এটিকে মোহনবাগানকে খেলতে হবে নিজেদেরই চার প্রাক্তন ফুটবলারদের বিরুদ্ধে। — ফাইল চিত্র
আগামী শনিবার আইএসএল ফাইনাল। বেঙ্গালুরু এফসি-র মুখোমুখি হতে চলেছে এটিকে মোহনবাগান। চলতি মরসুমে গ্রুপ পর্বে দু’বার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে খেলেছে সবুজ-মেরুন। বিপক্ষের মাঠে জিতেছে। ঘরের মাঠে হেরেছে। তবে সেই বেঙ্গালুরুর সঙ্গে এই দলের অনেক তফাৎ। বেঙ্গালুরু গত তিন মাসে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। সেই বদলের পিছনে সুনীল ছেত্রী যেমন রয়েছেন, তেমনই অবদান রয়েছে মোহনবাগানের চার ‘ঘরের ছেলে’রও। শনিবারের ফাইনালের এই ‘ঘরের ছেলে’দের বিরুদ্ধে নামাও জুয়ান ফেরান্দোর দলের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
গত মরসুমে একের পর এক ফুটবলারকে ছেড়ে দিয়েছিল মোহনবাগান। বেঙ্গালুরু কার্যত ওত পেতে বসেছিল। মোহনবাগান যাঁদের ছাড়ছিল, তাঁরাই যোগ দিচ্ছিলেন বেঙ্গালুরুতে। এটিকে এবং তার পরে এটিকে মোহনবাগানকে টানা তিন মরসুম ভরসা দেওয়া রয় কৃষ্ণকে ছেড়ে দেন ফেরান্দো। তিনি নাকি স্প্যানিশ কোচের দর্শনের সঙ্গে মানাতে পারছিলেন না। এই যুক্তিতেই একে একে সন্দেশ জিঙ্ঘান, প্রবীর দাস যোগ দেন বেঙ্গালুরুতে। অতীতে এটিকে এবং এটিকে মোহনবাগানে খেলা জাভি হের্নান্দেস তার এক বছর আগেই বেঙ্গালুরুতে যোগ দেন। শনিবার এই চারজনই মোহনবাগানের কাছে বিপদ।
চার জনের মধ্যে একমাত্র প্রবীর বাদে বাকি সবাই আইএসএলের সবক’টি ম্যাচে খেলেছেন। এঁদের মধ্যে রয় কৃষ্ণ মোহন-জনতার সবচেয়ে কাছের। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে এখনও ফেরান্দোকে দোষ দেন সমর্থকরা। রয় কৃষ্ণ এ বার ২১টি ম্যাচ খেলে পাঁচটি গোল এবং পাঁচটি অ্যাসিস্ট করেছেন। মিডফিল্ডে সে ভাবেই দলকে ভরসা দিয়েছেন জাভি। রক্ষণে স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন সন্দেশ। তাঁকে চোট-আঘাতের কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বেঙ্গালুরুতে সন্দেশের কোনও ‘চোট’ লাগেনি। তাতে এটিকে মোহনবাগানের যে হৃদয়ে যে চোট লেগেছে, তা বলাই বাহুল্য।
প্রবীর স্বেচ্ছায় এটিকে মোহনবাগান ছেড়ে বেঙ্গালুরুতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ১৯টি ম্যাচে খেলেছেন। কিন্তু ডান দিক থেকে তাঁর মাপা ক্রস একাধিক গোল এনে দিয়েছে সুনীল, কৃষ্ণকে। চলতি মরসুমে এই জায়গায় বার বার ভুগেছে এটিকে মোহনবাগান। তা ছাড়া, গোল করার লোকের অভাব তো রয়েছেই। মনবীর সিংহ, লিস্টন কোলাসোরা কত গোল যে মিস্ করেছেন, তা প্রত্যেক সবুজ-মেরুন সমর্থকই জানেন।
বেঙ্গালুরুর ফাইনালে ওঠা কিছুটা অবাক করার মতোই বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, গত বছরের শেষ দিকেও পয়েন্ট তালিকায় তলানিতে ছিল তারা। ইস্টবেঙ্গলও তাদের উপরে ছিল। এতটাই খারাপ ছন্দ যাচ্ছিল, যে কোচ সাইমন গ্রেসন বাধ্য হয়েছিলেন দল থেকে সুনীলকে ছেঁটে ফেলতে। সেই সুনীলই শেষ দুটি ম্যাচে গোল করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন, যার মধ্যে কেরলের বিরুদ্ধে বিতর্কিত একটি গোলও রয়েছে।
সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে মুম্বইয়ের কাছে হার বাদ দিলে এই বছরে একটিও ম্যাচে হারেনি বেঙ্গালুরু। নর্থইস্ট, ওড়িশা, জামশেদপুর, এটিকে মোহনবাগান, চেন্নাইয়িন, কেরল— যে-ই বেঙ্গালুরুর সামনে এসেছে, উড়ে গিয়েছে। সেই দাপট যে ফাইনালেও তারা বজায় রাখবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই সবক’টি জয়েই অবদান রয়েছে মোহনবাগানের চার ‘ঘরের ছেলে’র। ফাইনালেও তাই মোহনবাগানের বড় কাঁটা চার প্রাক্তনীই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy