লিয়োনেল মেসি ও সচিন তেন্ডুলকর, দু’জনেই নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ জিতে মাঠ ছেড়েছেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দুই ১০ নম্বর জার্সিধারী। এক জন ফুটবল মাঠে ফুল ফোটান তো অন্য জন ক্রিকেটের ২২ গজ শাসন করতেন। দু’জনেই নিজের সময়ের সেরা খেলোয়াড়। কিন্তু সেরার শিরোপা পেতে অনেক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের। এক জন লিয়োনেল মেসি। অন্য জন সচিন তেন্ডুলকর। দু’জনেই নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ জিতেছেন। কোথাও মিলে গিয়েছেন দুই খেলার দুই সেরা তারকা।
১৯৯২ সালে প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলেছিলেন সচিন। তার পরে ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭, টানা বিশ্বকাপ খেলেও জিততে পারেননি। বার বার ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের আগে সচিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, শেষ বারের মতো নামছেন তিনি। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেট দেবতা তাঁকে নিরাশ করেননি। নিজের শহর মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল ভারত। তার পরে সতীর্থদের ঘাড়ে চেপে সচিনের মাঠ প্রদক্ষিণের দৃশ্য বিশ্ব ক্রিকেটের অমর ফ্রেম। ভারতীয় ক্রিকেটাররা জানিয়েছিলেন, সে বার সচিনের জন্যই তাঁরা বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল, ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা আইকন যেন খালি হাতে না ফেরেন।
১১ বছর পরে আরও এক বার দেখা গেল সেই ছবি। খেলা আলাদা। কিন্তু ঘটনা এক। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ক্লাবের জার্সিতে কোনও ট্রফি যাঁর অধরা নয়। কিন্তু দেশের হয়ে বার বার শূন্য হাতে ফিরেছেন। দেশের হয়ে তাঁর খেলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কোনও জবাব দেননি লিয়োনেল মেসি। বার বার চেষ্টা করেছেন। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জেতার পরে এ বার কাতার বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছিলেন মেসি। জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ।
নিজের শেষ বিশ্বকাপে জ্বলে উঠলেন মেসি। গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল, একাই দলকে টানলেন। গ্রুপের একটি ম্যাচ বাদ দিলে বাকি সব ম্যাচে গোল করেছেন তিনি। ফাইনালে জোড়া গোল এসেছে তাঁর পা থেকে। আর মেসির জন্য খেলছিলেন দলের বাকিরা। শেষ বার মেসিকে বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য নিজেদের নিংড়ে দিয়েছেন এনজো ফের্নান্দেস, জুলিয়ান আলভারেসরা। শেষ পর্যন্ত জিতেছেন মেসি। বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার নিয়ে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। এই দুই ঘটনা মিলে গিয়েছে একে অপরের সঙ্গে।
আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতার পরে মেসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সচিন। সমাজমাধ্যমে মেসির দু’টি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘মেসির জন্য বিশ্বকাপ জেতায় আর্জেন্টিনাকে শুভেচ্ছা। যে ভাবে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল সেখান থেকে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছে তারা। অতিরিক্ত সময়ের শেষের দিকে দুরন্ত সেভ করার জন্য এমিলিয়ানো মার্তিনেসের প্রশংসা প্রাপ্য। সেটা দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে আর্জেন্টিনা এ বার বিশ্বকাপ জিতবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy