Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
England

সাউদাম্পটনে নানা কৌতূহল নিয়ে ফিরছে টেস্ট ক্রিকেট

শেষ বারের মতো ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগের মিষ্টি শব্দ শোনা গিয়েছিল কবে? অনেকেই হয়তো ভুলে গিয়েছেন।

মহড়া: প্রায় চার মাস পরে পরে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দিয়েই ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তারই প্রস্তুতি ক্যারিবিয়ানদের। সোমবার। গেটি ইমেজেস

মহড়া: প্রায় চার মাস পরে পরে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দিয়েই ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তারই প্রস্তুতি ক্যারিবিয়ানদের। সোমবার। গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৬:১১
Share: Save:

আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। ১১৭ দিন পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে। যা নিয়ে কৌতূহল ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়ায়।

শেষ বারের মতো ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগের মিষ্টি শব্দ শোনা গিয়েছিল কবে? অনেকেই হয়তো ভুলে গিয়েছেন। ১৩ মার্চ শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছিল ফাঁকা স্টেডিয়ামে। সিডনিতে ওয়ান ডে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হারায় নিউজ়িল্যান্ডকে। তখন সবে ছড়াতে শুরু করেছে করোনার প্রকোপ কিন্তু অনেকে বুঝতে পারেনি, এমন দীর্ঘ বিচ্ছেদে থাকতে হবে ক্রিকেটের সঙ্গে।

বুধবার থেকে যে টেস্ট শুরু হতে যাচ্ছে, তা এক কথায় নজিরবিহীন। ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকার, কর্তা, সকলকে রাখা হচ্ছে সাউদাম্পটনের মাঠে জৈবিক সুরক্ষিত বলয়ের মধ্যে। মাঠের মধ্যেই রয়েছে হোটেল। সেখানেই থাকবেন ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, সকলে। যার অর্থ, ম্যাচে যাঁরা থাকবেন, সকলে এক বার বলয়ে ঢুকে পড়লে আর বেরোতে পারবেন না। ক্রিকেটারেরা আগেই সেখানে ঢুকে পড়েছেন, ধারাভাষ্যকারদেরও বলে দেওয়া হয়েছে, আজ, মঙ্গলবারের মধ্যে
ঢুকে পড়তে হবে।

নাসের হুসেন জানিয়েছেন, কমেন্ট্রি বক্সেও তাঁরা বসবেন শারীরিক দূরত্বের নিয়ম মেনে। ধারাভাষ্যকারদেরও একই হোটেলে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। কমেন্ট্রিতে বিরতির ফাঁকে তাঁরা নিজেদের হোটেল রুমে ফিরে গিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে পারেন। সাউদাম্পটনের মাঠটির ভিতরে যে হোটেল রয়েছে, তা একদম বাউন্ডারি লাইনের লাগায়ো। হোটেলের বিশেষ কয়েকটি ঘরের ব্যালকনি থেকে সুন্দর ভাবে ম্যাচ দেখা যায়।

এ ভাবে কি সত্যিই ক্রিকেট উপভোগ করা সম্ভব? কোনও দর্শকই যদি না থাকে, ‘শো’ চলবে কাদের জন্য? এই টেস্টের অন্যতম ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেন স্বীকার করেছেন, এটা অবশ্যই আদর্শ পরিস্থিতি নয়। ‘‘নিশ্চয়ই এ ভাবে কেউ খেলা আয়োজন করতে চায় না। কিন্তু এটা ভেবে অন্তত শান্তি পাচ্ছি যে, ক্রিকেট ফিরছে। ফুটবলের মতোই তা হয়তো ফাঁকা মাঠে হবে, থাকবে না কোনও দর্শক, কিন্তু ক্রিকেট ভক্তরা বাড়িতে বসে টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পাবে। লাইভ ক্রিকেট তো দেখা যাবে।’’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ফিল সিমন্স বলেেছন, ‘‘ইংল্যন্ডে এই টেস্ট ম্যাচ উদাহরণ হতে চলেছে। এটা অন্যদের দেখিয়ে দিতে পারে, কঠিন সময়ে কী ভাবে খেলা সম্ভব। ইংল্যান্ড বোর্ডের প্রশংসা প্রাপ্য যে এত উদ্বেগের মধ্যেও সিরিজটা চালু রাখতে পেরেছে। দেখতে চাই অন্যরা কী বার্তা নেয়। মানুষ খেলা দেখতে চায়। অনেক উদ্বেগের মধ্যেও মেজাজ ভাল করে দিতে পারে খেলা। ক্রিকেটের এই প্রত্যাবর্তন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ক্রিকেট কী ভাবে এগিয়ে যেতে পারে তার নক্সা উপহার দিতে পারে এই সিরিজ। নানা নতুন জিনিস হয়তো আসতে থাকবে ক্রিকেটে। আপাতত আমার যেটা ভাল লাগছে সেটা হল স্কোয়াডে অতিরিক্ত সদস্য রাখার অনুমতি দেওয়া। এতে নিশ্চয়ই সকলের খুব উপকার হবে।’’

এর আগে শ্বশুরমশাইয়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতে গিয়েছিলেন বলে জোর বিতর্কে পড়তে হয়েছে সিমন্সকে। বার্বেডোজ ক্রিকেট সস্থার প্রেসিডেন্ট তার সমালোচনা করে পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। সিমন্স এ নিয়ে বলেন, ‘‘জীবনে কোনওকিছুই আর আমায় অবাক করে না। আমার শ্বশুরমশাই খুব কাছের লোক ছিলেন। খুবই দুঃখজনক তার চলে যাওয়া। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নেই।’’

ক্রিকেট বিশ্বের চোখ থাকবে বেশ কয়েকটি জিনিসের উপর। যেমন, উইকেট নিয়ে বোলার, ফিল্ডারেরা কী ভাবে উল্লাস করছেন? আগের মতো একে অন্যের গায়ে চেপে উৎসব আপাতত বন্ধ। নতুন কী ভঙ্গি আনতে চলেছে? ইংল্যান্ড তাদের প্র্যাক্টিস ম্যাচে কনুইয়ে কনুই স্পর্শ করে আনন্দ প্রকাশ করেছে। সেটাই কি এ বারে বেশি করে দেখা যাবে? ভুলে গেলে চলবে না, ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিভিন্ন যুগে ক্রিকেট মাঠে অভিনব সব উৎসব ভঙ্গি এসেছে
ক্যারিবিয়ানদের হাত ধরে।

বলের উপর থুতু বা লালা ব্যবহারেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এত কালের অভ্যাস কি সহজে বোলার, ফিল্ডারেরা ত্যাগ করতে পারবেন? নাকি কোনও এক অসতর্ক মুহূর্তে বল পালিশের জন্য পুরনো ভঙ্গির ফাঁদে পা দেবেন বোলার, ফিল্ডারেরা। আরও আছে। স্লিপ ফিল্ডিংয়ে কি কোনও পরিবর্তন আসতে চলেছে? ফুটবলে দেখা গিয়েছে, কোনও কোনও দেশের লিগে ট্যাকলের সংখ্যা কমেছে। শারীরিক দূরত্ব মানার প্রভাব। ক্রিকেটে স্লিপ ফিল্ডিংয়ে সব চেয়ে বেশি করে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াতে হয়। এ ক্ষেত্রে দূরত্ব বিধি মানা কঠিন। তা হলে কি নতুন স্লিপ কর্ডন দেখা যেতে পারে? প্রথম স্লিপের পরে তৃতীয় স্লিপ? তার পর গালি?

নানা প্রশ্নের কৌতূহল নিয়ে সাউদাম্পটনে বুধবার প্রত্যাবর্তন ঘটছে টেস্ট ক্রিকেটের।

অন্য বিষয়গুলি:

England West Indies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy