Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
football

Manisha Kalyan: গ্রামবাসীদের কটাক্ষ উপেক্ষা করেই স্বপ্নপূরণ মনীষার

পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর জেলার মুগোওয়াল গ্রামের মনীষার স্বপ্ন ছিল অ্যাথলিট হওয়া। ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়তেন। পাশাপাশি বাস্কেটবলও খেলতেন।

প্রাপ্তি: ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে মনীষা।

প্রাপ্তি: ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে মনীষা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৬
Share: Save:

ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল করে চমকে দিয়েছেন তিনি। অথচ ফুটবল খেলার জন্য শৈশবে গ্রামবাসীদের একাংশের কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছিল ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের তারকা মনীষা কল্যাণকে!

পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর জেলার মুগোওয়াল গ্রামের মনীষার স্বপ্ন ছিল অ্যাথলিট হওয়া। ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়তেন। পাশাপাশি বাস্কেটবলও খেলতেন। কিন্তু ক্লাস এইটে ওঠার পরেই বদলে যায় তাঁর লক্ষ্য। সব ছেড়ে বেছে নেন ফুটবলকে। আসন্ন এশিয়ান কাপের প্রস্তুতির ফাঁকেই মনীষা শোনালেন প্রতিকূলতা জয় করে তাঁর লক্ষ্য পৌঁছনোর রোমাঞ্চকর কাহিনি। বললেন, ‘‘গ্রামে ছেলেদের সঙ্গে আমি ছাড়া আর কোনও মেয়ে ফুটবল খেলত না। তা নিয়ে প্রতিবেশীদের কয়েকজনের প্রবল আপত্তি ছিল। ওঁরা আমার বাবা-মায়ের কাছে নালিশও করতেন নিয়মিত। বলতেন, ছেলেদের সঙ্গে একা একটি মেয়ের এ ভাবে ফুটবল খেলা ঠিক নয়। তোমরা মেয়েকে বারণ করো ফুটবল খেলতে।’’

গ্রামবাসীদের আপত্তি উপেক্ষা করেই মনীষা ফুটবল খেলে গিয়েছিলেন। কোথা থেকে এত মনের জোর পেয়েছিলেন? ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের নতুন তারকা বললেন, ‘‘আমার বাবা ও মা সব সময়ই উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন ফুটবল খেলতে। তাই কারও আপত্তিতে কান দিইনি।’’

ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোলের পরে অবশ্য ছবিটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে মুগোওয়াল গ্রামের। যাঁরা এক সময় মনীষার ফুটবল খেলা বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন, তাঁরাই ভিড় করেছিলেন তাঁর বাড়িতে। রোনাল্ডিনহোর ভক্ত মনীষা হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মার সঙ্গে ওঁরা দেখা করে ওঁরা অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন।’’

ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের আক্রমণভাগের অন্যতম ভরসা এখন উইঙ্গার মনীষা। অথচ, শৈশবে তিনি স্বপ্ন দেখতেন অ্যাথলিট বা বাস্কেটবল খেলোয়াড় হওয়ার। অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পরেই লক্ষ্য বদলে যায় মনীষার। সেই কাহিনিও কম আকর্ষণীয় নয়। বলছিলেন, ‘‘ক্লাস এইটে ওঠার আগে পর্যন্ত অ্যাথলেটিক্স ও বাস্কেটবলই ছিল আমার প্রিয়। ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়তাম। কখনও ভাবিনি ফুটবলার হব।’’ যোগ করেন, ‘‘আমাদের স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার। তিনি আমাকে কিছুটা জোর করেই জেলা ফুটবল দলের ট্রায়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় ফুটবল সম্পর্কে খুব একটা ধারণা ছিল না। নির্বাচিত হয়ে এত আনন্দ হয়েছিল যে, মাঠে দাঁড়িয়েই স্যরকে বলেছিলাম, ফুটবলারই হতে চাই আমি।’’

শুরু হল মনীষার জীবনের নতুন অধ্যায়। উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য গ্রামের স্কুল ছাড়েন তিনি। বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে নতুন স্কুলে প্রত্যেক দিন সাইকেল চালিয়ে যেতেন। অল্প দিনের মধ্যেই নজর কেড়ে নেন। ডাক পান কেঙ্কেরে এফসি ও সেতু এফসিতে। সেখান থেকে অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলে। স্বপ্ন দেখতেন সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে গোল করার। চার দেশীয় প্রতিযোগিতায় ব্রাজিলের বিরুদ্ধেই সেই স্বপ্নপূরণ হয় মনীষার। বলছিলেন, ‘‘ব্রাজিলের বিরুদ্ধে খেলব শোনার পর থেকেই উত্তেজনায় ছটফট করতাম। ওই ম্যাচে গোল করাটা জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

football India Manisha Kalyan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy