নজরে: স্পেনের সের্খিয়ো বুস্কেৎস (বাঁ দিকে) ও ইটালির চিরো ইমমোবিলে।
ইউরোপীয় ফুটবলের মহারণে আজ, মঙ্গলবার রাতে দুই মহাশক্তিধর দেশের দ্বৈরথ। ইটালি বনাম স্পেনের এই সেমিফাইনাল ম্যাচটার আগে আমার মনে পড়ে যাচ্ছে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের কথা।
সে বার বর্তমান স্পেন কোচ লুইস এনরিকের নাক ভেঙে দিয়েছিল ইটালির মাউরো তাসোত্তি। ম্যাচটাও জিতে বিশ্বকাপ থেকে স্পেনের বিদায় নিশ্চিত করে দিয়েছিল ইটালি।
জানি না, মঙ্গলবার রাতে দল নিয়ে যখন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের দিকে রওনা দেবে বর্তমান স্পেন কোচ, তখন ২৭ বছর আগের এই দ্বৈরথের কথা এনরিকের স্মৃতিতে ফিরে আসবে কি না। আমার মতে এ বারও কিন্তু এনরিকের দল বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে চলেছে। এই মুহূর্তে রবের্তো মানচিনির নতুন ঘরানার ইটালি দল যে ছন্দে ইউরো-মঞ্চে ঝড় তুলেছে, তাতে প্রথম সেমিফাইনালে এগিয়ে রাখছি ইটালিকেই।
পাঁচ বছর আগে ইউরোর প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনকে ২-০ হারিয়েছিল জর্জে কিয়েল্লিনিরা। কিন্তু তার পরে ‘আজ্জুরি’র (নীল জার্সি পরে খেলায় জাতীয় ফুটবল দলকে আদর করে এই নামে ডাকে ইটালীয়রা) পারফরম্যান্সের লেখচিত্র নেমে গিয়েছিল। গত বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনই করতে পারেনি তারা। কিন্তু কোচ রবের্তো মানচিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লোরেনজ়ো ইনসিনিয়ে, চিরো ইমমোবিলেরা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পর্তুগালের বিরুদ্ধে হেরেছিল দলটা। শেষ ১৩ ম্যাচ জিতে অপ্রতিরোধ্য ইটালি। এই ইউরোয় ১১ গোল করেছে
মানচিনির ছেলেরা।
কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অতীতে এ রকম ছন্দে ইটালিকে খেলতে দেখেছি ২০০৬ সালে। সে বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ১২ গোল করেছিল। এ বার আক্রমণ ও রক্ষণে ইনসিনিয়ে, বোনুচ্চিরা এমন ভারাসাম্যের ফুটবল খেলছে, যা এই দলটাকে ঘিরে ইউরো জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমার মতো অনেককেই। সেই কারণেই এ রকম ছন্দে থাকা দলের সামনে এনরিকের কাজটা কঠিন অবশ্যই।
অন্য দিকে, স্পেন প্রতিযোগিতার শুরুটা ভাল না করলেও সময়ের সঙ্গে ক্রমশ কোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। আলভারো মোরাতারাও সেমিফাইনালের আগে ১২ গোল করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার জন্য তৈরি ইটালি রক্ষণে। তবে ওদের সমস্যাটা রয়েছে ফিনিশিংয়ে। খেলা তৈরি করার ক্ষেত্রেও সমস্যা কাটেনি এখনও। মাঝমাঠ থেকে ইটালির জর্জিনহো, নিকোলো বারেল্লা, মার্কো ভেরাত্তিদের আক্রমণের সুনামি বিপক্ষ রক্ষণে আছড়ে পড়ে, সেই দক্ষতার সঙ্গে এখনও পর্যন্ত বুস্কেৎস, কোকেদের নিয়ে তৈরি স্পেনীয় মাঝমাঠ বিপক্ষকে তেমন একটা কোণঠাসা করতে পারেনি। তবে ৩২ বছরের বার্সেলোনা তারকা বুস্কেৎসই এই স্পেন দলের নিউক্লিয়াস। ও-ই মূলত দলটাকে খেলায়। আজ পুরনো ছন্দে থাকলে ইটালি সমস্যায় পড়তেই পারে। মনে রাখতে হবে রক্ষণে স্পিনাজ্জোলার না থাকা কোচ মানচিনির কাছেও যথেষ্ট উদ্বেগের। এ ধরনের বড় ম্যাচে শুরু থেকে যারা মাঝমাঠের দখল নেয়, তারাই ম্যাচটা বার করে নেয় শেষ পর্যন্ত। যদিও মাঝমাঠের শক্তিতে ইটালিকেই এগিয়ে থাকতে দেখছি। ইমমোবিলে বনাম বুস্কেৎস, কিয়েল্লিনি-বোনুচ্চি বনাম আলভারো মোরাতা, ডোনারুমা বনাম উনাই সিমোন, এ রকম অনেক আকর্ষণীয় দ্বৈরথ দেখার আশা নিয়েই টিভির সামনে বসব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy