ভিনসেঞ্জো অ্যালবার্তো অ্যানেস ফাইল ছবি
এক নজরে দেখলে তাঁকে আর পাঁচটা ইটালীয়ের থেকে আলাদা মনে হবে না। লম্বা চওড়া ছিপছিপে মেদহীন শরীর। লম্বা চুল কখনও পনিটেল করে বাঁধা, আবার কখনও খোলা থাকে। গোকুলম কেরলের কোচ ভিনসেঞ্জো অ্যালবার্তো অ্যানেস হঠাৎ করে ভারতীয় ফুটবলে যেন শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। নেটমাধ্যম এবং লোকের মুখে ঘুরছে তাঁর দুই উক্তি, ‘বড় বাজেটের দল গড়ে কোনও লাভ হয় না’ এবং ‘আইলিগ ও আইএসএলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই’।
গোকুলমকে পরপর দু’বার আই লিগ জিতিয়ে ইতিমধ্যেই ইতিহাসের পাতায় নাম তুলেছেন। এ বার আইএসএলের অন্যতম শক্তিশালী দল। এটিকে মোহনবাগানকেও মাটি ধরালেন। আপাত দৃষ্টিতে ভিনসেঞ্জোকে দেখলে বেশ মজার মানুষই মনে হয়। বুধবার এটিকে মোহনবাগানকে হারিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ঢুকে চেয়ারে বসার সময়েই চোখ গেল নামের ফলকের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে জানালেন, নামের ফলকে তাঁর পদবী অ্যালবার্তো লেখা হয়েছে। কিন্তু সেটি তাঁর পদবী নয়, নাম। তাঁর পদবী অ্যানেস। অর্থাৎ পুরো নামটি হবে ভিনসেঞ্জো অ্যালবার্তো অ্যানেস। স্থানীয় মিডিয়া ম্যানেজারকে অনুরোধ করলেন নামের ফলকটি পরের ম্যাচে বদলে দেওয়ার জন্য। সেই আশ্বাসও পেলেন।
অনেক কোচই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সংক্ষিপ্ত জবাব দেন। কিন্তু এখানেই ভিনসেঞ্জো ব্যতিক্রম। যা-ই বলুন না কেন, সেটা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সব সময়ই মুখে লেগে রয়েছে হাসি। অল্প ক’দিনের যেন বন্ধু হয়ে গিয়েছেন প্রত্যেকের। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার উদ্দেশে সাফ বলেছেন, আই লিগকে নেকনজরে দেখা বন্ধ করা হোক। জাতীয় দলের জন্য ফুটবলার তুলে আনা হোক এখান থেকেও। আই লিগেও অনেক প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে। এটিকে মোহনবাগানে একাধিক জাতীয় দলের ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তাঁরা পরাভূত হয়েছে, সেটা তুলে ধরেন তিনি।
মাঠের ধারে তাঁর কীর্তিকলাপও চোখে পড়েছে। কখনও বোতল থেকে জল নিয়ে হালকা করে চুলে লাগিয়ে চুল ঠিক করে নিয়েছেন। আবার দলের গোলের পর লাফিয়ে উঠে উল্লাস প্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছে। মাঠের ধারে সব সময় সচল থাকেন। কিছু না কিছু করছেন। এ রকম উজ্জীবিত কোচকে পেয়ে দলের ফুটবলাররা যে সেরাটা দেবেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
খুব বড় ক্লাবে এখনও কোচিং করাননি তিনি। ইটালির ক্লাব বাদেও এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, কসোভো, ঘানা, প্যালেস্টাইনের ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন। গোকুলমে আসেন ২০২০-তে। দুই মরসুমেই সাফল্য। নতুন নতুন ফুটবলারদের তুলে আনতেও তাঁর জুড়ি নেই। তাই অবলীলায় বলে দিতে পারেন, তাঁর দলের একাধিক ফুটবলার জাতীয় দলে খেলার যোগ্য। জাতীয় দলের ভবিষ্যত কী হবে কেউ জানে না। কিন্তু ভিনসেঞ্জোর কথা নিঃসন্দেহে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy