পরামর্শ: প্রস্তুতির ফাঁকে ইস্টবেঙ্গল কোচ কুয়াদ্রাতের সঙ্গে ক্লেটন সিলভা (বাঁ দিকে), মহেশ সিংহরা। যুবভারতীতে। ছবি:সুদীপ্ত ভৌমিক।
গত মরসুমে লিগ শিল্ড জয়ী মুম্বই সিটি এফসিকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন মহেশ সিংহ। চলতি লিগে ভারতীয় খেলোয়াড়দের মধ্য়ে সবচেয়ে বেশি গোলের সুযোগও তৈরি করেছেন তিনি। আরব সাগরের পাড়ে ইতিহাস কি এবারও মশালবাহিনীর পক্ষেই থাকবে এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। সেরকমই ভরসা দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে ম্যাচ ড্র করলেই নৈতিক জয় হবে ইস্টবেঙ্গলের। কোচ জানিয়ে দিলেন এক পয়েন্ট নয়, পুরো তিন পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাবে তাঁর দল। কিন্তু মুখে বলা এবং কাজে করে দেখানোর মধ্যে যে যথেষ্ট ফারাক রয়েছে তা জানেন কুয়াদ্রাত নিজেও। শুক্রবার সকালে অনুশীলন শেষ করে বিকেলে মুম্বই রওনা
হয়েছে ইস্টবেঙ্গল।
লিগের অন্যতম কঠিন ম্যাচে নামার আগে কুয়াদ্রাত বলেন, “প্রতি ম্যাচই আমরা জিততে চাই। লক্ষ্য থাকে, প্রতি ম্যাচ থেকেই তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়া। আইএসএলে প্লে-অফে উঠতে হলে অন্তত কয়েকটা ম্যাচে জিতেত হবেই। এ পর্যন্ত আটটা ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টিতে জিতেছি। কিন্তু এখানেই থেমে গেলে চলবে না।”
প্রতিপক্ষ মুম্বই এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছে চলতি মরসুমে। বেঙ্গালুরুকে ৪-০ গোলে চূর্ণ করেছে তাঁরা। মুম্বই সেই ছন্দ ইস্টবেঙ্গেলর বিরুদ্ধে ধরে রাখলে হয়তো আবারও শুনতে হবে সমর্থকদের দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু কুয়াদ্রাতকে ইতিহাসের পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে শেষ তিনটি ম্যাচে অপরাজিত থাকা। ইতিবাচক ভঙ্গিতে কুয়াদ্রাত বলে দিলেন, “দলের ফুটবলারেরা সঠিক পথেই এগোচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওরা খেলছে। টানা দু’টো ম্যাচে আমরা গোল খাইনি, এটা ইতিবাচক। আইএসএলের গত তিন মরসুমে যা দেখা যায়নি। আমরা আস্তে আস্তে উন্নতি করছি। তবে এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে।”
আগের ম্যাচগুলিতে দেখা গিয়েছে অ্যাটাকিং থার্ডে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশিং হচ্ছে না। ফুটবলে কতগুলো সুযোগ তৈরি হল, কেউ তা দেখবে না। ম্যাচের শেষে দেখবে গোলের জায়গায় কত সংখ্যা লেখা হল। একমাত্র ক্লেটন সিলভা ছাড়া আর কেউই ধারাবাহিক নন। আরও তৎপর ও নিখুঁত হতে হবে তাঁর দলের স্ট্রাইকারদের, এটাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেন, “আমাদের সুযোগগুলিকে আরও নিখুঁত ভাবে কাজে লাগাতে হবে। আমরা যে সুযোগ তৈরি করছি, এটা ইতিবাচক ব্যাপার। ম্যাচের শেষ দিকে ক্লেটন ও বিষ্ণু যে সুযোগ পেয়েছিল সেগুলি কাজে লাগাতে পারলে আমরা টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিতে পারতাম।”
ডুরান্ডে আশা জাগিয়ে শুরু করলেও চলতি আইএসএলে এখনও গোল পাননি স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড হাভিয়ের সিভেরিয়ো। কুয়াদ্রাত কিন্তু আশা ছাড়ছেন না। বলে দিলেন, “ডুরান্ডে ভাল ছন্দে ছিল সিভেরিয়ো। আমাদের ফাইনালে উঠতে সাহায্যও করেছিল। ওর ফিনিশিংয়ে সমস্যা হলেও কয়েকটি ভাল গোলের সুযোগ তৈরি করেছে। গোল পাওয়ার জন্য ও যথেষ্ট পরিশ্রম করছে। ওর ক্ষমতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। ওর ছন্দে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
ইস্টবেঙ্গলের ভঙ্গুর রক্ষণে সমস্যা বাড়িয়েছে হরমনজ্যোত সিংহ খাবরার পায়ের পেশির চোট। কুয়াদ্রাত স্বীকার করে নিয়েছেন খাবরা শুধু দলের ফুটবলারই নয়, ড্রেসিংরুমে এক জন নেতাও। তবে আশা করছেন খাবরা হয়তো পুরো মরসুমের জন্য ছিটকে যায়নি। কুয়াদ্রাতের কথায়, “ওর সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে আশা করছি, পুরো মরসুমের জন্য ও ছিটকে যাবে না।” রক্ষণ ভাগের অন্যতম ভরসা মুম্বইয়ের প্রাক্তনী মন্দার রাও দেশাই জানিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলানোর জন্য তাঁরা তৈরি রয়েছেন। লাল-হলুদের লেফট ব্যাক বলেন, “জানি ওদের ফুটবলাররা ভয়ঙ্কর। কিন্তু আমাদেরও ওদেরকে আটকানোর ক্ষমতা রয়েছে। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।”
মুম্বই তাঁদের ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ খেলেছিল ২ নভেম্বর। গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে প্রধান কোচ হিসেবে অভিষেক ঘটেছে পিটার ক্রাতকির। ঘরের মাঠে কোচ হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম ম্যাচ। ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, “ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে খেলতে পারব ভেবে খুবই উত্তেজিত। অনুশীলন খুব ভাল হয়েছে। মাঠ নিয়েও আমি খুব খুশি। আশা করি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে জয় তুলে নিতে পারব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy