Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
FIFA World Cup 2022

জোড়া গোল এমবাপের, ডেনমার্ককে হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স

বিশ্বকাপে আবার নিজের জাত চেনালেন এমবাপে। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করলেন তিনি। গোটা ম্যাচে তাঁকে আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছিল ডেনমার্কের রক্ষণ। কিন্তু গতিতে পরাস্ত করলেন তিনি।

ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করলেন এমবাপে। এ বারের বিশ্বকাপে তিনটি গোল হয়ে গেল তাঁর।

ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করলেন এমবাপে। এ বারের বিশ্বকাপে তিনটি গোল হয়ে গেল তাঁর। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ২৩:২৬
Share: Save:

পর পর দু’ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা পাকা করে নিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। গ্রুপ ডি-র ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারাল তারা। ফ্রান্সের হয়ে দু’টি গোলই এল কিলিয়ান এমবাপের পা থেকে। ডেনমার্কের হয়ে গোল করলেন ক্রিশ্চেনসন। দু’ম্যাচে ৬ পয়েন্ট ফ্রান্সের। গ্রুপের শীর্ষে তারা।

শুরু থেকে দু’দলই প্রতিপক্ষকে একটু বুঝে নিতে চাইছিল। আক্রমণের ঝাঁঝ অবশ্যই বেশি ছিল ফ্রান্সের। দু’প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণ করছিল তারা। অন্য দিকে ডেনমার্ক চাইছিল থ্রু-বলে খেলতে। ১০ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণ তুলে আনে ফ্রান্স। বক্সে বল তোলেন থিয়ো হের্নান্দেস। ফিরতি বল পেয়ে গিয়েছিলেন অলিভিয়ের জিহু। কিন্তু পায়ে-বলে সংযোগ করতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটেই ফরাসি বক্সে আক্রমণ তুলে আনেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন। কিন্তু ডেনমার্কের কোনও ফুটবলার হেড করার আগেই বল তালুবন্দি করেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস।

১২ মিনিটের মাথায় গ্রিজম্যানের কর্নার থেকে গোলের সামনে থেকে হেড করেন ভারান। গোলের দিকে বল যাচ্ছিল। কিন্তু বল গোলে ঢোকার আগেই ডান পায়ের টোকায় তা বার করে দেন জোয়াকিম মেহেলে। নইলে চোট সারিয়ে ফিরেই গোলের তালিকায় নাম লেখাতে পারতেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার। ১৯ মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ পায় ফ্রান্স। ডেনমার্কের গোলমুখী আক্রমণ আটকে দেন গ্রিজম্যান। নিজেদের বক্সে বল ধরে প্রতি-আক্রমণ শুরু করেন তিনি। অনেকটা দৌড়ে এমবাপের উদ্দেশে বল বাড়ান গ্রিজম্যান। এমবাপেকে আটকাতে ফাউল করেন ক্রিশ্চেনসন। ফলে রেফারি তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান। ফ্রিকিক থেকে ডান প্রান্তে ডেম্বেলেকে বল দেন গ্রিজম্যান। ডেম্বেলের ক্রস থেকে হেড করেন হাঁবিয়ে। কিন্তু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বল বাইরে বার করে দেন ডেনমার্কের গোলরক্ষক ক্যাসপার স্কিমিশেল। ফলে গোল পায়নি ফ্রান্স।

২০ মিনিটের পর থেকে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে ডেনমার্ক। মাঝমাঠে বলের দখল নিয়ে দু’প্রান্ত ধরে আক্রমণ তুলে আনার চেষ্টা করতে থাকে তারা। কিন্তু ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। আক্রমণের পাশাপাশি রক্ষণকেও মজবুত করে রেখেছিল দিদিয়ের দেশঁর ফ্রান্স। ৩০ মিনিটের মাথায় ভাল আক্রমণ তুলে আনে ফ্রান্স। এমবাপে ও থিয়ো নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করে ড্যানিশ বক্সে ঢোকেন। থিয়োর ক্রস পান কৌন্ডে। ডান পায়ে জোরালো শট মারেন তিনি। কিন্তু গোলের সামনে থাকা ডেনমার্কের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল যায় স্কিমিশেলের কাছে। ফলে বিপদ তৈরি হয়নি। তিন মিনিট পরেই বল নিয়ে ডেনমার্কের বক্সে ঢোকেন গ্রিজম্যান। সামনে কোনও সতীর্থ না থাকায় সরাসরি গোলে মারেন তিনি। কিন্তু কোণ ছোট হয়ে যাওয়ায় গোল করতে পারেননি তিনি। স্কিমিশেলের পায়ে লেগে বল বেরিয়ে যায়। ফিরতি বলে গোল করার চেষ্টা করেন ডেম্বেলে। কিন্তু তিনিও সফল হননি।

৩৫ মিনিটের মাথায় প্রতি-আক্রমণ থেকে গোল করার চেষ্টা করে ডেনমার্ক। ডান প্রান্তে বল পান ড্যামসগার্ড। তিনি বল বাড়ান কর্নেলিয়াসের দিকে। তাঁর ডান পায়ের জোরালো শট গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই আক্রমণ তুলে আনে ফ্রান্স। ডেম্বেলে-এমবাপে যুগলবন্দিতে বক্সে বল পান জিহু। তাঁর হেড অল্পের জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়। ৪০ মিনিটের মাথায় আবার একটি আক্রমণ তুলে আনে ফ্রান্স। অফসাইডের জাল কেটে ডান প্রান্ত ধরে এগিয়ে যান ডেম্বেলে। বক্সে অরক্ষিত থাকা এমবাপেকে বল দেন তিনি। এমবাপের ডান পায়ের শট গোল উঁচিয়ে চলে যায়। গোল করতে না পেরে হতাশ দেখায় এমবাপেকে। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য বিরতিতে যায় দু’দল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা ডেনমার্কের। বাঁ প্রান্ত ধরে উঠে বক্সে বল রাখেন এরিকসন। কিন্তু সেই বল কাজে লাগাতে পারেননি কোনও সতীর্থ। তার পরেই অবশ্য খেলায় ফেরে ফ্রান্স। ৫০ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত ধরে বল নিয়ে ডেনমার্কের বক্সে ওঠেন এমবাপে। তিনি বল বাড়ান ডেম্বেলেকে। ফিরতি বলে পা দেওয়ার আগেই সেই বল ধরে নেন স্কিমিশেল। ৫৬ মিনিটের মাথায় নিজের গতি ব্যবহার করে প্রায় ৪০ গজ দৌড়ে ডেনমার্কের ফুটবলারদের পিছনে ফেলে বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপে। তাঁর বাঁ পায়ের শট বার করে দেন স্কিমিশেল। এ বারেও গোল করতে পারেননি এমবাপে। বার বার আক্রমণ করছিল ফ্রান্স। কিন্তু কাজের কাজটাই করতে পারছিলেন না এমবাপেরা।

গোল করার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন গ্রিজম্যান। বক্সের বাইরে বুকে রিসিভ করে বল নামিয়ে বক্সে ঢোকেন গ্রিজম্যান। সামনে গোলরক্ষক ছাড়া কেউ ছিলেন না। কিন্তু সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। কিন্তু তার পরের মুহূর্তেই গোল করে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ৬০ মিনিটের মাথায় বাঁ দিকে থেকে এমবাপেকে পাস দেন হের্নান্দেস। পাল্টা তাঁকে পাস বাড়ান এমবাপে। গোল লাইন থেকে বক্সে বল রাখেন হের্নান্দেস। চলতি বলে ডান পায়ের শটে গোল করেন এমবাপে। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

গোল খেয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় ডেনমার্ক। তার ফলও মেলে। কর্নার থেকে সতীর্থের ব্যাক হেড থেকে হেডে গোল করলেন ক্রিশ্চেনসন। কিছু করার ছিল না লরিসের। পাঁচ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারত ডেনমার্ক। বক্সের মধ্যে ভাল জায়গায় বল পান ড্যামসগার্ড। তাঁর ডান পায়ের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বার করে দেন লরিস। নইলে চাপে পড়ে যেত ফ্রান্স।

গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। বক্সের মধ্যে সাইড ভলি থেকে গোল করার চেষ্টা করেন হাঁবিয়ে। ভাল মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু বার উঁচিয়ে বল চলে যায়। ৮৭ মিনিটের মাথায় আবার গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন এমবাপে। বক্সের বাইরে থেকে বল তোলেন গ্রিজম্যান। ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে ডান পায়ের টোকায় গোল করেন এমবাপে। আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ডেনমার্ক। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy