Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Neymar

দ্বিতীয়ার্ধে চেনা ব্রাজিল, রিচার্লিসনের জোড়া গোলে বিশ্বকাপ শুরু নেমারদের

প্রথমার্ধে একের পর এক আক্রমণ করেও গোল পায়নি ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই বদলে গেল তারা। পাওয়া গেল চেনা ব্রাজিলকে। রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়াকে প্রথম ম্যাচে হারাল ব্রাজিল।

দ্বিতীয় গোলের সময় রিচার্লিসন।

দ্বিতীয় গোলের সময় রিচার্লিসন। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২২ ০২:২৫
Share: Save:

ব্রাজিল ২ (রিচার্লিসন ২)

সার্বিয়া ০

প্রথমার্ধে একের পর এক আক্রমণ। বিপক্ষের বক্সে ক্রমাগত হানা। কিন্তু একটা ফুটবল ম্যাচ জিততে গেলে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, সেই গোলটাই করতে পারছিল না ব্রাজিল। প্রথমার্ধের খেলা দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠে যায়, আবার একটা অঘটন দেখবে না তো এই বিশ্বকাপ? লিয়োনেল মেসির আর্জেন্টিনার মতো নেমারের ব্রাজিলও কি সমর্থকদের হতাশ করবে? সেটা হল না। দ্বিতীয়ার্ধে পাওয়া গেল চেনা ব্রাজিলকে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ হারিয়ে অভিযান শুরু করল ব্রাজিল। অনবদ্য দু’টি গোল করলেন রিচার্লিসন। গোল না পেলেও গোটা ম্যাচে অনবদ্য ভূমিকা পালন করলেন নেমার।

এ দিন প্রথম একাদশে রিচার্লিসন, ভিনিসিয়াস, রাফিনহাকে রেখে কোচ তিতে বুঝিয়ে দেন, তিনি আক্রণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলতে চান। সঙ্গে নেমার তো ছিলেনই। ফলে আক্রমণে বিকল্পের কোনও কমতি ছিল না। প্রত্যাশামতোই শুরু থেকে আক্রমণের ঝড় তোলে ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের পায়ে বল রাখতেই দিচ্ছিল না তারা। কাসেমিরো, পাকুয়েতারা মাঝমাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন। তখনও পর্যন্ত নেমারকে সে ভাবে চোখে পড়েনি।

তরুণ ফরোয়ার্ডদের দাপটে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল ব্রাজিল। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে এসে প্রতি বার আটকে যাচ্ছিল তারা। ঠিকঠাক ফিনিশিং কিছুতেই হচ্ছিল না। অন্য দিকে, রক্ষণে একটা ত্রিভুজ তৈরি করে খেলার চেষ্টা করছিল সার্বিয়া। লক্ষ্য ছিল ব্রাজিলের ফরোয়ার্ডদের বেশি জায়গা না দেওয়া। তাতে সফলও হয় তারা। বার বার আটকে যাচ্ছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা। ক্রমাগত ফাউল করা হচ্ছিল নেমারকে। ব্রাজিলের বাকি ফুটবলারদের শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করছিল সার্বিয়া।

৩৭ মিনিটে সহজ একটি সুযোগ মিস করেন রাফিনহা। গোলকিপারকে সামনে পেয়ে গিয়েছিলেন। পুরো গোলই তাঁর কাছে খোলা ছিল। কিন্তু সরাসরি গোলকিপারের হাতে বল জমা দিলেন। ঠিকঠাক জায়গা দিয়ে শটই মারতে পারেননি। চার মিনিট পরে গোলকিপারকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি ভিনিসিয়াস। বিপক্ষ ফুটবলারের পায়ে লেগে বল চলে যায় বাইরে। বিরতিতে কোনও গোল করতে পারেনি ব্রাজিল। দু’-একটি সুযোগ পেলেও বার বারই সার্বিয়ার রক্ষণে আটকে যায় তারা।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই আবার একটি দুর্দান্ত সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনহা। এ বারও গোলকিপারকে একা পেয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন। তার পরেই নেমারকে ফ্রিকিক করেন বিপক্ষের ফুটবলার। বক্সের বাইরে থেকে নেমারের ফ্রিকিক ওয়ালে লেগে বেরিয়ে যায়। ৫৩ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিল। ডান দিকে বল পান নেমার। অসাধারণ ট্যাকল করে বল বিপন্মুক্ত করেন পাভলোভিচ। আগেই হলুদ কার্ড দেখলেও বক্সের মধ্যে নেমারকে ঝুঁকি নিয়ে ট্যাকল করেন। তা না হলে ব্রাজিলের প্রথম গোল তখনই হয়ে যেত। ৬০ মিনিটের মাথায় দূর থেকে বাঁ পায়ে অসাধারণ শট করেন আলেক্স সান্দ্রো। পোস্ট লেগে প্রতিহত হয় বল।

দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসনের সেই দুরন্ত গোল।

দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসনের সেই দুরন্ত গোল। ছবি: রয়টার্স

লুসাইল স্টেডিয়ামে এবং গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ব্রাজিলের সমর্থকরা স্বস্তি পান ৬৩ মিনিটে। রিচার্লিসনের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বক্সের মধ্যে নেমার বিপক্ষ ফুটবলারদের কাটিয়ে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন। আচমকাই বল পেয়ে যান ভিনিসিয়াস। তাঁর শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচান গোলকিপার। ফিরতি বল গোলে ঠেলে দেন রিচার্লিসন। কিছু ক্ষণ পরে ব্রাজিলের আরও একটি গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। ভিনিসিয়াস সামনে একা পেয়েছিলেন গোলকিপারকে। কিন্তু শট মারার আগের মুহূর্তেই পিছলে পড়ে যান তিনি।

৭৪ মিনিটে রিচার্লিসন যে গোলটি করলেন, তা হয়তো এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সেরা গোল। বাঁ দিক থেকে এগিয়ে গিয়ে আউটস্টেপে বল ভাসিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। বাঁ পা দিয়ে চমৎকার ভঙ্গিতে বল রিসিভ করেন রিচার্লিসন। চকিতে ঘুরে গিয়ে দুর্দান্ত সাইডভলিতে বল জালে জড়ালেন ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড। খেলা শেষের দশ মিনিট আগে কাসেমিরোর শট লাগে । ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ আবার হারায় ব্রাজিল। তবে গোটা ম্যাচে তাঁদের মোট ২২টি শট (তার মধ্যে ১০টি গোল লক্ষ্য করে) প্রমাণ করে দিয়েছে, এ বারের ব্রাজিলের অন্যতম অস্ত্র আক্রমণই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE