এ বারের আইএসএলে এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে মোহনবাগানের। তবে বাকি দু’টি ম্যাচ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে, যদি রবিবার ওড়িশাকে হারিয়ে দিতে পারে তারা। আইএসএলের ইতিহাসে প্রথম দল হিসাবে লিগ-শিল্ড ধরে রাখতে পারবে সবুজ-মেরুন। কাজটা যে কঠিন নয়, সেটা বুঝতে পারছেন প্রত্যেকেই। তাই ওড়িশা ম্যাচের আগের দিন মোহনবাগানের পরিবেশ বেশ ফুরফুরে। এ দিন চোখ বেঁধে অনুশীলনে দেখা গিয়েছে ফুটবলারদের।
কোচ হোসে মোলিনা বরাবরের মতোই সতর্ক। তিনি বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখাতে চান না কোনও দিনই। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকেও বার বার ওড়িশাকে সমীহ করলেন এবং ফুটবলারদের কৃতিত্ব দিলেন। তবে আগের মতো কপালে ভাঁজ এ দিন দেখা যায়নি। বরং ২০ মিনিটের সাংবাদিক বৈঠকে গোটাটাই মজার মেজাজে থাকলেন।
ওড়িশা ম্যাচের প্রসঙ্গ উঠতেই মোলিনার জবাব, “লিগ-শিল্ড জিততে নামব এটা ভাবছিই না। আমাদের কাছে এটা অন্য একটা ম্যাচের মতোই। সেটা জেতাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই খেলতে নামব। আমরা জানি কী করতে হবে। তিনটে বিভাগেই আমাদের সেরা খেলতে হবে। আমরা এখনও লিগ-শিল্ড জিতিনি। তাই আরাম করার কোনও জায়গা নেই। ম্যাচ জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।”
ওড়িশা এ দিন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আহমেদ জাহু একার সিদ্ধান্তে হঠাৎই ক্লাব ছেড়ে চলে গিয়েছেন। চুক্তিভঙ্গ করায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে জাহুকে ছাড়াই রবিবার খেলবে ওড়িশা। তবু মোলিনার মতে, “প্রতিপক্ষের ব্যাপারে সব সময় একটাই কথা বলি। ওরা শক্তিশালী। আমাদের লড়াই করতে হবে। ওড়িশার বিরুদ্ধে জেতা সহজ হবে না। আশা করি সব প্রতিকূলতা সামলে আমরা ভাল ম্যাচ উপহার দিতে পারব।”
এ দিন মোহনবাগানের অনুশীলনে ফুটবলারদের মধ্যে বেশ হাসিখুশির পরিবেশ। চোখ বেঁধে অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে জেসন কামিংস, জেমি ম্যাকলারেনরা। তাঁদের চোখ বেঁধে একটি বলের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। কাজ ছিল, ওই অবস্থাতেই সামনে রাখা একটি ছোট গোলপোস্টে বল ঢোকাতে হবে। অনেকে সফল হয়েছেন, অনেকে পারেননি। তবে এই বিশেষ কাজটি ফুটবলারদের বন্ধন আরও দৃঢ় করেছে।
নিঃসন্দেহে এর পিছনে কৃতিত্ব কোচ মোলিনার। দলটাকে একটা নিখুঁত ছন্দে বেঁধে দিয়েছেন। তবে নিজের মুখে কোনও কৃতিত্বই নিতে চাইলেন না। মোহনবাগানের ধারাবাহিকতার প্রসঙ্গে বললেন, “সাফল্যের কোনও রহস্য নেই। কঠিন পরিশ্রম ছাড়া আর কিছু নেই। শুরু থেকেই আমরা সবাই কঠোর পরিশ্রম করছি। একটা দল হিসাবে খেলছি। দলের তরফেও প্রতি মুহূর্তে সহযোগিতা পাচ্ছি। তা ছাড়া খেলোয়াড়দের মানও অনেক ভাল। তবে পরিশ্রম না করলে ভাল মানের খেলোয়াড় নিয়েও কিছু হবে না।”
আরও পড়ুন:
মরসুমের শুরুতে অন্য এক জনের থেকে দায়িত্ব নিয়েও মরসুমের শেষে সবার উপরে। সব কোচ সেটা পারেন না। মোলিনা পেরেছেন। তবে নিজে নিজের পারফরম্যান্স বিচার করতে রাজি নন। বলেছেন, “কোচ হিসাবে আমি নিজের সেরাটা দিই প্রতি ম্যাচে। তবে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। মোহনবাগান যাতে প্রত্যেক ম্যাচের আগে সেরা ফর্মে থাকে সেটারই চেষ্টা করি। যত বেশি সম্ভব ম্যাচ জেতানোর চেষ্টা করেছি। সংবাদমাধ্যম, সমর্থক, দল পরিচালন সমিতি আমার পারফরম্যান্সের পর্যালোচনা করবে।”