জানাতে দ্বিধা নেই যে, ‘বাজেট’ অনুমতি দিলে তাঁরা তাঁদের পণ্যের ‘বিপণন’ করতে সকলের আগে সৌরভের কথাই ভাবেন। রাজ্যের অন্য কাউকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করলে বিশেষ লাভ হয় না।

সন্দেহ নেই, ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানও নিজেদের ক্লাবকে সমর্থকদের কাছে ‘বিপণন’ করার জন্যই সৌরভের সামনে সম্মানের ঝুলি নিয়ে হাজির হয়েছে। এবং সেই সুবাদে নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে।

মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তের বক্তব্য, “সৌরভকে নিয়ে এটা হবে না তো কাকে নিয়ে হবে? এটাই তো স্বাভাবিক। মোহনবাগান এটা নিয়ে ভাবছেই না।” তবে সৌরভের বাইরে গিয়ে তিনি আরও বড় একটি প্রেক্ষিত দেখছেন। তাঁর কথায়, “যে কোনও বিষয়েই এই দুই ক্লাবের সমর্থকদের মধ্যে বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এটা শুধু স্বাভাবিকই নয়, এটা দরকার। নইলে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল রেষারেষিটাই তো থাকবে না! লড়াইয়ের সংস্কৃতিটাই মুছে যাবে।”

এটা ঠিকই যে, দুই ক্লাবের সদস্য-সমর্থকদের উন্মাদনা এবং উত্তেজনা যুবভারতীর ডার্বি ম্যাচে সীমাবদ্ধ থাকে না। বছরখানেক আগে শিলিগুড়িতে রাস্তার নামকরণ নিয়েও দুই প্রধানের সমর্থকেরা বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন। রাস্তার নামে আগে কোন রং লেগেছে, সবুজ-মেরুন না লাল-হলুদ, তা নিয়ে প্রচুর তর্ক হয়েছিল। দেবাশিসের মতে, সেই ‘সংস্কৃতি’রই নবতম নিদর্শন সৌরভকে সম্মান জানানো নিয়ে মোহন-ইস্ট দড়ি টানাটানি।

ইস্টবেঙ্গল-কর্তা দেবব্রত (নীতু) সরকারের ব্যাখ্যা অবশ্য ভিন্ন। তিনি সরাসরি এই লড়াইকে উস্কে দিয়ে দাবি করছেন, “আমরাই আগে সৌরভকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৩ জুন সৌরভ আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিলেন। আমরা সেই হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাটের কথোপকথন বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে এনেছি। শুধু তাই নয়, আমরা গত বছরেই সৌরভকে ‘ভারত গৌরব’ সম্মান দিতে চেয়েছিলাম। তখন উনি ছিলেন না বলে এই বছর দিচ্ছি। ফলে আমরা এক বছর আগেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” বস্তুত, দেবব্রত এই দড়ি টানাটানির জন্য সৌরভকেই দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা যে ওঁকে ইতিমধ্যেই সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা মোহনবাগানকে জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল সৌরভের। না হলে মোহনবাগান কী করে জানবে যে, আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি?” একই বছরে একই ব্যক্তি ‘মোহনবাগান রত্ন’ এবং ‘ভারত গৌরব’ পাচ্ছেন, এতে একেবারেই খুশি নন ইস্টবেঙ্গল-কর্তা। তাঁর বক্তব্য, “মোহনবাগান পরের বছর সৌরভকে সম্মান জানাতে পারত। একই বছরে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে একই ব্যক্তি সম মানের দু’টি সম্মান পাচ্ছেন! এতে গোটা বিষয়টা লঘু হয়ে যায়।”

লড়াইয়ের আগুনে ঘি ঢেলেছেন দেবব্রত। তিনি কি আখেরে মান্যতা দিলেন দেবাশিসের বলা দুই ফুটবল ক্লাবের লড়াইয়ের ‘সংস্কৃতি’কেই? ঘটনাচক্রে, যে লড়াইয়ে নবতম সংযোজন এক ক্রিকেটার!

Sourav Ganguly East Bengal Mohun Bagan

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।