নজরে: কলকাতার সমর্থনেও ভরসা রাখছেন স্তিমাচ। ফাইল চিত্র
আর মাত্র পাঁচ দিন। আগামী মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নামছে ভারতীয় ফুটবল দল। গুয়াহাটির প্রস্তুতি শিবির থেকে সেই ম্যাচ ও প্রতিপক্ষ নিয়ে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ভারতীয় কোচ ইগর স্তিমাচ।
প্রশ্ন: কাতারের বিরুদ্ধে এক মাস আগে ভারতীয় দলের সেই ঐতিহাসিক ড্রয়ের পরে আপনার ছেলেদের নিয়ে গোটা দেশের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ ম্যাচের আগে সেই ফল কি বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে?
স্তিমাচ: বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে কাতারের বিরুদ্ধে ড্র নিঃসন্দেহে ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে একটা ভাল পারফরম্যান্স। ফলে প্রত্যাশা নিশ্চয়ই বেড়েছে। পাশাপাশি এটা ভয়ের ব্যাপারও। গুয়াহাটির প্রস্তুতি শিবিরে তাই প্রথম দু’একদিন ছেলেদের বলেছি কাতার ম্যাচ ভুলে সামনে তাকাও। ওই অমীমাংসিত ম্যাচের পরে ছেলেদের পা যেন মাটিতেই থাকে তার জন্য বিশেষ ক্লাস নিতে হয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ ম্যাচটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আগের ম্যাচে ভাল ফলের কথা ভেবে আত্মতুষ্ট হলে চলবে না। বাংলাদেশের হার্ডলটা এ বার টপকাতে হবে।
প্র: কাতারের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ড্রয়ের পরে কি মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ম্যাচ জেতাটা সময়ের অপেক্ষা?
স্তিমাচ: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ সম্পূর্ণ আলাদা একটা চ্যালেঞ্জ। তাই আগামী মঙ্গলবারের ম্যাচ নিয়ে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি ও রণনীতি রয়েছে। তা ছাড়া, এই ম্যাচটা আমরা খেলতে চলেছি ভারতীয় ফুটবলের মক্কায়। প্রায় আট বছর পরে কলকাতায় খেলবে ভারতীয় দল। শুনলাম, টিকিট বিক্রির হার নাকি বেশ ভাল। দর্শক ঠাসা যুবভারতীতে নামার জন্য তাই মুখিয়ে রয়েছি আমরা। কলকাতার ফুটবল-পাগল সমর্থকদের সামনে খেলার জন্য আর তর সইছে না ছেলেদেরও। তবে চাপটা আমাদের দিকেই একটু বেশি। কারণ আমাদের ম্যাচটা জিততে হবে।
প্র: কিন্তু কলকাতার প্রায় পাশেই বাংলাদেশ। ম্যাচ দেখতে সেখান থেকেও সমর্থকেরা আসবেন শুনলাম।
স্তিমাচ: একটা ভাল ফুটবল ম্যাচ দেখার জন্য ওঁদের স্বাগত জানাচ্ছি। অবশ্যই নিজেদের জাতীয় দলকে ওঁরা সমর্থন করবেন। আমাদের সমর্থকেরা কেবল ওঁদের চেয়ে জোর গলায় গ্যালারি থেকে আমাদের সমর্থন করে যান। মাঠে বাকি কাজটা সারার জন্য আমরা রয়েছি। কলকাতার মতো ফুটবলপ্রেমী শহরে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দ্বিতীয় হোম ম্যাচ খেলার জন্য আমি নিজেই ছটফট করছি।
প্র: কেন?
স্তিমাচ: প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে এ রকম ম্যাচের আবেগটাই আলাদা। ভারত ও বাংলাদেশ—দুই সমর্থকদের কাছেই এটা আবেগের ম্যাচ। বলকান অঞ্চলে সার্বিয়া বা অন্য প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নামার আগে আমার দেশ ক্রোয়েশিয়ার মানুষের যে অনুভূতি হয়, এই বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়েও ভারতীয় কোচ হিসেবে ঠিক একই অনুভূতি হচ্ছে আমার।
প্র: ভারতের বর্তমান ফিফা র্যাঙ্কিং ১০৪। বাংলাদেশ ১৮৭। আপনার দল র্যাঙ্কিংয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে। এটা কি উদান্ত সিংহদের এগিয়ে রাখবে?
স্তিমাচ: কাতারের র্যাঙ্কিং এই মুহূর্তে ৬২। ওদের বিরুদ্ধে ম্যাচে আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি র্যাঙ্কিং কেবল একটা সংখ্যা ছাড়া কিছু নয়। লড়াইটা এগারো বনাম এগারো। খেলা শেষে মাঠে কার মুখে হাসি থাকবে কেউ জানে না। এটাই ফুটবলের মজা।
প্র: আপনি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে চান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কি শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে?
স্তিমাচ: বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। ওদের বিরুদ্ধে শেষ দুই সাক্ষাতে কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে আমাদের আগের দুই ম্যাচের থেকে এই ম্যাচের গুরুত্বটা তাই আলাদা। তবে রণনীতি কী হবে, তা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে একটা ব্যাপার স্পষ্ট করে দিতে চাই। তা হল, আমার ছেলেরা কিন্তু তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরার জন্যই মাঠে নামবে।
প্র: প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
স্তিমাচ: ওদের ফুটবল নিয়ে বেশ কিছু তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। রক্ষণাত্মক ও প্রতি-আক্রমণভিত্তিক ফুটবল খেলতে পছন্দ করে বাংলাদেশ। আরও কিছু তথ্য পেয়েছি। সেগুলো এই মুহূর্তে বলতে চাইছি না।
প্র: কাতার ম্যাচের পরে আপনার দলের কোন কোন জায়গায় উন্নতি করা দরকার?
স্তিমাচ: অনেক বিষয়েই আমাদের উন্নতি করতে হবে। সুযোগ কাজে লাগানোর ব্যাপারে ছেলেদের আরও নিখুঁত হতে হবে। বিপক্ষ রক্ষণে তৈরি হওয়া ফাঁকা জায়গা কাজে লাগানো ও রক্ষণ আরও পোক্ত করতে হবে।
প্র: কাতারের বিরুদ্ধে সুনীল ছেত্রীকে পাননি। এ বার বাংলাদেশ ম্যাচে ওঁকে পাবেন। সুনীল সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন?
স্তিমাচ: সুনীল আমার দলের মূল্যবান এক সদস্য। দলকে নেতৃত্ব দিয়ে খেলতে পারে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে ওঁর। যা প্রেরণা হিসেবে কাজে লাগে জুনিয়রদের। এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের সেরা শুভেচ্ছা-দূতের নামটাই হল সুনীল ছেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy