সুমতি কুমারী। —নিজস্ব চিত্র।
মেয়েদের এশিয়া কাপ ফুটবলে বৃহস্পতিবার প্রথম ম্যাচে ইরানের বিরুদ্ধে ড্র করেছে ভারত। কোভিড পরিস্থিতিতে দর্শক ছিল না মাঠে। থাকলে ১৮ বছরের এক কিশোরীর লড়াই সামনে থেকে দেখতে পেতেন তাঁরা।
ইরানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভাল খেলেছে ভারতীয় দলের প্রত্যেকেই। অসংখ্য গোলের সুযোগ নষ্ট করে শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। তবু আশালতা, সন্ধ্যা রঙ্গনাথন, মণীষা কল্যাণদের ভিড়ে আলাদা করে নজরে পড়েছে সুমতি কুমারীকে।
সুমতি ভারতের মহিলা ফুটবল দলের কনিষ্ঠতম সদস্য। ঝাড়খণ্ডের মেয়ে। এর আগে অনূর্ধ্ব-১৭-র জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও জাতীয় মহিলা ফুটবল দলে এই প্রথম। আর প্রথম সুযোগেই এশিয়া কাপ খেলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে সে।
সাধারণ চোখে এই সুযোগ ঈর্ষণীয় মনে হতে পারে। তবে সুমতির কাছে ঝাড়খণ্ড থেকে মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের সফর সহজ ছিল না। এর জন্য তাকে টানা দু’বছর পরিশ্রম করতে হয়েছে। তবে এই দু’বছর তাকে সবরকম সাহায্য করে গিয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকার।
সুমতির বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গুমলায়। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারে বড় হয়েছে সে। পায়ে ফুটবলের দক্ষতা থাকলেও খাবার ছিল না পেটে। খেলোয়াড়দের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া তো দূরের কথা। এ হেন সুমতিকে এখন দেশের অন্যতম প্রতিভাময়ী মহিলা ফুটবল খেলেয়াড় বলে রায় দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু পেটে খিদে নিয়ে প্রতিভার বিকাশ হত না। সুমতির সম্ভাবনা দেখে তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঝাড়খণ্ড সরকার।
২০২০ সালের মে মাসে সুমতিকে তার বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় মোরাবাদিতে। সেখান জেলার রেসিডেন্সিয়াল স্পোর্টস প্রেমিসেসে রেখে শুরু হয় তার প্রশিক্ষণ। সুমতির খাওয়া দাওয়া, থাকার যাবতীয় ভার নিয়েছিল প্রশাসন। সুমতি সেই সাহায্যের মান রেখেছে।
নভি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে ভারতের মূল ফুটবল দলের সদস্য হয়ে এশিয়া কাপে খেলার জন্য অনূর্ধ্ব ১৭ দলের অনেকেই চেষ্টা করেছিল। তবে সুযোগ পেয়েছে সুমতি।
ঝাড়খণ্ড সরকার শুধু সুমতির পাশে দাঁড়িয়েছে, তা নয়। সুমতির মতো অনূর্ধ্ব ১৭ দলের আরও সাত জন খেলোয়াড় এখনও প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এমনকি এশিয়া কাপের ভারতীয় দলকে জামশেদপুরে আগাম প্রশিক্ষণের সমস্ত ব্যবস্থাও করে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy