ইউরোপ সেরা ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। ছবি: রয়টার্স।
অবশেষে স্বপ্নপূরণ। যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য এতদিন ধরে অপেক্ষা করে বসেছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, তা অবশেষে তাদের ক্যাবিনেটে। শুধু তাই নয় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে ত্রিমুকুট জিতল পেপ গুয়ার্দিওলার দল। শনিবার রাতে ইস্তানবুলের আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারাল সিটি।
গুয়ার্দিওলাকে কোচ করে নিয়ে আসা, ফুটবলারদের পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা, প্রত্যেক মরসুমে বড় বড় নাম নিয়ে আসা, এত কিছু করেও এত দিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ঘরে ঢোকেনি সিটির। দু'বছর আগে ফাইনালে উঠলেও চেলসির কাছে হারতে হয়েছে। তার আগে এবং পরে নকআউটে থেমে গেছে তাদের দৌড়। কিন্তু এ বার আর একই ভুল হল না। ইন্টার মিলানের বিরুদ্ধে বিরাট আহামরি ফুটবল না খেললেও ট্রফি জিতে নিল সিটি।
ফাইনালের আগে থেকে অনেকেই সিটিকে এগিয়ে রেখেছিলেন। কেউ কেউ এটাও বলেছিলেন, সিটির জেতা নাকি সময়ের অপেক্ষা। ইন্টার ইটালির দল হলেও সে দেশের কাগজে তাদের নিয়ে সন্তোষজনক কিছু লেখা হয়নি। কিন্তু ফুটবল মাঠে হয়। তাই ইন্টার হারলেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গেল। এমনকি দু'একটি সহজ সুযোগ না মিস করলে ট্রফি তাদের হাতে উঠতে পারত। ১৩ বছর আগে শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল তারা। সেই দলের বেশ কিছু ফুটবলার এদিন মাঠে হাজির ছিলেন। ইন্টারের প্রতিটি আক্রমণের সঙ্গে তাঁরাও গর্জে উঠছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে ফিরতে হল।
ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা দল সাজিয়েছিলেন ৩-৪-২-১ ছকে। অন্যদিকে ইন্টার মিলানের কোচ সিমোনে ইনজাঘি রক্ষণ শক্তিশালী করার দিকে জোর দিয়েছিলেন। তাই তিনি ডিফেন্সে তিন জন রেখে মাঝমাঠেও পাঁচজনকে রেখে দিয়েছিলেন।
ম্যাচের শুরুতেই একটা সুযোগ পেয়ে যান আর্লিং হালান্ড। কিন্তু সামান্য এগিয়ে থাকায় লাইনসম্যান অফসাইড দেন। এরপর খেলা যত গড়াল ততই নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়ে গেল ইন্টার মিলান। প্রথমার্ধে সিটির যে আগ্রাসন দেখে ফুটবল দুনিয়া অভ্যস্ত, তা এ দিন দেখা যায়নি। বরং নিজেদের কিছুটা খোলসের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখল তারা। শুধুমাত্র বল নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।
উল্টে সিটির ফুটবলাররা অকারণেই নিজেদের চাপে ফেলে দেন। ২৫ মিনিটের মাথায় সিটির গোলকিপার এডারসন সতীর্থকে পাস দিতে গিয়ে বল তুলে দেন ইন্টারের নিকোলো বারেলার পায়ে। চলতি বলে বারেলার নেওয়া শট গোলের অনেক দূর দিয়ে বেরিয়ে যায় ঠিকই। কিন্তু সিটির ফুটবলাররা কতটা চাপে রয়েছেন তা বোঝার জন্য এই একটা ভুল ছিল যথেষ্ট। সঙ্গে সঙ্গে গুয়ারদিওলা হাতের ইঙ্গিতে ফুটবলারদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশ অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে কাজে লাগে। মাঝখান থেকে বল পেয়ে ইন্টারের গোলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন হালান্ড। শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু ইন্টারের গোলকিপার আন্দ্রে ওনানা তা বাঁচিয়ে দেন।
সিটি ধাক্কা খায় ৩৫ মিনিটে। পেশির চোটে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান দি ব্রুইন। দু'মিনিট আগেই খোঁড়াতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। মাঝে মাঠে চিকিৎসকেরা এসে পরীক্ষা করে যান। কিন্তু দি ব্রুইন আর দৌড়তেই পারছিলেন না। বাধ্য হয়ে তাঁকে তুলে নেন গুয়ার্দিওলা। নামেন ফিল ফোডেন। কিন্তু তাতেও প্রথমার্ধে গোলের মুখ খুলতে পারেন সিটি।
দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সিটি। কিন্তু ইন্টার টেক্কা দিচ্ছিল মাঝে মাঝেই। সিটির গোলমুখে উঠে যাচ্ছিল তারা। কিন্তু সঠিক ফিনিশারের অভাব ভোগাচ্ছিল বারবার। এর মধ্যেই ৬৮ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যায় সিটি। মাঝমাঠে আকাঞ্জির পাস পেয়ে যান বার্নারদো সিলভা। তাঁর শট প্রতিহত হলে ফিরতি বলে ঠান্ডা মাথায় নিখুঁত প্লেসিংয়ে গোল করেন রদ্রিগো।
পরের মিনিটেই সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। দিমারকোর হেড পোস্টে লাগে। ফিরতি বলে আবার হেড করেছিলেন দিমারকো। কিন্তু এ বার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরই সতীর্থ রোমেলু লুকাকু। লুকাকুর পায়ে লেগে বল অন্যদিকে চলে যায়।
সেই লুকাকুই পরের দিকে আবার খলনায়ক হয়ে যান। দিমারকোর ক্রস হেনরিক মাখিটারিয়ান হেড করলে লুকাকুর কাছে বল আসে। তাঁর সামনে তখন পুরো গোলটাই ফাঁকা ছিল। কিন্তু চলতি বলে লুকাকুর হেড সরাসরি গোলকিপারের গায়ে লাগে। সিটির এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করে দেন। শেষ মুহূর্তে তেড়েফুঁড়ে খেলেও সমতা ফেরাতে পারেনি ইন্টার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy