এক দিকে প্রিয় দল, যাঁদের হয়ে খেলেছেন এবং কোচিং করিয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি ট্রফি জিতেছেন। আর এক দিকে এমন দল, যেখানে খেলেন তাঁর জামাই। শনিবার আইএসএল ফাইনালের আগে সুব্রত ভট্টাচার্যের দোটানায় থাকারই কথা। প্রিয় দলকে সমর্থন না করলে বুকের ভেতরে কোথাও একটা খচখচ করতে পারে। আবার জামাইয়ের দলের পাশে না থাকলে রেগে যেতে পারেন মেয়ে।
ফাইনাল শুরুর এক দিন আগে অবশ্য সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন ফুটবলার ফুরফুরে। আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন করতেই বললেন, “চাপে থাকার কী আছে? এটা তো ফুটবল খেলা। এখানে সম্পর্কের কোনও জায়গা নেই। আমার মতে, যে দল ভাল খেলবে, সে-ই জিতবে। আমি ও ভাবে কাউকে সমর্থন করতে রাজি নই। খেলাটা হবে মাঠে। সেখানে যে দল গতি কাজে লাগাতে পারবে, যারা ভাল করে বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, মাঠে বুদ্ধির প্রয়োগ করতে পারবে, তারাই দিনের শেষে ট্রফি হাতে তুলবে।”
নিজেই দাবি করেন, সবুজ-মেরুনকে ৫৮টি ট্রফি জিতিয়েছেন তিনি। সেই জার্সিতে খেলেছেন ১৭ বছর। এ রকম দলের বিরুদ্ধে তাঁর যে আবেগ থাকবে, এটা বলাই বাহুল্য। কিন্তু পাঁচ বছর আগে মেয়ে সোনমের সঙ্গে ভারতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর বিয়ে হওয়ার পর থেকে আলাদা করে বেঙ্গালুরুর খেলাতেও মাঝেসাঝে নজর রাখেন তিনি।
আরও পড়ুন:
সুব্রত বললেন, “সুনীল আমার বাড়ির জামাই। তা-ও ওর থেকে আলাদা করে কোনও প্রত্যাশা নেই। ও এমনিতেই দারুণ ফুটবলার। কারও প্রত্যাশা মেটানোর চাপ ওর উপরে নেই। ও নিজেকে প্রমাণ করেছে বহু আগে। তাই শনিবার বেঙ্গালুরু জিতলেও খুশি হব। মোহনবাগান জিতলেও আমার কোনও সমস্যা নেই।” বোঝাই গিয়েছে, কোনও দলকে আলাদা করে এগিয়ে রাখতে রাজি নন মোহনবাগানের ঘরের ছেলে।
শ্বশুরমশাই কাকে সমর্থন করবেন, সেটা নিয়ে ভাবিত নন সুনীলও। ফাইনালের আগের দিন মিডিয়া ডে-তে এসে তিনি বলেছেন, “উনি মোহনবাগানে এত দিন খেলেছেন। এত লোক এখনও ওঁকে চেনে। তাই উনি যদি মোহনবাগানকে সমর্থন করেন, তাতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। আমি ওঁর ব্যাপারটা বুঝতে পারি এবং সেটাকে সমীহ করি। তবে আমি একটা ব্যাপারে নিশ্চিত, বিশ্বের যে প্রান্তে যে ক্লাবেই আমি খেলি না, স্ত্রী আমাকেই সমর্থন করবে।”
সেটা অবশ্য বলাই বাহুল্য। স্বামী সুনীলকে সমর্থন জানাতে সোনম ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন গোয়া। গিয়েছেন তাঁর মা লতাও। সুব্রত অবশ্য যাননি। কেন জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, “ধুর! এখানে থেকেও তো খেলা দেখা যাবে। আমি টিভিতেই খেলা দেখব।” সুব্রত মনে করছেন, দুই দলের কোচ পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। বলেছেন, “দুটো দলের কোচই ভাল। বুদ্ধির সঙ্গে দলকে খেলাতে পারে। শনিবার বুদ্ধিতে এবং কৌশলে যে একে অপরকে টেক্কা দেবে, তার দলই জিতবে।”
মোহনবাগানের কোনও খেলোয়াড়ের প্রতি কি আলাদা করে নজর থাকবে? সুব্রত বলেছেন, “আমি এ বার ভাল করে খেলাই দেখিনি। তাই জানি না কে কী রকম খেলছে। ও ভাবে বলতে পারব না। তবে দু’দলেই ভাল ফুটবলার আছে বলে ফাইনালে উঠেছে।”