মারাদোনার বাড়িতে বসে এ ভাবেই একসঙ্গে খেলা দেখছেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। ছবি: টুইটার
বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে তৃতীয় বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে মরিয়া লিয়োনেল মেসিরা। তাঁদের সমর্থন করতে কাতারে গিয়েছেন হাজার হাজার আর্জেন্টিনীয়। কিন্তু যাঁরা দেশে রয়েছেন, তাঁরাও সুযোগ পাচ্ছেন এক ইতিহাসের সাক্ষী থাকার। দিয়েগো মারাদোনার বাড়িতে বসে বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে পারবেন তাঁরা।
বুয়েনস আইরসে মারাদোনার বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটি বাড়ি কিনেছেন আরিয়েল ফের্নান্দো গার্সিয়া। সেই বাড়ি তিনি খুলে দিয়েছেন স্থানীয়দের জন্য। ভিতরে বাগানে বড় পর্দা টাঙিয়ে দেখা হচ্ছে খেলা। একসঙ্গে আর্জেন্টিনার জয়গান গাইছেন তাঁরা। এক পাশে রান্না হচ্ছে গোমাংস, শূকরের মাংস, স্যান্ডউইচ। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে সোডা। তবে মদ্যপান করা যাবে না সেখানে। তাতে কী? সবাই মিলে একসঙ্গে খেলা দেখার মজাটাই তো আসল। তার পরে সেটা যদি হয় মারাদোনার বাড়িতে, তা হলে তো আর কথাই নেই। খেলা শেষে বাড়ির সুইমিং পুলে ঝাঁপিয়ে পড়ারও সুযোগ রয়েছে।
শুধু খেলা দেখা নয়, এমনিই মারাদোনার বাড়ি দেখতে আসছেন স্থানীয়দের অনেকে। ভিতরে পা দিয়ে কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন, তো কেউ আনন্দে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। বাড়ির প্রতিটি ঘর ঘুরে ঘুরে দেখছেন তাঁরা। রান্নাঘর, শোয়ার ঘর, বারান্দা থেকে শুরু করে শৌচাগারও দেখছেন তাঁরা। প্রতিটি কোনায় মারাদোনার ছোঁয়া রয়েছে। তাই এই বাড়ি প্রতিটি আর্জেন্টিনীয় কাছে মন্দিরের থেকে কম নয়। ভিড় হচ্ছে বাড়ির বাগানেও। সেখানে ফুটবল নিয়ে অনুশীলন করতেন দিয়েগো। প্রতিটি ঘাসে তাঁর স্পর্শ রয়েছে। সেই স্পর্শ মাখতে চাইছেন সবাই।
১৯৮০ সালে বাড়িটি কিনেছিলেন মারাদোনা। বাবা-মার জন্য কিনলেও সেখানে বহু দিন থেকেছেন তিনি। ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পরে এই বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভক্তদের অভিবাদন জানাতেন মারাদোনা। এই বাড়ির কাছেই থাকতেন গার্সিয়া। ছোটবেলায় অনেক চেষ্টা করেছেন এক বার সেখানে ঢোকার। কিন্তু পারেননি। সেই বাড়িতে মারাদোনাকে অনেক বার দেখেছেন তিনি।
গার্সিয়া জানিয়েছেন, গত মাসে খবরের কাগজে তিনি দেখতে পান, বাড়িটি বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে লেখা ছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্রেতা না পাওয়া গেলে বাড়িটি ভেঙে সেখানে শপিং মল করা হবে। সঙ্গে সঙ্গে গার্সিয়া স্থির করে নেন, তিনি বাড়িটি কিনবেন। প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকায় বাড়িটি কিনেছেন তিনি। প্রথমে ভেবেছিলেন, মারাদোনাকে নিয়ে মিউজিয়াম করবেন। কিন্তু বাড়ির ভিতরে পা দেওয়ার পরেই তাঁর মনে হয়, এই বাড়ি সবার জন্য খুলে দিতে হবে। তার পরেই এই ব্যবস্থা।
প্রথমে শুধুমাত্র পরিবার ও বন্ধুদের জন্য খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়তে থাকে। কাউকে ‘না’ করতে পারেননি গার্সিয়া। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ প্রায় ৭০০ জন মিলে দেখেছেন। সেইসঙ্গে বিনামূল্যে খাবার খেয়েছেন। খেলা শেষে জয়ের আনন্দে সুইমিং পুলে নেমেছেন। এই দৃশ্য আরও এক বার দেখতে চান গার্সিয়া। রবিবার। বিশ্বকাপ জিতে মারাদোনার বাড়িতে উৎসব করতে চান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy