Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
SC East Bengal

East Bengal: মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ ইস্টবেঙ্গল কর্তারা, চুক্তি-জট অব্যাহত

ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির এই সিদ্ধান্তের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া নিয়ে।

চর্চায়: সহকারীদের সঙ্গে ফাওলার। এ বারও কি এই ছবি দেখা যাবে?

চর্চায়: সহকারীদের সঙ্গে ফাওলার। এ বারও কি এই ছবি দেখা যাবে? ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ০৬:৪১
Share: Save:

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসবাণীতে লাল-হলুদ সমর্থকদের উৎকণ্ঠা কিছুটা দূর হয়েছিল। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ফের ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় বাড়তে শুরু করল! এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ক্লাব কর্তারা।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সোমবারই বলেছিলেন, “চিন্তা নেই, হয়ে যাবে। একটু ঝগড়াঝাটি হচ্ছে, মনোমালিন্য হচ্ছে। কিন্তু আমি চাই ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলুক।’’ যোগ করেছিলেন, “এ বারও বলছি একটু ছেড়ে খেলুন। সব হয়ে যাবে। পাঁচ বছরের জন্য কেউ গ্যারান্টি দেবেন, এটাও মুখের কথা নয়। ৫০ কোটি টাকা করে লাগে। তাঁদেরও অনেক বলে রাজি করানো হয়েছে। সদস্যদের নিয়ে যে সমস্যা ছিল, তা মিটে গিয়েছে। বাকি সমস্যারও আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে। আমি আশাবাদী, ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে। আমার কাছে সে রকমই তথ্য রয়েছে।”

লাল-হলুদ সমর্থকেরা আশা করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্ট ও ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। সোমবারই ক্লাবের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছিলেন, তাঁরা চান এমন কোনও ব্যক্তি থাকুন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝাতে পারবেন, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করলে শতাব্দীপ্রাচীন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বকলমে হস্তান্তর হয়ে যাবে। এখানেই শেষ নয়। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময় ও সহযোগিতাও চাইবেন সমস্যা বোঝানোর জন্য। মঙ্গলবার বিকেলে কর্মসমিতির জরুরি বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়। ইস্টবেঙ্গলের সভাপতি প্রণব দাসগুপ্তের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে করা অভিপ্রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসমিতির জরুরি সভা ডাকা হয়েছিল। সর্বসম্মতিক্রমে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাকে সম্পূর্ণরূপে মান্যতা ও মর্যাদা দিয়ে ক্লাব ও লগ্নিকারীর মধ্যে আসন্ন পাঁচ বছরের চুক্তি সম্পাদনের বিষয়কে স্বাগত জানানো হচ্ছে। এই বিষয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হচ্ছে, তাঁর ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও যদি সময় দেন, তা হলে ক্লাবের সাংবিধানিক গঠনতন্ত্র রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষার বিষয়ে আলোকপাত করা সম্ভব।”

ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির এই সিদ্ধান্তের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া নিয়ে। ক্লাব ও লগ্নিকারী সংস্থার বিবাদ মেটাতে আসরে নামা লাল-হলুদের প্রাক্তন সচিব ও আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্তও হতাশ। আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, “আমার দায়িত্ব শেষ। আমি আর এখন মধ্যস্থতাকারী নই।” কেন? প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল সচিবের ব্যাখ্যা, “বৈঠকের পরেই কর্মসমিতির এক সদস্য আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের দু’টো ব্যাপারে নিশ্চয়তা দরকার। এক) পাঁচ বছর পর্যন্ত এই চুক্তির মেয়াদ থাকবে। দুই) ক্লাব তাঁবুর একটা অংশ আমাদের ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। এই দুটি শর্ত ওরা মেনে নিলেই আমরা চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি।” তিনি যোগ করেন, “আমি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, লগ্নিকারী সংস্থার কর্তাদের আমি আর কোনও বিষয়ে অনুরোধ করব না।” কেন? প্রাক্তন সচিবের যুক্তি, “এর আগে যে সাতটি শর্ত লিখিত ভাবে আমাকে ক্লাবের তরফে দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে এগুলো ছিল না। লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা সাতটি শর্তই মেনে নিয়েছেন। কখনওই বলা হয়নি যে, পাঁচ বছরের জন্য চুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাই আর এই ব্যাপারে আমি ঢুকতে চাই না।”

লগ্নিকারী সংস্থার কর্তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তিনি পাঁচ বছরের ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির কথা বলেছেন, চুক্তির নয়।

ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ কী? লাল-হলুদের প্রাক্তন সচিবের আশঙ্কা, পরিস্থিতি যে রকম জটিল হয়ে উঠেছে তাতে চলতি সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি যদি স্বাক্ষরিত না হয়, সে ক্ষেত্রে লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা বিরক্ত হয়ে দল না গড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিতে পারেন!

যত কাণ্ড এখন ইস্টবেঙ্গলেই!

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee East Bengal SC East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE