মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো হাবাস। — ফাইল চিত্র।
আর কয়েক ঘণ্টা পরেই কলকাতা ডার্বি। তবে খেলা বা দুই দলের পারফরম্যান্স নয়, গত কয়েক দিনে শিরোনাম কেড়েছে টিকিটের দামে বৈষম্য এবং তা থেকে তৈরি হওয়া বিতর্কে। সেই সমস্যা শুক্রবার মেটায় নজর ঘুরেছে ম্যাচে। মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস স্পষ্ট জানিয়েছেন, ডার্বি নিয়ে আলাদা করে কোনও আবেগ তাঁর নেই। তাঁর লক্ষ্য তিন পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষস্থানে ওঠা। অধিনায়ক শুভাশিস বসুর মুখেও একই কথা।
চলতি মরসুমে চারটি ডার্বির দু’টিতে জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। একটিতে মোহনবাগান। একটি ড্র। আইএসএলের প্রথম পর্বের ডার্বি ২-২ ড্র হওয়ার পর দ্বিতীয় ডার্বিতে জিততে মরিয়া মোহনবাগান। আবেগের চেয়েও এই ম্যাচে জিতলে তারা লিগ-শিল্ড জেতার ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে।
সেই কারণেই গত কয়েক দিনের অনুশীলনে দলের অন্দরে হাবাস একটা কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আবেগে ভেসে গেলে চলবে না। প্রতিশোধ নেওয়ারও ব্যাপার নেই। তিনি চান দল তিন পয়েন্ট পেয়ে লিগ-শিল্ডের লড়াইয়ে নিজেদের উপরে তুলে আনুক। মোহনবাগানের অনুশীলনে এমনিতেও ফুরফুরে পরিবেশ থাকে। গত কয়েকটি ম্যাচের ভাল পারফরম্যান্স সেই মেজাজ আরও হালকা করে তুলেছে। প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলের তুলনায় তাই অনেকটাই এগিয়ে থেকে নামবে মোহনবাগান।
এ দিকে, ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ওয়েবসাইটে শুভাশিস বলেছেন, “এখন প্রতিটা পয়েন্টই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। লিগ-শিল্ডের দৌড়ে আমরা রয়েছি। তাই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আমরা তিন পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাব, যাতে শীর্ষে উঠতে পারি। ডার্বি কলকাতার সমর্থকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটানো আমাদের দায়িত্ব। গত বার পারিনি। আশা করি এ বার পারব।”
চলতি বছরে মোহনবাগান যে ভাবে এখনও ছ’টি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয় পেয়ে ও দু’টিতে ড্র করে ১৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে এবং সেই জায়গায় ইস্টবেঙ্গল আটটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই হেরেছে, সেখানে সবুজ-মেরুন শিবিরকেই অনেকে এগিয়ে রাখতে চাইছেন। নতুন কোচ হাবাসের প্রশিক্ষণে ও মিডফিল্ডার জনি কাউকোর ছোঁয়ায় মোহনবাগান নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। টানা তিন ম্যাচে হেরে গত বছর শেষ করা মোহনবাগান চলতি বছর শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ২-২ ড্র দিয়ে। তার পর আর একটি মাত্র ম্যাচে ড্র করে তারা। বাকি ছ’টি ম্যাচেই জিতেছে। এই ছয় ম্যাচে তারা ১২ গোল দিয়ে মাত্র চারটি গোল খেয়েছে।
গত ম্যাচে জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ভাল ফুটবল খেলে জামশেদপুর এফসি-কে ৩-০ হারিয়ে লিগ টেবলের দু’নম্বরে উঠে এসেছিল মোহনবাগান। দলের ছন্দে ফিরে আসা নিয়ে শুভাশিস বলেছেন, “জামশেদপুরের বিরুদ্ধে দল হিসেবে আমরা ভাল খেলেছি। উইংয়ে মনবীর অসাধারণ খেলেছে। প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি সে দিন। ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচেও আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু গোল পাইনি। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে আমরা সুযোগগুলো গোলে পরিণত করতে পেরেছি।”
কাউকো দলে ফেরার পর থেকেই মোহনবাগানের মাঝমাঠ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। গোলের সুযোগও আগের চেয়ে অনেক বেশি তৈরি হচ্ছে। হাবাস ও কাউকোর ছোঁয়ায় দল যে নতুন ছন্দে ফিরেছে তা মেনে নিয়ে শুভাশিস বলেছেন, “কাউকো অসাধারণ ফুটবলার। সত্যিই খুব ভাল খেলছে। হাবাসের প্রশিক্ষণে আমরা অনেক সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলছি। দল হিসেবে আক্রমণে উঠছি, আবার রক্ষণেও দল হিসেবেই খেলছি। দল হিসেবে খেলতে পারছি বলেই আমাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ভাল হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy