স্টেডিয়াম পরিষ্কার করছেন জাপানি সমর্থকরা। ছবি: রয়টার্স
জার্মানির বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ের পরে গোটা স্টেডিয়াম পরিষ্কার করেছিলেন জাপানের সমর্থকরা। কোস্টা রিকার কাছে হারের পরেও কর্তব্যে অবিচল তাঁরা। হারের দুঃখ থাকলেও শেষ পর্যন্ত থেকে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করে তবেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়েছেন। জাপানের ফুটবল দলও ম্যাচের পর সাজঘর পরিষ্কার করে রাখে। রাশিয়ার পর কাতার বিশ্বকাপেও জাপানের এই আচরণ মন জিতেছে সাধারণ মানুষের। কেন প্রতি ম্যাচে একই জিনিস করেন জাপানিরা?
কাতারের এক ইউটিউবার প্রশ্নটা করেছিলেন এক জাপানি সমর্থককে। তিনি বলেন, “আমরা জাপানি, কখনও নোংরা ফেলে রাখি না। আমরা যেখানে থাকি বা যাই, সেই জায়গা পরিষ্কার করে রাখতে ভালবাসি।” তবে আসল রহস্য অবশ্য অন্য। জাপানিরা এমনিতে আধ্যাত্মিক। ধর্মের চর্চা করেন প্রতিনিয়ত। জাপানের মূল ধর্ম হল বৌদ্ধ। তবে গোটা দেশে বৌদ্ধ ধর্ম ছড়িয়ে পড়ার আগে একটিই ধর্ম ছিল জাপানে। তা হল ‘শিনতো’ ধর্ম।
শিনতো ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা। অর্থাৎ যেখানে যা কিছু থাকবে, তা পরিষ্কার রাখা। বৌদ্ধ ধর্ম আসার পর জাপানিরা শিনতো ধর্মের ভাল দিকগুলিকেও তার সঙ্গে মিশিয়ে দেন। ফলে পরিচ্ছন্নতা এখন তাঁদের সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। জাপানিরা মনে করেন, পরিচ্ছন্ন থাকলে ঈশ্বরের আরও কাছাকাছি যাওয়া যায়।
বিভিন্ন দেশও জাপানের এই কাজকে সমর্থন করে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাপানে গিয়ে জাপানিদের সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতির মিল খুঁজে বের করেছিলেন। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ তাঁরই মাথা থেকে বেরিয়েছিল। ছোট ছোট জিনিসের মাধ্যমেই যে উন্নতি সম্ভব এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে জাপানিরা। সেটা ব্যক্তিগত জীবনই হোক বা পেশাদার জীবন। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের সময় জাপানিদের পরিচ্ছন্নতার উদাহরণ দেখেছিল বিশ্ব। ফুটবল বিশ্বকাপে তা আরও এক বার দেখা গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy