বিশ্বকাপের নকআউটে প্রথম গোল এল মেসির পা থেকে। গোল করে উচ্ছ্বাস আর্জেন্টিনার অধিনায়কের। ছবি: রয়টার্স
সেই লিয়োনেল মেসি। সেই বাঁ পা। আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে আরও একটি গোল করলেন মেসি। তাঁর গোলেই অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণ ভাঙল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা। মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনার হয়ে আর একটি গোল করলেন জুলিয়ান আলভারেস। অস্ট্রেলিয়ার করা গোলটিও আর্জেন্টিনার দৌলতে পাওয়া। আত্মঘাতী গোল করলেন এনজো ফের্নান্দেস। তাতে অবশ্য জিততে সমস্যা হল না আর্জেন্টিনার।
কেরিয়ারের ১০০০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন লিয়োনেল মেসি। তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। হতাশ করলেন না মেসি। গোটা ম্যাচ জুড়ে দাপটে খেললেন। সেই সঙ্গে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটাও করলেন তিনি। গোল। বিশ্বকাপে এই নিয়ে নিজের নবম গোল করে ফেললেন মেসি। কিন্তু নকআউটে তাঁর পা থেকে এল প্রথম গোল।
খেলার শুরু থেকেই বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার কাছে। ছোট ছোট পাসে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিলেন মেসিরা। অন্য দিকে রক্ষণ মজবুত রেখে প্রতি আক্রমণে খেলার লক্ষ্যে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিছুটা শারীরিক ফুটবল খেলার চেষ্টা করছিল তারা। চোটের কারণে দি মারিয়া না থাকায় প্রান্ত ধরে আক্রমণ কম হচ্ছিল আর্জেন্টিনার। থ্রু বলে খেলার চেষ্টা করছিল তারা। মেসিকে মাঝে রেখে অস্ট্রেলিয়ার বক্সে ঢোকার চেষ্টা করছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারছিল না তারা।
১৮ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণ থেকে এক বার আর্জেন্টিনার বক্সে ঢোকেন অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলাররা। কিন্তু গোলে শট মারার আগেই বল গোললাইন অতিক্রম করে চলে যায়। ধীরে ধীরে খেলায় ফেরার চেষ্টা করতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ২২ মিনিটের মাথায় ম্যাচের প্রথম কর্নার পায় তারা। কিন্তু সেখান থেকে কোনও বিপদ তৈরি হয়নি আর্জেন্টিনার গোলে। আর্জেন্টিনার মাঝমাঠ ও আক্রমণ ভাগের মধ্যে নিজেদের ফুটবলারদের দেওয়াল তৈরি করে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে থ্রু বলে সামনে এগোতে পারছিলেন না মেসিরা। দি মারিয়া না থাকায় প্রান্ত ধরে আক্রমণও কম হচ্ছিল। ফলে সে রকম সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না আর্জেন্টিনা।
৩৫ মিনিটের মাথায় অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণ ভাঙলেন মেসি। কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে আর্জেন্টিনার ফুটবলারকে ফাউল করায় ফ্রিকিক পায় আর্জেন্টিনা। ফ্রিকিক থেকে সরাসরি গোল না হলেও ফিরতি বল পান মেসি। দি পলের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের মাটি ঘেঁষা শটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি।
গোল খেয়ে আক্রমণে জোর দেয় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু খেলার রাশ আবার নিজেদের কাছে নিয়ে নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। নিজেদের মধ্যে বল রাখছিলেন ফুটবলাররা। ফলে রক্ষণ ছেড়ে উঠে আসতে বাধ্য হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। বিপক্ষের ফুটবলারদের সেই ফাঁক থেকেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মেসিরা। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোল আসেনি। ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫৭ মিনিটের মাথায় ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এ বার গোল করেন জুলিয়ান আলভারেস। গোলরক্ষকের দোষে গোল খায় অস্ট্রেলিয়া। বক্সের মধ্যে বেশি ক্ষণ পায়ে বল রাখার খেসারত দিতে হয় ম্যাট রায়ানকে। তাঁর পা থেকে বল ছিনিয়ে নেন আলভারেস। ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ভুল করেননি তিনি।
দু’গোল খেয়ে খেলায় ফেরার চেষ্টা করেও পারছিল না অস্ট্রেলিয়া। তাদের ম্যাচে ফেরাল এনজো ফের্নান্দেসের আত্মঘাতী গোল। ৭৭মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট মারেন অস্ট্রেলিয়ার গুডউইন। বক্সের মধ্যে ফের্নান্দেসের মাথায় লেগে বলের দিক বদলে যায়। কিছু করার ছিল না গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের।
এক গোল করার পরে দ্বিতীয় গোলের জন্য উঠে যায় অস্ট্রেলিয়ার পুরো দল। ফলে প্রতি আক্রমণ থেকে একের পর এক সুযোগ আসে আর্জেন্টিনার কাছে। মেসির ক্রস থেকে গোল করার দু’টি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন লাউতারো মার্তিনেস। মেসির একটি শট একটুর জন্য বাইরে যায়। শেষ মিনিটে আর্জেন্টিনার গোলের সামনে বিপদ তৈরি হয়। ভাল জায়গায় বল পেয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার কুয়োলো। কিন্তু তাঁর শট দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় বাঁচিয়ে দেন মার্তিনেস। নইলে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে আরও অপেক্ষা করতে হত মেসিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy