ফাইল চিত্র।
মাঠে দেশের হয়ে দুর্দান্ত লড়াই করছেন সুনীল ছেত্রীরা! আর দফতরে বসে ভারতীয় ফুটবলের শীর্ষ কর্তারা নিয়োগ করছেন জ্যোতিষীকে!
তাতে নাকি ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এই ঘটনা। ঘটেছে খোদ সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনেই। দেশের ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার দায়িত্বে এখন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স। তাঁরাই কেঁচো খুড়তে দিয়ে সাপ খুঁজে পেয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সিওএ কর্তারা দেখেছেন, মাসিক ৮ লক্ষ টাকা বেতন দিয়ে এক জ্যোতিষী নিয়োগ করা হয়েছিল। যা নিয়ে চূড়ান্ত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একটি ফুটবল সংস্থায় জ্যোতিষী কী ভূমিকা থাকতে পারে, তা নিয়ে জোরাল প্রশ্ন উঠেছে।
এখন যেখানে খেলাধুলোর সঙ্গে অত্যাধুনিক সব প্রক্রিয়া আর নানা রকম পেশাদার, বিশেষজ্ঞদের যোগ করা হচ্ছে, সেখানে ভারতের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা বিশেষজ্ঞ বলতে বুঝল কি না জ্যোতিষীকে! সত্যিই চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতোই ঘটনা! সুনীল ছেত্রীদের ভাল ফুটবল খেলার জন্য কি তা হলে জ্যোতিষীর সাহায্য লাগছে? ফুটবল দলের সঙ্গে ডাক্তার, মনোবিদ ঘুরতে দেখা যায়, জ্যোতিষী রাখার ব্যাপারে নিঃসন্দেহে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ‘রেকর্ড’ স্থাপন করে ফেলল! ফেডারেশনের কার্যকলাপ নিয়ে সংশয়, সন্দেহ অবশ্য এখানেই শেষ হচ্ছে না। সিওএ কর্তারা খোঁজ নিতে গিয়ে এমন কোনও জ্যোতিষীর সন্ধানই পাচ্ছেন না! সংস্থার রেকর্ডে যে নাম, ঠিকানা রয়েছে সেখানে সরেজমিনে গিয়ে এমন কোনও জ্যোতিষী বা জ্যোতিষ সংস্থার সন্ধান নাকি তাঁরা পাননি।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে রহস্যময় এই জ্যোতিষী তা হলে কে? তাঁকে নিয়োগ করলেনই বা কে? ফুটবল ফেডারেশনের কোন কমিটি তাঁর নিয়োগকে অনুমোদন দিল? সোমবার এই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সংস্থার সাধারণ সচিব কুশল দাসকে। শোনা যাচ্ছে, তাঁর কাছে কোনও যথাযথ ব্যাখ্যা ছিল না। তার পরে তাঁকে সরে দাঁড়াতে বলা হয় বলে খবর। তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, সোমবারেই ঘোষণা করা হয় যে, অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘মেডিক্যাল লিভ’ নিচ্ছেন সাধারণ সচিব। তাঁর জায়গায় আপাতত দায়িত্ব সামলাবেন সুনন্দ ধর। যিনি অতীতে আই লিগের সিইও ছিলেন। জ্যোতিষী নিয়োগের ঘটনার জেরেই সাধারণ সচিবকে সরে যেতে হল কি না, সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে।
এ দিকে, এএফসি ও ফিফার যৌথ প্রতিনিধি দল ভারতে এসে সিওএ কর্তৃক গঠিত নতুন কমিটি ভেঙে দিয়েছে। এই কমিটিতে বিতর্কিত কর্তা রঞ্জিত বাজাজকে স্থান দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ঝড় উঠেছিল। এএফসি ও ফিফা থেকে চার জন করে মোট আট জনের টিম এসেছে ভারতে। ফুটবলের ডামাডোল, সুপ্রিম কোর্টের রায়, সব কিছু খতিয়ে দেখে এই কর্তারা রিপোর্ট দেবেন। তিন দিনের সফরে এই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এএফসি-র সাধারণ সচিব উইন্ডসর জন। কর্তাদের এই টিম মঙ্গলবার সকালে প্রফুল্ল পটেলে সঙ্গে বৈঠক করে। তার পর সিওএ কর্তৃক তৈরি নতুন কমিটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। এএফসি-ফিফা টিমের যুক্তি, এই কমিটি নিয়োগের ফলে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ঘটছে, যা এএফসি ও ফিফা গঠনতন্ত্রের বিরোধী।
এক সময় শ্রীনিবাসনদের অপশাসনে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি বসেছিল। ডামাডোল এখন ক্রিকেট থেকে সরে ফুটবলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy