জার্মানির বিরুদ্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর উচ্ছ্বাস জাপান বেঞ্চের। ছবি: রয়টার্স
সৌদি আরবের অপ্রত্যাশিত জয়ের পর আরও একটা অঘটনের আশায় ছিলেন এশিয়ার ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের আশা হত করল না জাপান। বুধবার দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল জাপান।
প্রথম ম্যাচেই জার্মানির রক্ষণ ভাগের দুর্বলতা বার বার দেখিয়ে দিল জাপান। সামনে জার্মানির মতো শক্তি থাকলেও গুটিয়ে থাকেননি জাপানের ফুটবলাররা। গোটা ম্যাচে সমানে সমানে লড়াই করলেন তাঁরা। শুরুটা আক্রমণাত্মক মেজাজেই করেন তাঁরা। বরং জার্মানিই কিছুটা ধীরে শুরু করে। হতে পারে প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কিছুটা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ম্যানুয়েল ন্যুয়েররা। ম্যাচের ৫ মিনিটে প্রথম কর্ণার পায় জাপান। তার তিন মিনিট পরেই গোলের সুযোগ পেয়ে যায় এশিয়ার দেশটি। জাপানের মিয়েদা গোলও করেন। যদিও অফসাইডের জন্য বাতিল হয়ে যায় গোলটি।
জাপান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বুঝে স্বাভাবিক খেলা শুরু করে জার্মানি। ধীরে ধীরে মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেন কিমিচ জোসুয়া, থমাস মুলাররা। ক্রমশ জার্মান আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়তে থাকে জাপানের বক্সে। এশীয় ফুটবলের এক নম্বর শক্তি প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলতে শুরু করে। তাতেই বাজিমাত করল তারা।
৩৩ মিনিটে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জার্মানি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন গুন্ডয়ান। এই গোলের জন্য দায়ী জাপানের গোলরক্ষক সুইচি গোন্ডা। তিনিই বক্সের মধ্যে ফাউল করেন জার্মানির এক ফুটবলারকে। প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ পেয়েও গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি জার্মানি। গোল করার একাধিক সুযোগ পেয়েছিল জাপানও। তারাও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে জার্মানি। প্রায় সারাক্ষণই বল ঘোরা ফেরা করেছে জাপানের অর্ধে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে গুন্ডয়ার একটি দুরন্ত শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তবু দমে না গিয়ে এই অর্ধে বাজিমাত করল এশীয়রা। ৭৫ মিনিটে জাপানের হয়ে প্রথম গোল করেন রিটসু ডোয়ান। ফিরতি বলে গোল করেন তিনি। সমতা ফেরানোর পর আরও চাপ বাড়ায় জাপান। অন্য দিকে চাপে পড়ে যায় জার্মানি। মুলাররা গোল করার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। বরং, কিছুটা খেলার গতির বিপরীতেই ৮৩ মিনিটে অনবদ্য গোলে জাপানকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তাকুমা আসানো। জাপানের দ্বিতীয় গোলের পরেই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় অঘটন কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায়।
পিছিয়ে পরার পর সমতা ফেরানোর জন্য সংযুক্ত সময়ের ৯ মিনিট-সহ মোট ১৬ মিনিট সময় পায় চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমার্ধের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত খেললেন জাপানের গোলরক্ষক। মূলত গোন্ডার কাছেই বার বার আটকে গেল জার্মানির আক্রমণ। জাপানের প্রায় সব ফুটবলারই শেষের কয়েক মিনিট নিজেদের অর্ধে নেমে এসেছিলেন দুর্গ রক্ষা করতে। জার্মানির অভিজ্ঞ ফুটবলাররা প্রতিপক্ষের পায়ের জঙ্গলের মধ্যেই সুযোগ তৈরি করে নেন কয়েক বার। তাতেও লাভ হয়নি। গোরেৎজকা, রুডিগার, সুলেদের একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয় গোন্ডার সামনে। শেষ দিকে একাধিক কর্নার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি জার্মানরা।
শেষ মিনিট দুয়েক জার্মানি গোলরক্ষক তথা অধিনায়ক ন্যুয়েরও উঠে আসেন প্রতিপক্ষের বক্সে। সমতা ফেরাতে মরিয়া জার্মানদের অবশ্য শেষ পর্যন্ত হতাশই হতে হল। জাপানের কাছে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হল প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy