কোয়েসের ঘাড়ে দায় চাপালেও ফিফা ট্রান্সফার ব্যান বিতর্কে ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চুক্তি বিতর্ক নিয়ে ক্লাবের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এর মধ্যে সামনে এল নতুন মরসুমে ফুটবলার সই করানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা (ট্রান্সফার ব্যান)। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা না মেটানোর জন্য এসসি ইস্টবেঙ্গলের উপর নির্বাসন জারি করল ফিফা। তাই এই মুহূর্তে জোড়া সমস্যায় বিদ্ধ লাল-হলুদ। যদিও এই নতুন সমস্যার জন্য শ্রী সিমেন্ট নয়, বরং পুরনো বিনিয়োগকারী কোয়েসকে দায়ী করছেন লাল-হলুদ কর্তারা। শোনা যাচ্ছে কোস্টারিকার বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্টার টাকা সময় মতো না মেটানোর জন্যই লাল-হলুদের উপর ফুটবলার সই করানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা।
এই শাস্তির বিষয়ে কোয়েসকে দায়ী করে ক্লাব কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “ফিফা-র এই নির্বাসনের ব্যাপারে সকালে শ্রী সিমেন্টের তরফ থেকে চিঠি পেয়েছি। তবে এখানে বর্তমান বিনিয়োগকারীদের যেমন কিছু করার নেই, তেমনই আমাদেরও কিছু করার নেই। কোয়েসের জন্য আমাদের সমস্যায় পড়তে হল। কোয়েস চলে যাওয়ার আগে ওদের পাপ আমাদের উপর চাপিয়ে গিয়েছে। ওরা একাধিক ফুটবলার ও দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে একতরফা চুক্তি ছিন্ন করেছে। আর সেই দায় আমাদের বইতে হচ্ছে। তাই আমরা এই সময় ক্লাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত।”
চুক্তি অনুযায়ী টাকা না পেয়ে আগের লগ্নিকারী সংস্থাকে নোটিশ পাঠিয়েছিলেন খাইমে সান্তোস কোলাদো, পিন্টু মাহাত, অভিষেক আম্বেকররা। এমনকি কোয়েস জমানার স্পেনীয় ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদারও তাঁর প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেই চিঠিগুলো একাধিক বার শ্রী সিমেন্টের দপ্তর ছাড়াও লাল-হলুদ তাঁবুতেও এসেছিল। তবে বিনিয়োগকারী ও ক্লাবের তরফ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি। ফলে বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ও ফুটবলারদের সংস্থার (এফপিএআই) কাছেও আবেদন করেছিলেন একাধিক ফুটবলার।
ফেডারেশনের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এই বিষয়ে এআইএফএফ-এর কিছু করার নেই। কারণ পুরো ব্যাপারটা দেখছে ফিফা। এই বিষয়ে আরও চমকে দেওয়া তথ্য হল চার দিন আগে একই বিষয়ে ফের ক্লাবের কাছে কোলাদোর চিঠি এসেছিল। তাঁর বকেয়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে না মেটানো হলে আবার ফিফার কড়া বার্তা আসবে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় ফুটবলারদের বকেয়া না মেটানো হলে আরও বড় সমস্যায় পড়বে লাল-হলুদ। সেটাও জানা গিয়েছে।
কিন্তু এই সমস্যা থেকে ক্লাবকে বাঁচাতে বর্তমান বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্ট কি কোন উদ্যোগ নিতে পারে? এই বকেয়ার দায় যে বিনিয়োগকারীরা নেবে না সেটা ফের একবার স্পষ্ট করে দেওয়া হল। হরি মোহন বাঙ্গুরের সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে, “ক্লাবের কোনও বকেয়া টাকার দায় আমরা নেব না। লাল-হলুদের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তির সময় সেটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল। ক্লাব কর্তারাও সেটা খুব ভাল ভাবে জানে।”
কোয়েসের আমলে এই বকেয়া টাকা না মেটালে ফিফা যে বড় শাস্তি দেবে, সেটা ক্লাব কর্তারা জানতেন। জানত বর্তমান বিনিয়োগকারী সংস্থাও। তবুও এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ দিকে শ্রী সিমেন্টের পাঠানো চুক্তিপত্রেও কর্তারা সই করছেন না। বাঙ্গুরও নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। ফলে এই মুহূর্তে জোড়া সমস্যায় জেরবার ইস্টবেঙ্গল।
তবে এই সমস্যা থেকে বেরনোর উপায়ও আছে। ফুটবল মহলের ধারণা ক্লাব কর্তারা বিনিয়োগকারীদের দাবি মেনে চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করে দিলেই নমনীয় হতে পারেন বাঙ্গুর। সেটা হলে পাঁচ কোটি টাকা মিটিয়ে ফিফা-র থেকে ক্লাব যেমন মুক্তি পাবে, তেমনই আগামী আইএসএল-এ মাঠে নামতে পারবে এসসি ইস্টবেঙ্গল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy