মরিয়া: দলের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর চেষ্টায় অস্থায়ী কোচ রেনেডি।
বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ২৮ মিনিটে এগিয়ে গিয়েও ১-১ ড্র করেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে নবম ম্যাচের পরেও জয় সেই অধরাই। কিন্তু আদিল খান, হীরা মণ্ডলদের দুরন্ত লড়াইয়ে নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই দেখা গিয়েছে বদলে যাওয়া লাল-হলুদকে। নেপথ্যে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ রেনেডি সিংহের অবদান।
ম্যানুয়েল দিয়াসের বিদায়ের পরে রেনেডির প্রধান লক্ষ্যই ছিল দলের দমবন্ধকর পরিবেশ দূর করা। পূর্বসুরির আমলে অধিকাংশ ফুটবলারই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করা। সেই সঙ্গে রক্ষণের ভুলত্রুটি মেরামত করা। কোচ নয়, আদিল খান, হীরা মণ্ডলদের ‘বন্ধু’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বুধবার দুপুরে গোয়া থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে রেনেডি বললেন, ‘‘এই দলের অনেক ফুটবলারই রয়েছে, যাদের সঙ্গে আমার খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তা ছাড়া সকলকেই খুব ভাল করে চিনি। তাই সমস্যা হয়নি কাজ করতে।’’
অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে মাত্র ছয় দিনের মধ্যেই কী ভাবে পুরো দলটাকে বদলে দিলেন? রেনেডির কথায়, ‘‘দায়িত্ব পাওয়ার পরে প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিই, রক্ষণই দলের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা। এই কারণেই আগের আটটি ম্যাচে ১৮টি গোল খেতে হয়েছে। ঠিক করি, এই সমস্যাই আগে দূর করতে হবে। রক্ষণ যদি শক্তিশালী হয়, তা হলেই আক্রমণ করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, দলের মধ্যে পরিকাঠামোগত সমস্যা ছিল। রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণ ভাগের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল। দলগত ফুটবল খেলতে পারছিলাম না।’’
কী রকম? জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়কের ব্যাখ্যা, ‘‘মাঝমাঠে আমরা বিপক্ষ দলকে প্রচুর খেলার জায়গা দিয়ে নিজেরাই বিপদ ডেকে আনছিলাম। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ম্যাচে কিন্তু সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি অনেক কম করেছে ছেলেরা। সবচেয়ে ইতিবাচক হচ্ছে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বল ধরেছে এবং পাস দিয়েছে ওরা। যা হারিয়ে গিয়েছিল। এ বার আমার লক্ষ্য আক্রমণ ভাগের ভুলত্রুটি দূর করা।’’
রেনেডি উচ্ছ্বসিত আদিল ও থংখোসিয়েম হাওকিপকে নিয়েও। ম্যানুয়েলের কোচিংয়ে ‘ব্রাত্য’ এই ডিফেন্ডার অসাধারণ খেলেছেন বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন। রেনেডি বলছিলেন, ‘‘আদিলকে নিয়ে একটু চিন্তায় ছিলাম। ওর একটা চোট রয়েছে। ফলে সম্পূর্ণ ফিট ছিল না। তা সত্ত্বেও অবিশ্বাস্য খেলেছে। সব ম্যাচেই এ ভাবে খেলতে হবে আদিলকে। ধারাবাহিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ যোগ করলেন, ‘‘হাওকিপ দুর্দান্ত খেলেছে। প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছে দলের জন্য। দ্বিতীয় গোলটাও পেয়ে যেত, যদি শট না মেরে হেড করার চেষ্টা করত।’’
বেঙ্গালুরুকে হারাতে না পেরে মন খারাপ হলেও হতাশ হন রেনেডি। বলছিলেন, ‘‘আইএসএলের কোনও দলকে কখনও দেখেছেন, মাত্র এক জন বিদেশি নিয়ে খেলছে? টমিস্লাভ মর্সেলা উঠে যাওয়ার পরে একা ড্যানিয়েল চিমা ছিল। তা সত্ত্বেও ছেলেরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। এটাই আমার প্রাপ্তি।’’ একই ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মাত্র ৩৫ শতাংশ বল হাওকিপরা নিজেদের দখলে রাখা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করায়। লাল-হলুদের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খোলাখুলি বললেন, ‘‘আমি একেবারেই চিন্তিত নই। বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও আমরাই কিন্তু বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’ প্রাক্তন সতীর্থ ও জাতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর ছন্দে না থাকা নিয়ে কি উদ্বিগ্ন? রেনেডি বলে দিলেন, ‘‘সুনীলের নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই। আরও শক্তিশালী হয়ে ও ফিরবে।’’
এসসি ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে আগামী শুক্রবার। এ দিন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়ে রেনেডি বলছিলেন, ‘‘মুম্বই এই প্রতিযোগিতার অন্যতম সেরা দল। আমাদের ক্ষমতা সীমিত। আইএসএলের আগে মাত্র কয়েক দিন সময় পাওয়া গিয়েছিল ফুটবলার সই করানোর জন্য। তা সত্ত্বেও ছেলেদের উপরে আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত ওরা লড়াই করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy