প্রথম গোলের পর উচ্ছ্বাস কামিংস (বাঁ দিকে) এবং পেত্রাতোসের। ছবি: এক্স।
মোহনবাগান ২ (কামিংস, সাহাল)
ওড়িশা ০
আইএসএলের ফাইনালে উঠে গেল মোহনবাগান। রবিবার ঘরের মাঠে ওড়িশাকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিল তারা। জেসন কামিংস এবং সাহাল আব্দুল সামাদ গোল করলেন। দুই পর্ব মিলিয়ে ৩-২ জিতে ফাইনালে উঠে গেল মোহনবাগান। প্রথম পর্বে তারা হেরেছিল ১-২ গোলে। লিগ-শিল্ড আগেই জিতেছিল সবুজ-মেরুন। এ বার ফাইনাল জিতে ‘ডাবল’ করার সুযোগ তাদের সামনে।
গোটা ম্যাচে দুই দলেরই আগ্রাসী ফুটবল দেখা গিয়েছে। তবে ঘরের মাঠে ৬৬ হাজার দর্শকের সামনে প্রাধান্য বেশি ছিল মোহনবাগানেরই। দিমিত্রি পেত্রাতোসের পাশাপাশি কামিংসকে প্রথম একাদশে রেখেছিলেন মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। কামিংস গোল করে আস্থার দাম রেখেছেন। চোট সারিয়ে দীর্ঘ দিন পরে নেমে গোল করেছেন সাহালও। তবে জিতলেও মোহনবাগান যে হারে সুযোগ নষ্ট করেছে তা চাপে রাখবে কোচ হাবাসকে। সব ঠিক থাকলে এই ম্যাচে আরও বেশি ব্যবধানে জেতার কথা ছিল সবুজ-মেরুনের।
ওড়িশার বিরুদ্ধে নামার আগে মোহনবাগান জানত তাদের এই ম্যাচে অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। খেলাটাও সে ভাবেই শুরু করে তারা। প্রথম চার মিনিটেই তিন বার ওড়িশার বক্সে হানা দেন মোহনবাগানের ফুটবলারেরা। প্রথম মিনিটেই ওড়িশার বক্সে ক্রস ভাসিয়েছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। শট মেরেছিলেন কামিংস। কিন্তু রেফারি বাঁশি বাজিয়ে জানিয়ে দেন, আগেই হ্যান্ডবল হয়েছে কামিংসের।
এর পর ওড়িশা ধীরে ধীরে খেলায় ছন্দে ফিরতে থাকে। ১১ মিনিটের মাথায় অমরিন্দর সিংহের গোলকিক পৌঁছয় রয় কৃষ্ণের কাছে। তিনি মোহনবাগান ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে পাস দেন ইসাককে। কিন্তু আনোয়ার আলির সৌজন্যে সে যাত্রায় বেঁচে যায় মোহনবাগান। এর পর জনি কাউকোকে খারাপ ফাউল করলেও রেফারি কার্ড দেখাননি জেরিকে।
২২ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। বক্সের বাইরে বাঁ দিক থেকে শট নিয়েছিলেন পেত্রাতোস। সেই শট বাঁচিয়ে দিলেও বার করে দিতে পারেননি অমরিন্দর। সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কামিংস। তিনি ফাঁকা গোলে বল ঠেলে দেন। তিন মিনিট পরেই ওড়িশা গোলের সুযোগ পায়। ডান দিকে বল কৃষ্ণ ঢুকে পড়েন মোহনবাগানের বক্সে। পাস দেন দিয়েগো মৌরিসিয়োকে। তবে ব্রাজিলের ফুটবলার সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
৩৮ মিনিটের মাথায় একটি সুযোগ আসে লিস্টন কোলাসোর কাছে। আনোয়ার নিজের অর্ধ থেকে পাস দেন কামিংসকে। তিনি পাস দেন বাঁ দিকে থাকা লিস্টনকে। লিস্টন কঠিন কোণ থেকে গোলে শট নিয়েছিলেন। তা বাঁচিয়ে দেন অমরিন্দর। বিরতির এক মিনিট আগে অল্পের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় মোহনবাগান। শুভাশিসকে পিছনে ফেলে বক্সে বল ভাসিয়েছিলেন কৃষ্ণ। সেই বল এসেছিল ইসাকের কাছে। তাঁর হেড প্রায় গোললাইন থেকে বাঁচিয়ে দেন হেক্টর ইয়ুস্তে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আচমকাই খেলায় ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ওড়িশা। সেই সময় বেশ চাপের মুখে পড়ে মোহনবাগান। একের পর এক আক্রমণ ধেয়ে আসছিল মোহনবাগানের বক্সে। তার মাঝেই একটি সুযোগ পায় মোহনবাগান। ডান দিকে একটি বল পেয়েছিলেন মনবীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একজনই ডিফেন্ডার। অনায়াসে বাঁ দিকে ফাঁকায় থাকা কামিংসকে পাস দিতে পারতেন। তা না করে একাই শট মারতে যান, যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
মোহনবাগান নির্ধারিত সময়ের শেষের দিকে আরও দু’টি সুযোগ পায়। পেত্রাতোসের কর্নার থেকে ভাল হেড করেন হেক্টর। ঝাঁপিয়ে পড়ে কোনও মতে তা বাঁচিয়ে দেন ওড়িশার গোলকিপার। ৮৫ মিনিটের মাথায় ডান দিকে বল পেয়েছিলেন মনবীর। সাহালের সঙ্গে দ্রুত পাস খেলে নেন। এর পর কামিংসকে পাস দেন। কামিংসের থেকে ভাল জায়গায় বল পান জনি কাউকো। তবে তাঁর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এক সময় মনে হচ্ছিল খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে। কিন্তু শেষ দিকে যে চিত্রনাট্য বদলে যাবে তা কেউ জানতেন না। বাঁ দিক থেকে মনবীর বল নিয়ে উঠেছিলেন। তিনি বক্সে পাস দেন। তা এগিয়ে এসে অমরিন্দর ধরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল হাতে শরীরে লেগে উঠে যায়। সামনেই ছিলেন সাহালের। তাঁর মাথায় লেগে বল গোলে ঢোকে।
রেফারি গোলের বাঁশি বাজানোর পর প্রতিবাদ করেন অমরিন্দর। তাঁর দাবি ছিল, বল সাহালের হাতে লেগেছে। তবে রেফারি কর্ণপাত করেননি। পরে রিপ্লে-তেও বার বার দেখা যায় বল সাহালের মাথায় লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy