বিশ্বকাপে দর্শক আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ছবি: ফিফা
যৌন পর্যটনে? ব্যাঙ্কক। শিক্ষা পর্যটনে? কানাডা-অস্ট্রেলিয়া। চিকিৎসা পর্যটনে? সিঙ্গাপুর। তেমনই কি এ বার ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে কাতার? আগামী বছর ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে কাতারে ফুলেফেঁপে উঠতে চলেছে পর্যটন শিল্প। ভারতের হাত ধরেই সে স্বপ্ন দেখছে কাতার। ঠিক যেমন ভারত তথা পূর্ব ভারতে বাংলাদেশের মানুষ আসেন চিকিৎসা পর্যটনের জন্য। বাইপাসের লাগোয়া অধিকাংশ হাসপাতালে বাংলাদেশের রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে বছরভর।
২০২১-’২২ সাল কি পৃথিবীতে ফুটবল পর্যটনের জন্মের সাক্ষী থাকতে চলেছে? কাতার বিশ্বকাপের দর্শক সমাগম ঘিরে সেই জল্পনাই এখন শুরু হয়েছে। সুইৎজারল্যান্ডের পর্যটন বোর্ড বিশ্ব টেনিসের অবিসংবাদী তারকা রজার ফেডেরারকে দিয়ে তাদের প্রচার করায়। কাতার বিশ্বকাপ শুরু আগে জল্পনা শুরু হয়েছে, এ বার কি তা হলে তাজমহলের বদলে ফুটবল পর্যটনের প্রচারে ব্যবহার করা হবে লিওনেল মেসি বা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে? যাঁরা ভারতীয়দের কাছে দেবতুল্য।
তথ্য বলছে, চার বছর আগে রাশিয়ায় ফুটবল বিশ্বকাপ দেখার জন্য শুধু ভারতীয়রাই ১৯,৩৫২টি টিকিট কেটেছিলেন। কাতার বিশ্বকাপ সেই সংখ্যাও ছাপিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, ভাল খেলা দেখার জন্য এখন অনেক বেশি পরিমাণে ভারতীয় পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। আর কাতার তো প্রায় ঘরের কাছের দেশ! বিশ্বকাপে অংশ না নিলেও সেই দেশের দর্শক বিশ্বকাপ দেখতে এসেছেন— এমন তালিকায় রাশিয়ায় প্রথম পাঁচের মধ্যে ছিল ভারত। তালিকার শীর্ষে ছিল চিন। কাতার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের শুরুতেই ছিটকে গিয়েছে ভারত। তাদের গ্রুপ থেকে কাতার এবং ওমান প্রথম দু’টি স্থান অর্জন করেছে। তবে তাতে ভারতীয় দর্শকদের উৎসাহে ভাটা পড়বে না বলেই মনে করছে ভ্রমণ সংস্থাগুলি।
বিশ্বকাপের আয়োজক নাসের আল খাতের একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়ার জন্য ভারতীয়দের সংখ্যা আরও বাড়বে। তাঁদের পক্ষে এ বার বিশ্বকাপ দেখা অনেক সহজ হবে। ২০১০, ২০১৪ এবং ২০১৮— পর পর প্রতিটি বিশ্বকাপে ভারতীয় দর্শকের সংখ্যা বেড়েছে। কাতারেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে হচ্ছে।”
কাতার নিয়ে ভারতের এত উৎসাহের কারণ অবশ্য শুধু বিশ্বকাপ নয়। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা সস্তায় ভ্রমণের নানা প্যাকেজ দিচ্ছে। তাই ভারত বিশ্বকাপে না খেললেও এক ঢিলে দুই পাখি মারতে ভারতীয়রা কাতার যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। পর্যটন সংস্থাগুলি ভিসা, বিমানের টিকিট, ভিনদেশে থাকার ব্যবস্থা— সবই করে দিচ্ছে। যেমন তারা করে থাকে বিভিন্ন পর্যটন-নির্ভর দেশের ক্ষেত্রে।
দোহায় অন্তত ১০ লক্ষ দর্শক বিশ্বকাপ দেখতে যাবেন বলে আশা করছেন আয়োজকরা। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছেন তাঁরা। নাসের বলেন, “পর্যটক এবং দর্শকদের থাকার জন্য ঢালাও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের থাকার জায়গা পাওয়া যাবে। আসল লক্ষ্য সফল ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করা। সে জন্য দর্শকদের কথা ভাবতেই হবে।”
কাতারে মাঠগুলি পরস্পরের কাছাকাছি হওয়ায় খুব বেশি বিমানযাত্রার ব্যাপারও নেই। ফলে এক শহর থেকে অন্য শহরে ম্যাচ দেখতে যাওয়ার জন্য বিমানভ্রমণের প্রশ্ন থাকছে না। পাশাপাশিই, গ্রুপ পর্বে একই দিনে একাধিক ম্যাচ দেখার সুযোগও পাবেন দর্শকরা। থাকার জায়গায় বিপুল চাহিদা রয়েছে। জায়গা না পাওয়ার আশঙ্কায় অনেকে পাশের দেশগুলিতেও থাকার চেষ্টা করছেন।
বিশ্বকাপ ফুটবল এবং ফুটবলাররা কি অতঃপর সবুজ মাঠের গণ্ডি পেরিয়ে ফুটবল পর্যটনের ব্র্যান্ডদূতে উন্নীত হতে চলেছেন? কাতারে কাতারে ফুটবল পর্যটক টেনে জবাব দিতে পারে কাতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy