আমেরিকার ফুটবলে বিপ্লবের নেপথ্যে রাপিনো ফাইল ছবি
গত ছ’বছর ধরে আন্দোলন করছিলেন মেগান রাপিনো, অবশেষে তা পূর্ণতা পেল। আমেরিকার পুরুষ এবং মহিলা দলের ফুটবলাররা এ বার সমান বেতন পাবেন। আমেরিকার প্রথম কোনও ক্রীড়া সংস্থা এই কাজ করল। এই কাজের পুরোটাই হয়েছে রাপিনোর জন্য। কারণ সমবেতনের দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছে তার পুরোধা ছিলেন তিনিই। মহিলা দলের সতীর্থদের নিয়ে আমেরিকার ফুটবল সংস্থার বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দিয়েছিলেন। সেই মামলা পরে খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি রাপিনো। অবশেষে তাঁর এবং বাকি ফুটবলাদের মিলিত প্রতিবাদের কাছে হার মানল আমেরিকার ফুটবল সংস্থা।
মহিলাদের বিশ্বকাপে পুরুষ দলের থেকে অনেক বেশি সাফল্য রয়েছে মহিলা দলের। তারাই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বারের বিজয়ী। চার বার কাপ জিতেছে, যার মধ্যে শেষ দু’বারও রয়েছে। পুরুষ দল বিশ্বকাপে প্রতি বার যোগ্যতা অর্জনই করতে পারে না। তা সত্ত্বেও তাদের বেতন মহিলা দলের থেকে অনেক বেশি। পুরস্কারমূল্যও বেশি। এই অবিচারেরই তীব্র প্রতিবাদ করেন রাপিনো। ২০১৬ থেকে সমান বেতনের দাবিতে লড়ছেন তিনি। ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ জেতে আমেরিকা। দুর্দান্ত খেলেন রাপিনো নিজেও। ফাইনালের একমাত্র গোলটিও তাঁর। এর পরেই ২৭ জন সতীর্থকে নিয়ে আমেরিকার সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন। লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ আনেন সংস্থার বিরুদ্ধে। পরের বছর সেই মামলার মূল জায়গাগুলিই খারিজ হয়ে যায়।
কিন্তু সেখানেও লড়াই থামেনি রাপিনোর। যখন যেখানে গিয়েছেন, সমান বেতনের দাবি তুলেছেন। সেই দাবি অবশেষে পূর্ণতা পেল। মহিলা দলের ফরোয়ার্ড মার্গারেট পার্স বলেছেন, “প্রত্যেকের জন্য আমি গর্বিত। নিজের অধিকারের জন্য সবাই লড়াই করেছে।” পুরুষ দলের সমান বেতন ছাড়াও বোনাস-সহ অন্যান্য যা যা সুবিধা রয়েছে সবই পাবেন মহিলা দলের ফুটবলাররা। রাপিনো নিজেও যথেষ্ট খুশি। আমেরিকার এক সংবাদপত্রে তিনি বলেছেন, “বিশ্বাস হচ্ছে না এখনও। কিন্তু আমরা অনেকটা এগিয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে একটা নতুন যুগের শুরু হল।”
আমেরিকার মহিলা ফুটবলে রাপিনো বরাবরই প্রতিবাদী চরিত্র। ২০১৫ বিশ্বকাপে জাতীয় সঙ্গীতের সময় চুপ করেছিলেন। কারণ সে বার কৃত্রিম টার্ফ ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই নিয়মের প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর মহিলা দলকে সংবর্ধনা দিয়েছিল দেশের সরকার। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমালোচনা করেছিলেন সমবেতনের দাবির। পাল্টা ট্রাম্পকে একহাত নিয়েছিলেন রাপিনো। এ ছাড়া, সমকামিতার সপক্ষে একাধিক বার আন্দোলন করেছেন। পথে নেমেছেন। নিজের অধিকার বুঝে নিয়েছেন। মাঠের বাইরেও ফুটবলারদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে মুখ খুলেছেন। আমেরিকার মহিলা ফুটবলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া রাপিনোর স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy