ত্রাতা: মোহনবাগানকে খেতাবের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বিশাল। —ফাইল চিত্র।
কোনও ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সমর্থকরা। ব্যতিক্রম মোহনবাগান জনতা। বিশাল কাইথ আছেন যে! ম্যাচ থাকলেই গ্যালারি থেকে সবুজ-মেরুনের সমর্থকরা বিশালের ছবি দেওয়া যে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন তাতে লেখা থাকে, ‘আওয়ার ফ্লাইং কাইট’। অর্থাৎ, আমাদের উড়ন্ত ঘুড়ি!
ঘুড়ির মতোই তো উড়ে গিয়ে গোল বাঁচাচ্ছেন বিশাল। ২০২২-’২৩ মরসুমে আইএসএল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্ব। যুবভারতীতে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদ এফসি। অতিরিক্ত সময়েও ম্যাচের ফল গোলশূন্য ছিল। টাইব্রেকারে হাভিয়ের সিভেরিয়োর শট পাখির মতো উড়ে গিয়ে বিশাল শুধু বাঁচাননি, চিড় ধরিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাসে। গোয়ার মারগাওয়ে ফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধেও ম্যাচ গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। নায়ক? আবার কে? সেই বিশাল। অনবদ্য দক্ষতায় ব্রুনো সিলভার শট বাঁচিয়ে নিশ্চিত করেছিলেন মোহনবাগানের ট্রফি জয়। ডুরান্ড কাপের শেষ আটে পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে বিশালের দাপটেই জিতেছিল মোহনবাগান। চব্বিশ ঘণ্টা আগে যুবভারতীতে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে ফের দুর্ভেদ্য হয়ে উঠছিলেন তিনি। টাইব্রেকারে প্রথমে আটকালেন হোলিচরণ নার্জ়ারির শট। তার পরে এক হাতে বাঁচালেন আলেকজ়ান্ডার জোভানোভিচের শট।
টাইব্রেকারে অবিশ্বাস্য সাফল্যের রহস্য কী? বিশাল বলছেন, ‘‘শুধুমাত্র অনুশীলন। আলাদা করে পেনাল্টি বাঁচানোর মহড়া দিই। তা ছাড়া কোচ আমাকে দারুণ ভাবে সাহায্য করেছেন। বলে দিয়েছিলেন, প্রতিপক্ষের কোন ফুটবলার টাইব্রেকারে বল কী ভাবে মারবে।’’ আরও বলেছেন, ‘‘আমি শুধু নিজের কাজটা করেছি। লক্ষ্য ছিল, টাইব্রেকারে একটা বা দু’টো শট আটকে দেওয়ার। সেটাই করেছি।’’
বিশালের সাফল্যের নেপথ্যে আরও এক জন রয়েছেন। তিনি, জীবনযুদ্ধে জয়ী কোচ হোসে মলিনা। স্পেন জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষকের ফুটবলজীবনে অকালেই শেষ হতে বসেছিল। মলিনা তখন দেপোর্তিভো লা করুনায় খেলতেন। ২০০২ সালে তাঁর শরীরে বাসা বাঁধে ক্যানসার। মলিনা হাল ছাড়েননি। সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরে আসেন। ২০০৬-’০৭ মরসুমে ফুটবলকে বিদায় জানান তিনি। ২০১৬ সালে মলিনার কোচিংয়েই আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হয় এটিকে। এই মরসুমে আবার তিনি কলকাতায় ফিরেছেন মোহনবাগানের কোচ হিসেবে। তাঁর পরামর্শেই যে আরও ধারালো হয়ে উঠেছেন, গোপন করেননি বিশাল।
অনবদ্য খেলা সত্ত্বেও আন্তঃমহাদেশীয় কাপে ভারতীয় দলে ডাক পাননি বিশাল! বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে জিতিয়েই কি উপেক্ষার জবাব দিলেন? সবুজ-মেরুনের শেষ প্রহরী বলছেন, ‘‘আমাকে ডাকা হবে কি না, জাতীয় দলের কোচের উপরেই নির্ভর করছে। প্রতি ম্যাচেই নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নামি। অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে চাই না।’’
বিশালকে নিয়ে উন্মাদনার মধ্যেই সবুজ-মেরুন শিবিরে উদ্বেগ বাড়ছে শুভাশিস বসুকে নিয়ে। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ম্যাচে হাঁটুতে চোট পেয়ে ২৭ মিনিটে উঠে গিয়েছিলেন মোহনবাগান অধিনায়ক। শনিবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে কি খেলতে পারবেন তিনি? শুভাশিস জানালেন, তিনি আশাবাদী। তবে ডাক্তারি পরীক্ষার পরেই বোঝা যাবে চোট কতটা গুরুতর। আর এক তারকা জেমি ম্যাকলারেনের ফাইনালেও খেলার সম্ভাবনা নেই। তাঁর ঘাড়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy