নজরে: রক্ষণের দায়িত্ব শুভাশিস (বাঁ দিকে) ও ম্যাকহিউয়ের। ছবি: টুইটার থেকে।
ধুরন্ধর ফুটবল-বুদ্ধি তাঁর। রয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সাফল্যের সঙ্গে কোচের দায়িত্ব পালন করে আসার অতীত রেকর্ড। ইংল্যান্ডে কোচিং করানোর সময়ে আওয়েন কয়েল লিগ কাপে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে বার্নলির কোচ হিসেবে হারিয়ে এসেছিলেন চেলসিকে। পরে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সকে কোচিং করিয়ে এফএ কাপের সেমিফাইনালেও
নিয়ে গিয়েছিলেন।
সেই কয়েল এখন জামশেদপুর এফসি-র কোচ। যিনি ভারতে প্রথম বার আইএসএলে কোচিং করাতে এসে চেন্নাইয়িনকে ২০১৯-২০ মরসুমে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন। ভারতীয় ফুটবল মহলে বলা হয়, হাবাসের রণনীতিকে সব থেকে ভাল বোঝেন বর্তমান জামশেদপুর দলের কোচ। মুম্বইয়ের কাছে ১-৫ বিধ্বস্ত হওয়ার পরে বাম্বোলিমের মাঠে জামশেদপুরই আজ, সোমবার প্রতিপক্ষ এটিকে মোহনবাগানের। তিন ম্যাচের পরে ৬ পয়েন্ট হাবাসের দলের। সমসংখ্যক ম্যাচে জামশেদপুর মাত্র এক পয়েন্ট পিছনে রয়েছে। এ রকম অবস্থায় মুম্বই ম্যাচের বিপর্যয় ঝেড়ে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস ও রয় কৃষ্ণদের। যদিও সবুজ-মেরুন কোচের মাথায় রয়েছে জামশেদপুরের চতুর স্ট্রাইকার নেরুয়ুস ভাল্সকিসের কথা। গত তিন মরসুম ধরে যিনি ভারতীয় ফুটবলে ৪১ ম্যাচে ২৫টি গোল করেছেন ও সাতটি গোল করিয়েছেন। গত বছর হাবাসের দলের বিরুদ্ধেই জোড়া গোল করে দলকে ২-১ জিতিয়েছিলেন প্রথম পর্বের ম্যাচে। এ বারও তিন ম্যাচে দু’টি গোল করেছেন ও একটি গোল করেছেন লিথুয়ানিয়ার এই স্ট্রাইকার।
হাবাস এ সবই বিলক্ষণ জানেন। সে কারণে আইএসএলের অন্যতম শক্তিধর জামশেদপুর এফসি-র মুখোমুখি হওয়ার আগে বিপক্ষ সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন, ‘‘ওদের কোচের ফুটবল বুদ্ধি প্রখর। তাই কঠিন লড়াই অপেক্ষা করে রয়েছে। জামশেদপুরের রক্ষণ ও আক্রমণ ভাগ বেশ ভাল। মাঝমাঠেও ভাল ফুটবলার রয়েছে। দলটা এখনও লিগে হারেনি। বেশ লড়াকু প্রতিপক্ষ।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আক্রমণ ভাগে ভাল্সকিসও বেশ ভাল ফুটবলার। আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে ও।’’ ডার্বি-সহ পর পর দু’ম্যাচ জিতে যে খুশির আবহ ছিল সবুজ-মেরুনে, তা মুম্বই এফসি যে চূর্ণ করে দিয়ে গিয়েছে, তা এটিকে-মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচের কথায় স্পষ্ট। মুম্বই ম্যাচ সম্পর্কে প্রথমে বললেন, ‘‘মুম্বই সে দিন আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। একটা ম্যাচ হয়ে গেলে সেই ম্যাচ নিয়ে ভাবার সময় পাওয়া যায় না।’’ পরক্ষণেই বলে ওঠেন, ‘‘ওই ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছি আমরা। দ্বিতীয় গোলটা মুম্বই করেছে হাত দিয়ে। তৃতীয় গোলের আগে ফাউল হয়। দীপক টাংরিকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। কিন্তু মোর্তাদা ফলকে লাল কার্ড দেখানো হয়নি। ওদের চতুর্থ গোল অফসাইডে। রেফারি সে দিন এত ভুল না করলে এই ব্যবধানে ওরা জিততে পারত না বোধহয়।’’
এটিকে-মোহনবাগান শিবির জানে বিপক্ষের ভাল্সকিস, গ্রেগ স্টুয়ার্ট পিটার হার্টলেরাও উচ্চতায় সেই মোর্তাদা ফলের মতোই লম্বা। রয়েছেন কোমল থাটাল, ঈশান পণ্ডিতার মতো ভারতীয় ফুটবলারেরা। তাই বিপক্ষ সেট-পিস পেলে তা কী ভাবে নিষ্ক্রিয় করতে হবে, সেই অনুশীলন হয়েছে পুরোদমে। হাবাসের দাওয়াই সেট-পিসের সময় বল বক্সে ভেসে এলে বেশি উচ্চতার ফুটবলারের সামনে একজন থাকবেন আর পিছনে একজন। যেন ভাল্সকিসেরা নড়াচড়া করার জায়গা না পান। আর সেই বল বক্সে আসার আগেই যেন জনি কাউকোরা বিপন্মুক্ত করে ফেলতে পারেন। আর রক্ষণে কভারিং ও মার্কিংয়ে যেন ভুল না হয়। বিপক্ষ ফাঁকা জায়গা কাজে লাগিয়ে গোলের দিকে এগোলে, তাঁকে শেষ পর্যন্ত তাড়া করতে হবে। জামশেদপুর ম্যাচের আগে রক্ষণ ও মাঝমাঠকে এমনই সব নির্দেশ দিয়েছেন হাবাস।
এটিকে-মোহনবাগানের পক্ষে সুখবর, তিরি সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তবে তাঁকে খেলানো হবে কি না, সে ব্যাপারে কোনও আভাস দেননি হাবাস। তাঁর কথায়, ‘‘তিরি সুস্থ। মাঠে নামার অবস্থায় রয়েছে। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ২০ জনের দলে রয়েছে। দেখা যাক নামাতে পারি কি না।’’ রক্ষণে তিন জন না চার জন থাকবে, সে ব্যাপারেও কিছু স্পষ্ট করেননি এটিকে-মোহনবাগান কোচ। জামশেদপুর কোচ আওয়েন আবার হাবাসের দলকে সমীহ করছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ওদের কোচ ও ফুটবলারেরা দুর্দান্ত। মুম্বই ম্যাচের পরে ওরা প্রত্যাবর্তন ঘটাতে মরিয়া হবেই।’’
সোমবার আইএসএলে: জামশেদপুর বনাম এটিকে মোহনবাগান, সন্ধে ৭.৩০ থেকে, স্টার স্পোর্টস টু চ্যানেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy