উল্লাস: মাহরেজকে (মাঝে) নিয়ে উচ্ছ্বাস দ্য ব্রুইনদের। এএফপি
জুয়া খেলার সংস্থার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে ইংল্যান্ডের ফুটবলে নিয়ামক সংস্থা এফ এ-কে সতর্ক করে দিল ব্রিটিশ সরকার। এফ এ-র সঙ্গে ‘বেট৩৬৫’ নামে একটি সংস্থার বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে। তারা খেলার উপর জুয়া ধরে। কিন্তু জুয়ার কুপ্রভাব এবং তার সঙ্গে মানসিক স্থিতি হারানো নিয়ে আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে দেখে সতর্কবার্তা জারি করেছে ব্রিটিশ সরকার।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে করা চুক্তি অনুসারে এই বেটিং সংস্থা এফ এ কাপের ২৩টি ম্যাচ সম্প্রচার করেছে। এই ম্যাচগুলি দেখার শর্ত ছিল, কিক-অফের চব্বিশ ঘণ্টা আগে পাঁচ পাউন্ড দিতে হবে জুয়া খেলার জন্য। ২০১৭-তে করা একটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল এফ এ-র। সেই চুক্তি অনুযায়ী, জুয়া খেলার সংস্থার কাছে ম্যাচের স্বত্ব বিক্রি করা সম্ভব ছিল। সেই সূত্র ধরেই স্বত্ব কেনে এই জুয়া সংস্থা। ২০২৪ পর্যন্ত এই চুক্তি রয়েছে কিন্তু এফ এ এখন জানিয়েছে, তারা ফের এ নিয়ে ভেবে দেখবে। গভর্নিং বডির বৈঠক ডেকে দেখা হতে পারে, কী ভাবে এই চুক্তি থেকে এখন বেরনো সম্ভব। সংস্থাটিও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন এফ এ কর্তারা। ইংল্যান্ডের ক্রীড়ামন্ত্রী নাইজেল অ্যাডামস টুইট করেছেন, ‘‘জুয়া ধরার বিষয়টি এখন অনেক পাল্টে গিয়েছে। এর প্রভাব এবং সমস্যা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’’
ইংল্যান্ড ফুটবলে এমন আলোড়ন ফেলা পরিবর্তনের ডাকের মধ্যেই অবশ্য ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি হয়ে গেল। মঙ্গলবার রাতে সেই ডার্বিতে পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টারই টেক্কা দিল সোলসারের দলের উপর। লিগ কাপের সেমিফাইনালে ম্যান সিটি ৩-১ উড়িয়ে দিল ম্যান ইউনাইটেডকে। দুর্ধর্ষ গোল করে নায়ক বার্নার্দো সিলভা। রিয়াদ মাহরেজের সুন্দর ‘ফিনিশিং’ এবং আন্দ্রেয়া পেরেরার গোল ফাইনালের রাস্তা অনেকটাই পরিষ্কার করে রেখেছে সিটির জন্য। ম্যান ইউয়ের হয়ে কিছুটা সম্মান পুনরুদ্ধার করেন এই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা মার্কাস র্যাশফোর্ড। ম্যাচ শেষ হওয়ার কুড়ি মিনিট আগে গোল করেন র্যাশফোর্ড। কিন্তু তার পরে ২৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় লেগের জন্য ম্যান ইউয়ের সামনে পাহাড়প্রমাণ লড়াই থাকছে। ১-৩ ফলের খামতি মিটিয়ে ফাইনালের দরজা খোলা প্রায় অসম্ভবই দেখাচ্ছে। বিশেষ করে পল পোগবার অস্ত্রোপচার-সহ নানা সমস্যায় জেরবার ম্যান ইউনাইটেড।
মাত্র মাসখানেক আগেই সোলসারের দল কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলে উড়িয়ে দিয়েছিল গুয়ার্দিওলার ম্যান সিটিকে। সেই হারের ধাক্কায় কার্যত লিভারপুলকে টপকে ইপিএল জেতার স্বপ্ন শেষই হয়ে গিয়েছে সিটির। গুয়ার্দিওলা এখন বাকি ট্রফি জেতার উপরেই তাই নজর দিয়েছেন। ঘরোয়া টুর্নামেন্ট এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগই এখন লক্ষ্য তাঁর। এই ম্যাচের জন্যও তাই প্রায় প্রথম দলই নামান তিনি। শুধু সের্খিয়ো আগুয়োরে এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে তিনি বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু সিটির আক্রমণ ভাগের চার স্তম্ভ সিলভা, মাহরেজ, রাহিম স্টার্লিং এবং কেভিন দা ব্রুইনের ছন্দের সামনেই অসহায় দেখাতে শুরু করে ইউনাইটেড রক্ষণকে। পেপ অতিরিক্ত মিডফিল্ডারে দল সাজানোয় আরওই ক্ষিপ্র হয়ে ওঠে সিটির আক্রমণাত্মক ফুটবল।
ঝড় তোলা ফুটবলের পুরস্কার পেতে দেরি হয়নি সিটির। বক্সের বাইরে থেকে পর্তুগিজ তারকা সিলভার দুরন্ত শট জড়িয়ে যায় জালের উপরের দিকে। গত বার সিটির ত্রিমুকুট জয়ে খুব বড় কোনও ভূমিকা নিতে পারেননি সিলভা। এ বারে কিন্তু সেরা ফর্মেই রয়েছেন। ৩৩ মিনিটে সিটির দ্বিতীয় গোলটিও তাঁর তৈরি করা। সিলভার ম্যান ইউ রক্ষণ চেরা একটি পাস ধরেই দাভিদ দা গিয়াকে বোকা বনিয়ে গোল করে যান মাহরেজ। পাঁচ মিনিট পরে দা ব্রুইনের জোরাল শটে ৩-০ করে ফেলে ম্যান সিটি। প্রথমার্ধেই এমন ঝড় তুলেছিল গুয়্রাদিওলার দল যে, মনে হচ্ছিল, দা ব্রুইনরা না গোলের মালা পরিয়ে দেয় ম্যান ইউয়ের গলায়। দা গিয়া তিনটি গোল খেলেও অসংখ্য বাঁচিয়েছেন। সেই কারণেই আরও বেশি গোলের লজ্জা থেকে বাঁচল সোলসারের দল। সিলভার একটি শট উড়ে গিয়ে গিয়ে বাঁচান দা গিয়া। স্টার্লিং সহজ সুযোগ নষ্ট না করলেও গোলের সংখ্যা বাড়তে পারত। ম্যান ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এই নিয়ে ১৮টি ম্যাচে গোল পাচ্ছেন না স্টার্লিং। বিরতির পরে ঝড় কিছুটা থামে। গুয়ার্দিওলার নির্দেশেই সম্ভবত কিছুটা হাল্কা ভাবে খেলতে থাকে সিটি। তাতেও তারা গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারত। র্যাশফোর্ড গোল করলেও তাঁর দলের দিক থেকে আর পাল্টা জবাব দেখা যায়নি। দুই ম্যাঞ্চেস্টারের লড়াইয়ে ফের লালকে টেক্কা দিয়ে যায় নীল জার্সি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy