মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কার (মাঝে) সঙ্গে কোচ হোসে মোলিনা (বাঁ দিকে) এবং জেমি ম্যাকলারেন। ছবি: পিটিআই।
দু’দিন আগেই শহরে পা রেখেছেন তিনি। ক্লাবের মাঠে প্রথম অনুশীলনও হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার মোমিনপুরের আরপিএসজি হাউসে প্রথম বার প্রকাশ্যে এলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের নতুন কোচ হোসে মোলিনা। সঙ্গে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইকার জেমি ম্যাকলারেন। আবির্ভাবেই মোলিনা জানিয়ে দিলেন, সব ট্রফি জেতার লক্ষ্য নিয়েই এসেছেন তিনি। ম্যাকলারেনের দাবি, প্রথম কলকাতা ডার্বিতেই গোল করতে চান।
গত বছর মোহনবাগানকে ট্রফি জিতিয়েছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। আইএসএলে খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে মাঝপথেই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়। টিম ডিরেক্টর আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস কোচ হয়ে লিগ-শিল্ড জেতালেও তাঁকে ছাঁটাই করা হয়। নতুন কোচ মোলিনা সাফল্য পাবেন কি না তা সময়ই বলবে। তবে কোচ এবং দলের সেরা ফুটবলারকে প্রকাশ্যে আনার সময়ে কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কা ছিলেন বেশ খোশমেজাজেই। ম্যাকলারেনের হাতে ২৯ নম্বর জার্সি তুলে দেওয়া হয়।
পরে মোলিনা বলেন, “আমরা সব ট্রফির জন্য লড়াই করব। আমাদের দলে ভাল খেলোয়াড় এসেছে। জেমির মতো ফুটবলার রয়েছে। আমরা কঠোর পরিশ্রম করতে তৈরি। গত বার যা পরিশ্রম করেছিলাম তার থেকেও বেশি পরিশ্রম করব।” তাঁর সংযোজন, “ডুরান্ড কাপ, আইএসএল, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ— যা-ই খেলি না কেন, সবেতেই নিজেদের সেরাটা দিয়ে সব ম্যাচে জিততে চাই। আমাদের কাছে সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ।”
কলকাতায় দ্বিতীয় বার কোচিং করাতে এসে মোলিনার বক্তব্য, “আগে এটিকে-র হয়ে কোচিং করিয়েছি। এ বার নতুন ক্লাবে এসেছি। মোহনবাগান ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব। এই ক্লাবের সমর্থকেরাও আবেগপ্রবণ। আমি ওদের ব্যাপারে জানি। ওরা সব সময়ে জয় এবং ট্রফি চান। আমরাও সেটাই চাই। সব ম্যাচে জিততে চাই। সবাইকে খুশি করতে চাই।”
মোহনবাগানে চার জন স্ট্রাইকার রয়েছেন। সঙ্গে কিছু ভারতীয় স্ট্রাইকারও। তাই মোলিনা জানিয়েছেন, আগামী মরসুমে আগ্রাসনই তাঁর অস্ত্র হতে চলেছে। বলেছেন, “কয়েক বছর আগেই এখানে কোচিং করিয়ে গিয়েছি। তাই সবাই আমার দর্শন সম্পর্কে জানেন। ভাল খেলোয়াড় হাতে থাকলে আমরা সব সময়ে আগ্রাসী খেলতে চাই। মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিতে হবে। পায়ে বল না থাকলেও আক্রমণাত্মক হতে হবে। শাসন করতে হবে। যে কোনও ক্লাবেই যাই, চাপ থাকবেই। আমি সে সব নিয়ে ভাবছি না। গোটা জীবনটাই চাপের মধ্যে কাটিয়েছি।”
এ দিকে, অসি স্ট্রাইকার ম্যাকলারেনের কাছে সৌদি আরব-সহ কিছু ক্লাবের প্রস্তাব থাকলেও বেছে নিয়েছেন মোহনবাগানকেই। তিনি বলেছেন, “এই দেশে আসার পর ২৪ ঘণ্টা কেটেছে। এর মধ্যেই অসাধারণ সময় কাটিয়েছি। দল খুব ভাল ভাবে আমাকে স্বাগত জানিয়েছে। জানি এখানে কী করতে হবে। একটা সফল ক্লাবে এসেছি, যারা অতীতে বহু ট্রফি জিতেছে। আশা করি নতুন ক্লাবের হয়েও প্রচুর সাফল্য পাব। সবে কাজ শুরু করেছি। প্রথম ম্যাচ খেলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। মাঠে নামার জন্য তর সইছে না।”
ম্যাকলারেনের সংযোজন, “আমি ট্রফি জিততেই এসেছি। এই ক্লাবের সেই ক্ষমতাও রয়েছে। এখানকার মানুষ এবং খাবার ভালবেসে ফেলেছি। আগে দু’বছর ব্রিসবেনে দিমিত্রি পেত্রাতোসের সঙ্গে খেলেছি। জেসন কামিংসের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলেছি। টম অলড্রেডের বিরুদ্ধে খেলেছি। আরও অনেকের খেলা দেখেছি। কোচের দর্শনও জানি। উনি আক্রমণাত্মক ফুটবল ভালবাসেন। পাঁচ বছর আগের থেকে আমি এখন আরও বেশি ক্ষুধার্ত। সমর্থকেরা আশ্বস্ত থাকতে পারেন।”
সেই সঙ্গে জানিয়ে গেলেন কলকাতা ডার্বি নিয়ে তাঁর উত্তেজনার কথাও। বলেছেন, “অতীতে বেশ কিছু দেশে ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখানকার ডার্বি খুব জনপ্রিয় বলেই জানি। ৬০ হাজার দর্শক মাঠে আসেন খেলা দেখতে। তাই কলকাতা ডার্বিতে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। সমর্থকেরা এই ম্যাচ নিয়ে আবেগপ্রবণ। ট্যাক্সি করে বিমানবন্দর থেকে হোটেলে আসার সময় সমর্থকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১৮ তারিখ ডার্বি রয়েছে। বিশ্বাস করুন, এই ডার্বিতে খেলার জন্য মুখিয়ে। গোল করতে মুখিয়ে।”
এ দিকে, বিতর্কিত আনোয়ার আলি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন গোয়েন্কা। বলেছেন, “আনোয়ারকে আমি পছন্দ করি। খুব মিষ্টি ছেলে। কিন্তু প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটিতে (পিএসসি) আনোয়ারকে নিয়ে আমাদের অবস্থান কী হবে, সেটা জনসমক্ষে বলতে চাই না। এই সিদ্ধান্ত পিএসসি-ই নেবে। আমরা কারওর কোনও দাবিতে প্রতিক্রিয়া দিই না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy