মহড়া: ডার্বির চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে কোচ কুয়াদ্রাত। পাশে গুরনাজ ও গুইতে (বাঁ দিকে)। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বেজে গিয়েছে ডার্বির শেষ ঘণ্টা। উনিশ বছর পরে আজ আরও এক ডুরান্ডের ফাইনালে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। ১২ অগস্ট গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নন্দ কুমার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোহনবাগানের জয়ের সামনে। কিন্তু তাঁর থেকেও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের মগজাস্ত্র। আজ, রবিবার কি আবারও বাজিমাত করবেন কুয়াদ্রাত? না কি এ বারে জয়ের হাসি হাসবেন মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো?
ডার্বির আগের দিন লাল-হলুদ ফুটবলাররা শেষ পর্বের প্রস্তুতি সারলেন ঘরের মাঠে। ৭ বছরের খুদে সমর্থক সোদপুরের শ্রেয়ংস চট্টোপাধ্যায় প্রিয় নায়কদের অনুশীলনের সাক্ষী থাকতে বর্ষাতি পরে মাঠে এসেছিল। ক্লাবের অনূর্ধ্ব নয় দলের ফুটবলার সে। হাতে এক পোস্টার, তাতে লেখা- ‘তোমায় ভালবাসি অধিনায়ক ক্লেটন।’ দলের বাস থেকে কোচ-সহ ফুটবলাররা নামতেই লাইনে দাঁড়ানো দর্শকেরা জয়ধ্বনি দিতে শুরু করলেন। মাঠে নেমে প্রথমেই কুয়াদ্রাত আলোচনা করে নিলেন ক্লেটন, খাবরার সঙ্গে। অনুশীলনে ফুটবলারদের তাতালেনও তিনি। কয়েকটি দলে ভাগ করে বলে দিলেন, “এই দল থেকে আমার নতুন নায়ক চাই।” অর্থাৎ পেপ টক দিয়ে ফুটবলারদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন কোচ কার্লেস। কিন্তু কার্ড সমস্যায় ফাইনালে নেই সৌভিক চক্রবর্তী।
তবে সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিপক্ষকে সমীহ করতেই শোনা গেল এই স্প্যানিশ কোচকে। তিনি বলেন, “ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে যে মোহনবাগান দলকে দেখেছিলাম, সেই দলের থেকে এই দল আলাদা। এএফসি কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে বাংলাদেশের আবাহনী এবং নেপালের মাচিন্দ্রা এফসিকেও হারিয়েছে। ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধেও জয় পেয়েছে। তাই লড়াই কঠিন হবে। তবে আমরাও নিজেদের সেরাটা দেব।”
মেনে নিলেন তাদের এখনও অনেক জায়গায় উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। কুয়াদ্রাতের কথায়, “ক্লেটন এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়। তাই প্রথম একাদশে ও’কে দেখা যাচ্ছে না। আমরা একটা নতুন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছি। তবে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। ভবিষ্যতের কথাও ভাবতে হবে। এটা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হলেও আমি দলের খেলায় খুবই খুশি।”
শুক্রবার রেফারিং নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। ফাইনালে কি ইস্টবেঙ্গল অবিচারের শিকার হতে পারে? কুয়াদ্রাত বিদেশি রেফারিদের পক্ষেই সওয়াল করেন। তাঁর উত্তর, “রেফারিদের নিযুক্ত করা আমাদের হাতে নেই। আমরা কোচ হিসেবে নিজেদের কাজ করে যেতে চাই। তবে আইএসএলে অনেক ম্যাচেই বিদেশি রেফারি দেখেছি। সাধারণত বিদেশি রেফারিরা এখানকার চাপের সঙ্গে সড়গড় থাকে না। দিনের শেষে বুঝতে হবে রেফারিও একজন মানুষ। তবে কলকাতায় এটা নতুন নয়, গোয়া বা মুম্বইতেও এই অভিযোগ ওঠে।” এ রকম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বিদেশি রেফারিই যে তিনি চান সেটা বুঝিয়ে দিলেন।
ডার্বিতে মাঠের ভিতরের মত খেলা হয় মাঠের বাইরেও। সেই ব্যাপারেও অনেক সময় স্নায়ুর চাপে ভুগতে দেখা যায় ফুটবলারদের। তাঁর জন্য কী বিশেষ কোনও প্রস্তুতি নিয়েছেন? কুয়াদ্রাত সোজা বল বাড়িয়ে দিলেন পাশে বসে থাকা বোরখা এরেরার দিকে। তাঁর বক্তব্য, “ফাইনাল হল ফাইনাল। জেতা ছাড়া কিছুই ভাবছি না। আমরা নিজেদের সেরাটাই দেব। ডার্বি বলে আলাদা চাপ নিচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য ট্রফি জেতা।”
ডুরান্ড শুরুর সময় সিংহভাগ বিশেষজ্ঞরাই ইস্টবেঙ্গলকে ট্রফি জেতার দাবিদার হিসাবে ধরেননি। কুয়াদ্রাত কী সেই দলে ছিলেন? জবাব উড়ে এল, “সবসময় আপনি জিততে চাইবেন। আমিও চেয়েছি। অধিকাংশ ফুটবলারই নতুন। কিন্তু দল লড়াকু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। অনেক কঠিন মুহূর্ত পেরিয়ে আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy