সিউড়িতে বল নিয়ে শোভাযাত্রা। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবার শুরু হয়েছে ফিফা অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ। ফুটবল জ্বরে কাঁপছে গোটা দেশ। প্রথম খেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে আয়োজক দেশ ভারত। তবে হারলেও দেশের ১১ তরুণের লড়াই মন ছুঁয়ে গিয়েছে দেশবাসীর। আপ্লুত করেছে ফুটবল পণ্ডিতদেরও। ফুটবলকে আরও জনপ্রিয় করতে, ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপের আয়োজনকে ঘিরে উন্মাদনাই কাজে লাগাতে চায় দেশের ক্রীড়া মন্ত্রক, ফিফা লোকাল কমিটি। সুযোগ কাজে লাগাতে চায় রাজ্যসরকারও। এ বারে পুলিশের মাধ্যমে জেলায় জেলায় ফুটবল বিলির নির্দেশ দেওয়া হল।
সিদ্ধান্তটা অবশ্য আগেই নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে জেলায়, জেলায়। প্রচার প্রসারে নানা কর্মসূচি চলেছে। তারই অঙ্গ হিসাবে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাবে ফুটবল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্দেশিকা পাওয়ার পরে অন্য জেলার মতো ফুটবল বিলির প্রস্তুতি পর্ব প্রায় শেষ করে ফেলেছে বীরভূমে জেলা পুলিশ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব মিলিয়ে মোট ৯৩৫টি ইউনিটকে বল দেওয়া হবে। ৯ অক্টোবর, সোমবার সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিমায়ে একটি প্রতীকি অনুষ্ঠানে শহর ও সংলগ্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবের প্রতিনিধিদের হাতে ফুটবল তুলে দেওয়া হবে। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাবগুলিকে ওই দিন অর্থাৎ ৯ তারিখ ও পরিদিন ১০ তারিখ ব্লকস্তরে থানাগুলি থেকে ফুটবল দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। এই সময়ে ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তুলতে ফুটবল বিলি করা হচ্ছে। এটাই সরকারি নির্দেশ।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি সরকারি ও সরকার-পোষিত উচ্চ বিদ্যালয়, হাইমাদ্রাসা ও ক্লাবকে পাঁচটি করে ফুটবল দেওয়া হবে। যে ক্লাবগুলি ২০১১ সাল থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়ে আসছে, তাঁদের ফুটবল দেওয়া হবে। এ ছাড়া রাজ্যের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫টি করে, প্রতিটি পুলিশ লাইন এবং রাজ্য পুলিশের প্রতিটি ব্যাটেলিয়ানেও ১০টি করে ফুটবল দেওয়া হবে। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেই তালিকা ধরেই বিলি হবে ফুটবল।
সোমবার থেকে ফুটবল বিলির অনেক আগে থেকেই ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে প্রচার প্রসার চালছে। দুর্গাপুজোর পঞ্চমীর দিন জেলা প্রশাসনের তরফে একটি বিশ্বকাপ ফুটবলের রেপ্লিকা নিয়ে একটি ট্যাবলোর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী এবং জেলা পুলিশসুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার। সেটা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে। বিশ্বকাপের প্রচার প্রসারে শনিবার সকালে ওই ট্যাবলো সহযোগে সিউড়ি সার্কিট হাউস থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শহর ঘুরে সেই সেটি শেষ হয় সেচ কলোনীর মাঠে। শোভাযাত্রা থেকে কিছু ফুটবল বিলা করা হল। ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা সিউড়ির পুরসভার উপ পুরপ্রধান বিদ্যাসাগর সাউ প্রমুথ। আর ছিল স্কুলপড়ুয়া, ফুটবল খেলোয়াড় ও ফুটবল প্রেমীরা। জেলা প্রাশাসন সূত্রে খবর, উন্মাদনা বৃদ্ধি করতে গিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপ বিষয়ক নানা পোস্টার, তোরণ, যোগদানকারী দেশের পতাকা দিয়ে দিন দুয়েকের মধ্যেই সেজে উঠবে জেলা সদর তার প্রস্তুতিও তুঙ্গে।
ঘটনা হল, বিশ্বকাপের আগে ফুটবলের উন্মাদনা তুঙ্গে তুলতে কয়েক মাস আগে থেকেই ফিফা লোকাল কমিটি ও ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রকের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে ‘মিশন ১১ মিলিয়ন।’
যার লক্ষ্য, দেশের এক কোটি ১০ লক্ষ পড়ুয়াকে ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট করা। শুক্রবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের সূচনার পরে এই উন্মাদনা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন কর্তারা। জেলাপ্রশাসনের কর্তা এবং ডিএসএর সম্পাদক বিদ্যাসাগর বাবুরা বলছেন, দেশের মাটিতে আয়োজিত হচ্ছে অনূর্ধ্ব ১৭-র বিশ্বকাপ। কলকাতায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হবে ১০টি ম্যাচ। প্রস্তুতি ঘিরে কলকাতা তথা সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে সাজো-সাজো রব। তাকে ঘিরে রাজ্য সরকারে যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে স্বাগত। সবচেয়ে গুরুত্বপূ্র্ণ এই উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে দেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়ানো যায়। হৃত গৌরব যদি ফেরানো যায়, ক্ষতি কী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy