অস্কার ব্রুজ়ো। —নিজস্ব চিত্র।
তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই পরিবর্তন ইস্টবেঙ্গলে। আইএসএলে হারের ডাবল হ্যাটট্রিকের বিপর্যয় সামলে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের শেষ আটে যোগ্যতা অর্জন। ১৩ দলের আইএসএলে সবার শেষে থাকলেও সমর্থকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নক-আউট পর্বে খেলার। ইস্টবেঙ্গল কি পারবে প্রথম ছয় দলের মধ্যে শেষ করতে? রবসন রবিনহো কি আসছেন? চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে চেন্নাই উড়ে যাওয়ার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে নিউটাউনে টিম হোটেলে আনন্দবাজারের সামনে অকপট কোচ অস্কার ব্রুজ়ো।
প্রশ্ন: সমর্থকরা মনে করেন আপনিই বদলে দিয়েছেন দলকে।
অস্কার ব্রুজ়ো: আমি কিছুই বদলাইনি। ফুটবলার থেকে ইমামি ইস্টবেঙ্গল কর্তৃপক্ষ— একই রয়েছে। শুধু ফুটবলারদের মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: কী ভাবে?
অস্কার: আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল ফুটবলাররা। ওদের সবসময় ইতিবাচক থাকার পরামর্শ দিয়েছি। এর চেয়ে বেশি কিছু করিনি। বরং মনে করি, মরসুম শেষ হওয়ার পরেই আমার কোচিংয়ের ময়নাতদন্ত করা উচিত।
প্রশ্ন: কার্লেস কুয়াদ্রাত-কে সরিয়ে আপনাকে দায়িত্ব দেওয়ার পরে কী কী সমস্যা চিহ্নিত করেছিলেন?
অস্কার: প্রথমেই উপলব্ধি করেছিলাম, দলের আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। ফুটবলারদের মধ্যেও বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে খেলতে হবে, সেটাই স্পষ্ট ছিল না। আমার পর্যবেক্ষণ, ভারতে কখনওই অধিকাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখে বা আধিপত্য বিস্তার করে পুরো সময় খেলা হয় না। পরিস্থিতি অনুযায়ী রণকৌশল বদলে খেলতে হয়। জোর দিতে হয় সেট-পিসে। এই বিষয়গুলির উপরেই প্রথম থেকে জোর দিতে শুরু করি। ছেলেদের স্পষ্ট করে দিই, আমি কী চাইছি। প্রথম দিন থেকে ওরা সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে।
প্রশ্ন: মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ফুটবলারদের উজ্জীবিত কী ভাবে করেছিলেন?
অস্কার: আমার প্রথম এবং একমাত্র লক্ষ্য ছিল ছেলেদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। টানা ব্যর্থতায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়াই স্বাভাবিক। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি থেকে ওদের বার করে আনার একমাত্র উপায় হচ্ছে, বার বার কঠিন পরীক্ষার সামনে ফেলে দেওয়া। প্রত্যেক দিনের অনুশীলনেই সেটা করতাম। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রাথমিক পর্বেই তা প্রমাণিত।
প্রশ্ন: অনুশীলনে কী কী পরীক্ষা দিতে হচ্ছে ফুটবলারদের?
অস্কার: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল অনুশীলনে গভীরতা আনা। অর্থাৎ, প্রত্যেককে নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, কাউকে ন্যূনতম জায়গা ছাড়া চলবে না। ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়ার জন্য প্রত্যেককে সময় দিই। এই প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে ওদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। নিজেদের মধ্যে দূরত্বও কমে গিয়েছে। এখন ছেলেরাও ক্লাবকে প্রতিদান দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে খেলছে।
প্রশ্ন: সমর্থকরা স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে কি প্রথম ছয়ে শেষ করা সম্ভব?
অস্কার: আমি মনে করি, অসম্ভব নয়। শনিবার চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে খেলা। তার পরে ডিসেম্বরে টানা তিনটি ম্যাচ খেলব ঘরের মাঠে। এই মুহূর্তে টেবলের প্রথম ছয়ের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের পরবর্তী খেলাগুলির উপরে মনঃসংযোগ করা উচিত। এই ম্যাচগুলির ফলাফলের উপরে ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
প্রশ্ন: ইস্টবেঙ্গল কোচ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে হেরে। ১১ জানুয়ারি আইএসএলের ফিরতি ডার্বি নিয়ে কী ভাবছেন?
অস্কার: কলকাতায় ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ডার্বি শুধু একটি ম্যাচ নয়। জিতলে তা ট্রফি-জয়ের সমান। আমাদের প্রতিপক্ষ (মোহনবাগান) সম্ভবত ভারতের সেরা দল। তাই ওদের বিরুদ্ধে ম্যাচ সবসময়ই বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগায়। আমাদের সমর্থকরাই ক্লাবের শক্তি। আমি মনে করি, আমাদের সমর্থকরাই সেরা। তাই ওঁদের জন্যই নতুন বছরের ডার্বি জিততে চাই।
প্রশ্ন: সরাসরি জিজ্ঞেস করছি, জানুয়ারির দল বদলে ক্লেটন সিলভা-র জায়গায় রবসন রবিনহো কি ইস্টবেঙ্গলে আসছেন?
অস্কার: রবসন অসাধারণ ফুটবলার। তিন বছর আমার কোচিংয়ে খেলেছে। তবে রবসন একা নয়, আরও কয়েক জন ফুটবলার আমাদের নজরে রয়েছে। কারণ, দলের মধ্যে বেশ কিছু বিভাগের দুর্বলতা চিহ্নিত করেছি। এই মুহূর্তে দলের ছ’জন বিদেশির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। ডিসেম্বরে যে পাঁচটি ম্যাচ রয়েছে, সেখানেই ওদের প্রমাণ করতে হবে, ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলার যোগ্যতা রয়েছে কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy