Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
টেস্টে স্টার্কদেরই এগিয়ে রাখছেন ম্যাকগ্রা
Glenn McGrath

বিরাটের সিদ্ধান্তে অবাক নই, তবে ভারত ধাক্কা খাবে

বিরাট কোহালি না স্টিভ স্মিথ, কাকে বল করা কঠিন? ভারত অধিনায়কের অনুপস্থিতিই বা কতটা প্রভাব ফেলবে? সব প্রশ্নের জবাব দিলেন কিংবদন্তি অস্ট্রেলীয় পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রা। সোমবার সিডনি থেকে ভিডিয়ো কলে আনন্দবাজারের সঙ্গে আলাপচারিতায়।ভারতীয় পেসারদের গতি আছে। যশপ্রীত বুমরা, উমেশ যাদব ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। মহম্মদ শামি গতির সঙ্গে দু’দিকে সুইং করাতে পারে।

অগ্রজ: মিচেল স্টার্কদের সঙ্গে সুসম্পর্কই রয়েছে গ্লেন ম্যাকগ্রার। ফাইল চিত্র।

অগ্রজ: মিচেল স্টার্কদের সঙ্গে সুসম্পর্কই রয়েছে গ্লেন ম্যাকগ্রার। ফাইল চিত্র।

কৌশিক দাশ
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০৬:০৩
Share: Save:

প্রশ্ন: প্রথম টেস্ট খেলে ফিরে আসার যে সিদ্ধান্ত বিরাট কোহালি নিয়েছেন, তা কি আপনাকে অবাক করেছে?

গ্লেন ম্যাকগ্রা: একেবারেই অবাক করেনি। বিরাট যদি মনে করে সন্তান জন্মানোর সময় স্ত্রীর পাশে ওর থাকা দরকার, তা হলে সেটা খুবই স্বাভাবিক। আমি ওর মনের অবস্থাটা বুঝতে পারছি।

প্র: কিন্তু তিন টেস্টে কোহালি না থাকা মানে তো ভারত বিরাট ধাক্কা খাবে?

ম্যাকগ্রা: অবশ্যই। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বিরাট না থাকা মানে ভারত এক জন নয়, দু’জনকে হারাল। এক জন অবশ্যই ব্যাটসম্যান বিরাট। অন্য জন অধিনায়ক বিরাট। সেই তেজি ভাবটাই হয়তো দেখা যাবে না। বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানকে চারটের মধ্যে তিনটে টেস্টে না পাওয়ার ধাক্কা সামলানো কঠিন।

প্র: সিরিজের প্রথম টেস্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ? বিশেষ করে যেখানে দিনরাতের টেস্ট খেলতে হবে ভারতকে?

ম্যাকগ্রা: সিরিজে প্রভাব ফেলার জন্য বিরাট ওই একটাই টেস্ট পাচ্ছে। প্রথম টেস্টের ফল বেশির ভাগ সময়ই সিরিজের ভাগ্য ঠিক করে দেয়। এ বার শুরুতেই দিনরাতের টেস্ট। ভারত এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দিনরাতের টেস্ট খেলেনি। সূর্যাস্তের সময় বা রাতে অস্ট্রেলীয় পেসাররা কিন্তু অনেক সুবিধে পাবে। দিনরাতের টেস্টে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, কোন সময় কারা ব্যাট করছে। বিরাটকে ওই টেস্টে প্রভাব ফেলার মতো কিছু করতেই হবে।

প্র: বিরাটের অনুপস্থিতিতে কোন ভারতীয় ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সমস্যা হতে পারে?

ম্যাকগ্রা: রোহিত শর্মার কথা বলতেই হবে। রোহিত যে রকম উচ্চ মানের ব্যাটসম্যান, সেই অনুযায়ী টেস্টে সফল হয়নি। এ বার হয়তো ওর জ্বলে ওঠার সময়। বিরাটের অনুপস্থিতিতে ও প্রধান ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে পারে। তবে ভারতীয় দলে চেতেশ্বর পুজারা, অজিঙ্ক রাহানে, কে এল রাহুলরা আছে। অস্ট্রেলীয় বোলারদের বিশেষ এক জনের উপরে নজর দিলে চলবে না।

প্র: পুজারাকে নিয়ে কী বলবেন?

ম্যাকগ্রা: আগের সিরিজে দারুণ খেলেছিল। ওর শক্তি হল দীর্ঘ সময় ধরে রান না করেও ক্রিজে থাকতে পারা। কিন্তু এ বার পুজারা একেবারেই ম্যাচ প্র্যাক্টিস পায়নি। যে কারণে ওর কাজটা অনেক কঠিন হবে।

প্র: বিরাট না স্টিভ স্মিথ, এই মুহূর্তে লাল বলের ক্রিকেটে সেরা ব্যাটসম্যান কে?

ম্যাকগ্রা: দু’জনেই অনেক দিন টেস্ট ক্রিকেট খেলেনি। আইপিএলেও চোখধাঁধানো কিছু করেনি। কিন্তু দু’জনেই অসাধারণ ব্যাটসম্যান। স্মিথ যদি অ্যাশেজের ফর্ম দেখাতে পারে, তা হলে এই সিরিজে বিশাল ছাপ রাখবে। অন্য দিকে বিরাট মাত্র একটা সুযোগ পাবে। ওর পক্ষে সিরিজে প্রভাব ফেলা কঠিন।

প্র: এই দু’জনের মধ্যে আপনি কাকে বল করতে চাইবেন না?

ম্যাকগ্রা: (হেসে) আমি দু’জনের কাউকেই বল করতে চাইব না! দু’জনে সম্পূর্ণ দু’ধরনের ব্যাটসম্যান। স্মিথের ব্যাটিংকে কপিবুক বলা চলে না। এমন সব অদ্ভুত জায়গায় শট খেলতে পারে যে, কেউ ভাবতেই পারবে না। অফস্টাম্পের বাইরে বল করলে সেটা ফাইন লেগ বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেয়। অন্য দিকে বিরাট ক্লাসিক্যাল ব্যাটসম্যান। দুরন্ত সব শট খেলে। কিন্তু ওর স্কোরিং শটগুলোর সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যায়। দু’জনেই যদি সেরা ফর্মে ব্যাট করে, তা হলে বলব, স্মিথকে বল করা একটু কঠিন। কারণ, কেউ জানে না স্মিথ কখন কোন শট খেলবে।

প্র: অতীতের ভারতীয় পেস আক্রমণের সঙ্গে এই দলটার কী পার্থক্য?

ম্যাকগ্রা: গতি এবং মানসিকতা। অতীতে আমি যে সব ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে খেলেছি, তারাও অত্যন্ত ভাল বোলার ছিল। তবে এই ভারতীয় পেসারদের গতি আছে। যশপ্রীত বুমরা, উমেশ যাদব ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। মহম্মদ শামি গতির সঙ্গে দু’দিকে সুইং করাতে পারে। বুমরা প্রথম স্পেলে যে গতিতে বল করে, সেই গতি দ্বিতীয়, তৃতীয় স্পেলেও ধরে রাখতে পারে।

প্র: ভারত না অস্ট্রেলিয়া, কোন পেস আক্রমণকে এই টেস্ট সিরিজে এগিয়ে রাখবেন?

ম্যাকগ্রা: ভারতের বোলিং নিয়ে বললাম। এ বার অস্ট্রেলীয়দের কথায় আসি। জশ হেজ্‌লউড বেশ লম্বা। বাউন্স পায়, সুইং করাতে পারে। প্যাট কামিন্স এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা বোলার। সারা দিন এক গতিতে বল করতে পারে। হেজ্‌লউডের চেয়ে ও একটু অন্য রকম কোণ তৈরি করতে পারে। যা সামলানো কঠিন। এর সঙ্গে আছে বাঁ-হাতি মিচেল স্টার্ক। ছন্দে থাকলে ভয়ঙ্কর। স্টার্ক কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে বিপক্ষের চার-পাঁচ উইকেট তুলে নিতে পারে। দলে স্টার্কের মতো বাঁ-হাতি পেসার আছে বলেই আমি অস্ট্রেলিয়ার বোলিংকে সামান্য হলেও এগিয়ে রাখব

প্র: অতীতে বলা হত, ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়া যেতে ভয় পায়। এখন কী পরিবর্তন দেখছেন?

ম্যাকগ্রা: ভয় কথাটা সেই অর্থে ব্যবহার করতে চাই না। এর আগে সচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণের মতো ক্রিকেটারেরা অস্ট্রেলিয়া সফরে এসেছে। সহবাগ এসেছে। বীরু কাউকে ভয় পায় বলে আমার জানা নেই। যেটা হত, অস্ট্রেলিয়ার পিচের বাউন্স এবং গতি ভারতীয়দের অস্বস্তিতে ফেলত। সেই গতি এবং বাউন্স এখন অনেক কম। যদিও ভারতীয় পিচের চেয়ে বেশি। তা ছাড়া আইপিএলও মানসিকতায় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।

প্র: কী রকম?

ম্যাকগ্রা: আইপিএলে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে এবং বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে খেলছে ভারতীয়রা। যে কারণে মানসিক প্রতিবন্ধকতাটা ভেঙে গিয়েছে। প্রতিপক্ষ যে আর পাঁচ জনের মতোই, সেটা এখন ভারতীয়রা বুঝে গিয়েছে। তা ছাড়া গত বার কোহালির নেতৃত্বে সিরিজ জয়ও ভারতীয়দের অনেক আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।

প্র: স্মিথ-ওয়ার্নার ফিরে এসেছেন। ওঁরা কি জবাব দিতে ঝাঁপাবেন?

ম্যাকগ্রা: অবশ্যই। শুধু ওরা দু’জন কেন, পুরো দলটাই আগের সিরিজের হারের জবাব দিতে ঝাঁপাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Glenn McGrath Interview
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy